তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য দিয়েও পারল না বাংলাদেশ

তামিম ইকবালের শতকে বড় সংগ্রহ গড়েও বোলিং ব্যর্থতায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। উদ্বোধনী ম্যাচে মাশরাফি বিন মুর্তজার দলকে ৮ উইকেটে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে ইংল্যান্ড।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2017, 09:10 AM
Updated : 1 June 2017, 08:11 PM

ইংল্যান্ডের ৮ উইকেটের জয়

তামিম ইকবালের শতকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে বড় সংগ্রহ গড়েছিল বাংলাদেশ। জো রুট আর অ্যালেক্স হেলস দারুণ ব্যাটিংয়ে সেটাকে ছোট বানিয়ে ফেললেন। ৩০৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় স্বাগতিকরা জিতেছে ৮ উইকেটে, ১৬ বল হাতে রেখে।

তামিম-মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে এক সময়ে অনেক বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েও বাংলাদেশ থামে ৬ উইকেটে ৩০৫ রানে। বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই উইকেট হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু সেই সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা।

হেলসের সঙ্গে দেড়শ আর মর্গ্যানের সঙ্গে প্রায় দেড়শ রানের জুটিতে দলকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শুভ সূচনা এনে দিয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৩৩ রানের ইনিংস খেলা রুট। তার ১২৯ বলের ইনিংসটি গড়া ১১টি চার ও একটি ছক্কায়।

হেলস ফিরেন ৯৫ রানে, অধিনায়ক মর্গ্যান অপরাজিত থাকেন ৭৫ রানে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩০৫/৬ (তামিম ১২৮, সৌম্য ২৮, ইমরুল ১৯, মুশফিক ৭৯, সাকিব ১০, সাব্বির ২৪, মাহমুদউল্লাহ ৬*, মোসাদ্দেক ২*; ওকস ০/৪, উড ০/৫৮, বল ১/৮২, স্টোকস ১/৪২, প্লানকেট ৪/৫৯, মইন ০/৪০, রুট ০/১৮)

ইংল্যান্ড: ৪৭.২ ওভারে ৩০৮/২ (রয় ১, হেলস ৯৫, রুট ১৩৩*, মর্গ্যান ৭৫*; মাশরাফি ১/৫৬, সাকিব ০/৬২, মুস্তাফিজ ০/৫১, সৌম্য ০/১৩, মোসাদ্দেক ০/৪৭, রুবেল ০/৬৪, সাব্বির ১/১৩)

রুটের শতক, মর্গ্যানের অর্ধশতক

দলকে জয়ের পথে রাখা জো রুট পেয়েছেন শতক, অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যান পৌঁছেছেন অর্ধশতকে।

পায়ে চোট নিয়েও ব্যাট করা রুট ১১৫ বলে ৬টি চারে পৌঁছেন তিন অঙ্কে। ওয়ানডেতে এটি তার দশম শতক।

৪৫ বলে ৫টি চার ও একটি বিশাল ছক্কায় অর্ধশতকে পৌঁছান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মর্গ্যান। ৪৩ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ২৫৮/২।

রুট-মর্গ্যানের জুটিতে এগুচ্ছে ইংল্যান্ড

মাশরাফি বিন মুর্তজার করা ৩৬তম ওভারে আউট হতে পারতেন ওয়েন মর্গ্যান। লং অনে ছুটে এসে অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। ক্যাচ সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়ায় তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠান মাঠের আম্পায়ার, তাদের সফট সিগন্যাল ছিল নট আউট। তৃতীয় আম্পায়ারও নট আউট ঘোষণা করেন ইংলিশ অধিনায়ককে।

আউট সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন তামিম। মাঠের আম্পায়ারের সফট সিগন্যাল বা তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত কোনোটাই মানতে পারেননি তিনি।

মাশরাফির পরের ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়ে জো রুটের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে জুটির রান পঞ্চাশে নিয়ে যান মর্গ্যান।

৩৮ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২২১/২। রুটের রান ৮৮, মর্গ্যানের ৩৩।

ইংল্যান্ডের দুইশ

অ্যালেক্স হেলস ফিরলেও স্বস্তি ফেরেনি বাংলাদেশ দলে। ওয়েন মর্গ্যানকে নিয়ে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিচ্ছেন জো রুট। বারবার বোলার বদলাচ্ছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা কিন্তু কাজ হচ্ছে না কিছুতেই। রানের গতিতে বাধ দিতে পারছেন না কেউই।

