নড়াচড়ায় নড়ছেন না সাব্বির

এক পাশের নেটে ব্যাট করছিলেন তামিম ইকবাল, আরেক পাশে সাকিব আল হাসান। মাঝের নেটে সাব্বির রহমান। শনিবার বাংলাদেশের অনুশীলনের এই ছবিই সময়ের কৌতূহল; পরের ম্যাচের আগে গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশ্ন। কোথায় ব্যাট করবেন সাব্বির, তামিমের পরে নাকি সাকিবের পরে?

ক্রীড়া প্রতিবেদক  লন্ডন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2017, 05:40 PM
Updated : 3 June 2017, 05:40 PM

বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যাট করছিলেন তামিমের পরে, মানে তিন নম্বরে। সেটি নিয়ে সমালোচনাও চলছিল বেশ। বেশ কিছু ইনিংসে শুরু পেয়েও বড় রান করতে পারেননি। অথচ তিন নম্বর ব্যাটসম্যনের মূল কাজই দলের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড হওয়া।

তবে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে তিনে নেমেই ৬৫ রানের ইনিংসে দলের জয়ে অবদান রাখলেন। মনে হচ্ছিলো, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অন্তত তিনে পাকা সাব্বির। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই তাকে দেখা গেল সাকিবের পেছনে, মানে ছয় নম্বরে।

পরের ম্যাচে কোথায়? সাব্বির নিজেও সেটি জানেন না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে কোথায় ব্যাট করবেন, এখনও জানা নেই তার। এমনকি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচে তিনে ব্যাট করছেন না, সেটিও জানতে পেরেছেন ম্যাচের দিনই। নিজের পজিশন নিয়ে অন্ধকারে থাকলেও কোনো অভিযোগ নেই সাব্বিরের।

“তিন নম্বরে ব্যাট করা বড় বিষয় নয়। দল যেটা চায়, সেটাই করতে চাই। এতদিন দল মনে করেছে তিনে খেলাবে। এখন মনে করছে ছয়-সাতে খেলাবে। দলের জন্য আমি সব করতে পারি।”

অনেকের মতেই সাব্বিরের ব্যাটিংয়ে ধরন তিন নম্বরের উপযাগী নয়। বরং শেষের দিকেই বেশি কার্যকরী। তবে সহজাত আক্রমণাত্মক ধরনের কারণেই কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে চেয়েছিলেন সাব্বিরকে তিনে থিতু করতে। তার একটি বড় ইনিংস মানে প্রতিপক্ষের ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়া।

তবে বাংলাদেশের যে শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা! সাব্বিরের তিনে খেলা মানে শেষের দিকে ঝড়ের গতিতে রান করার ব্যাটসম্যান নেই। একজন ব্যাটসম্যান বাড়তি খেলানোয় গত ম্যচে তিনে খেলেছেন ইমরুল, ছয়ে সাব্বির। শেষের দিকে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ব্যাট করতে পেরেছিলেন কেবল সাব্বিরই।

পরের ম্যাচে দল একজন বোলার বেশি খেলালে ব্যাটসম্যান একজন কমবে। সেক্ষেত্রে সাব্বির আবার ফিরতে পারেন তিনে। কিন্তু শেষের দিকে দলের ব্যাটিংয়ের যা অবস্থা, সাব্বিরকে শেষ দিকেও দরকার!

এই যে টানাহেঁচড়া, এখনও ব্যাটিং পজিশন না জানা, এসবেও তার আপত্তি নেই। পজিশন দুটিতে প্রয়োজন হয় পুরো ভিন্ন মানসিকতা। নিজেকে সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতেও সময় লাগে। কিন্তু সাব্বিরের দাবি, তিনি পারেন। দলের চাওয়ায় নিজেকে বদলাতে পারেন যখন-তখন।

“আমি নিজের জন্য ব্যাট করি না। দলের চাওয়াই সবচেয়ে বড়। নিজে রান করি যাতে দলের কাজে লাগে। দলই সবকিছুর আগে। মানিয়ে নিতে আমার সমস্যা হয়নি, হয়না। ব্যাটিং পজিশন অনুযায়ী মানসিকতাও বদলে ফেলি।”

হতে পারে এসব শুধু পেশাদারি কথা। ব্যাটিং পজিশনে নিয়ে পছন্দ, ভালো লাগা কোন ব্যাটসম্যানের না থাকে! হতে পারে এসব আসলেই মনের কথা। তবে যেটিই হোক, এই মানসিকতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দলের জন্যই সবকিছু!