৩৫ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২০৪/২। রুটের রান ৮৩, মর্গ্যানের ২২। শেষ ১৫ ওভারে আরও ১০২ রান চাই তাদের।

হেলসকে ফিরিয়ে দেড়শ রানের জুটি ভাঙলেন সাব্বির

কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন সাব্বির রহমান। বোলারদের একদম পাত্তা না দেওয়া অ্যালেক্স হেলসকে ফিরিয়েছেন এই অনিয়মিত লেগ স্পিনার।

টানা দুই বলে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে হেলস পৌঁছান ৯৫ রানে। স্লগ সুইপে ছক্কায় তিন অঙ্কে যেতে চেয়েছিলেন। তার লক্ষ্য পূরণ হয়নি, ক্যাচ যায় ডিপ মিডউইকেটে বদলি ফিল্ডার সানজামুল ইসলামের কাছে।

হেলসের ৮৬ বলের ইনিংসটি গড়া ১১টি চার ও দুটি ছক্কায়। তার বিদায়ে ভাঙে ২৫.৩ ওভার স্থায়ী ১৫৯ রানের জুটি।

২৮ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ১৬৫/২। ৬৬ রান করা জো রুটের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যান।

হেলসের পর রুটের অর্ধশতক

নিরাপদ ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডকে কক্ষপথে রাখা জো রুট পেয়েছেন অর্ধশতক। দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা সাকিব আল হাসানের খরুচে ১৫ রানের ওভারে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ইংলিশ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

৫৯ বলে চারটি চারে আসে রুটের অর্ধশতক।

২২ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ১২৬/১। রুটের রান ৫০, অ্যালেক্স হেলসের ৭২।

ইংল্যান্ডের একশ

এরই মধ্যে অর্ধশতক পেয়েছেন অ্যালেক্স হেলস, পঞ্চাশ ছোঁয়ার পথে আছেন জো রুট। টপ অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান ১৯তম ওভারে দলকে নিয়ে গেছেন শত রানে।

পরের ওভারে এসেছে দ্বিতীয় উইকেটে দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জুটির শতরান। হেলস-রুটকে মোটেও পরীক্ষায় ফেলতে পারছেন না বাংলাদেশের বোলাররা।  ২০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ১১০/১। হেলসের রান ৫৯, রুটের ৪৭।

হেলসের অর্ধশতক

জেসন রয়ের দ্রুত বিদায়ের পর ইংল্যান্ডকে পথ দেখাচ্ছেন অ্যালেক্স হেলস। খুব বেশি ঝুঁকি না নিয়েও দ্রুত গতিতে রান তুলছেন ডানহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ৫২ বলে এসেছে তার অর্ধশতক, এই সময়ে হাঁকিয়েছেন ৭টি চার।

১৮ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ৯৫/১। হেলসের রান ৫১, জো রুটের ৪০।

হেলস-রুটের অর্ধশত রানের জুটি

দ্রুত জেসন রয়কে হারানো ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিচ্ছেন অ্যালেক্স হেলস ও জো রুট। মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমানদের সামলে দ্রুত রান তুলছেন দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৫৩ বলে এসেছে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাদের অর্ধশতক।

১২ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ৫৮/১। হেলসের রান ৩৮, রুটের ১৯।

পাওয়ার প্লেতে রয়ের উইকেট

প্রথম ১০ ওভারে একটি উইকেট নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। তবে ৫ ওভারের স্পেলে ২৩ রান দিয়ে উইকেটটি নিয়ে রান তাড়ায় ইংল্যান্ডকে ভালো শুরু করতে দেননি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

৪ ওভারে ২২ রান দিয়েছেন মাশরাফির সঙ্গে বোলিং উদ্বোধন করা সাকিব আল হাসান। দশম ওভারে বোলিংয়ে এসে ৬ রান দিয়েছেন বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।

১০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ৫‌১/১। অ্যালেক্স হেলসের ৩৫, জো রুটের ১৫। জয়ের জন্য তখন ২৫৫ রান চাই ইংল্যান্ডের।

প্রথম আঘাত মাশরাফির

ইংল্যান্ড ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই আঘাত হেনেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল স্কুপ করার চেষ্টায় শর্ট ফাইন লেগে মুস্তাফিজুর রহমানের অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত হয়েছেন জেসন রয়।

১ রান করে রয় ফেরার সময় ইংল্যান্ডের স্কোর ৬/১। ৫ রান করা অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন জো রুট।

বাংলাদেশের তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ

তামিম ইকবালের শতক আর মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডকে তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল করেছে ৬ উইকেটে ৩০৫ রান।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। আগের সেরা ছিল গত বছর ঢাকায় করা ২৮৮ রান।

নবম শতক পাওয়া তামিম ফিরেন ১২৮ রান করে। মুশফিক খেলেন ৭৯ রানের আরেকটি দারুণ ইনিংস। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১০ ওভারে ৮২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

ইনিংস শেষে তামিম বলেছেন, ১৫ রান কম হয়ে গেছে তাদের সংগ্রহ। তবে তিনশ রানের ওপরে যে কোনো লক্ষ্যই কঠিন। বোলিংয়ে তারা নিজেদের সেরাটা দিয়ে ইংল্যান্ডকে থামানোর চেষ্টা করবে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর
:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩০৫/৬ (তামিম ১২৮, সৌম্য ২৮, ইমরুল ১৯, মুশফিক ৭৯, সাকিব ১০, সাব্বির ২৪, মাহমুদউল্লাহ ৬*, মোসাদ্দেক ২*; ওকস ০/৪, উড ০/৫৮, বল ১/৮২, স্টোকস ১/৪২, প্লানকেট ৪/৫৯, মইন ০/৪০, রুট ০/১৮)

ফিরলেন সাব্বিরও

৫০তম ওভারের প্রথম বলে লিয়াম প্লানকেটকে উড়ানোর চেষ্টায় লং অনে জো রুটকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাব্বির রহমান। ১৫ বলে তিনটি চারে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ফিরেন ২৪ রান করে।

সাব্বিরের বিদায়ের সময় বাংলাদেশের স্কোর ৩০০/৬।

টিকলেন না সাকিব

জেইক বলকে উড়ানোর চেষ্টায় ফিরেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান নিজের জোনে বল পেলেও সীমানার বাইরে নিতে পারেননি। দুটি চারে ৮ বলে ১০ রান করে সাকিবের বিদায়ের সময় বাংলাদেশের স্কোর ২৭৭/৫।  সাব্বির রহমানের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

পরপর দুই বলে তামিম-মুশফিকের বিদায়

১৬৬ রানের চমৎকার এক জুটিতে দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেওয়া তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম ফিরেছেন পরপর দুই বলে।

লিয়াম প্লানকেটের বলে উইকেটরক্ষক জস বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন তামিম। ১৪২ বলে খেলা তার ১২৮ রানের ইনিংসটি গড়া ১২টি চার ও তিনটি ছক্কায়।

পরের বলে লং অফে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মুশফিক। ৭২ বলে ৭৯ রান করতে এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হাঁকিয়েছেন ৮টি চার।  

৪৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৬২/৪। প্লানকেটের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন সাব্বির রহমান।

তামিম-মুশফিকের দেড়শ রানের জুটি

এশিয়ার বাইরে বাংলাদেশকে প্রথম দেড়শ রানের জুটি উপহার দিয়েছেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। ইমরুল কায়েসের বিদায়ের পর জুটি বাধা দুই ব্যাটসম্যানকে দলকে রেখেছেন বড় সংগ্রহের পথে।

এশিয়ার বাইরে ওয়ানডেতে দেশের আগের সেরা জুটিতেও ছিলেন মুশফিক। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ১৪১ রানের জুটি গড়েছিলেন  এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। 

ইংলিশদের বিপক্ষে সেটাই ছিল বাংলাদেশের সেরা জুটি।

৪৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৫৯/২। তামিমের রান ১২৭, মুশফিকের ৭৮। দুই জনে জুটি বেধে তুলেছেন ১৬৪ রান।

৮ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ

শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ গেছে দুই থিতু ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে। দলটির হাতে রয়েছে ৮ উইকেট। শেষের দিকে দ্রুত রান তোলার সামর্থ্য আছে সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেনদের।

৪০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২২৩/২। ১২৭ বলে তামিমের রান ১০৬, ৫৯ বলে মুশফিকের ৬৩।

তামিমের দারুণ শতক
শাহরিয়ার নাফীসের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শতক করেছেন তামিম ইকবাল। আইসিসির কোনো ওয়ানডে টুর্নামেন্টে এটাই তার প্রথম তিন অঙ্কের স্কোর।

মইন আলির বলে স্কয়ার লেগে বল পাঠিয়ে ১২৪ বলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও ওয়ানডেতে সব মিলিয়ে নবম শতকে পৌঁছান তামিম।

শটের পসরা সাজিয়ে বসা বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান উপহার দিয়েছেন দারুণ কিছু পুল, কাভার ড্রাইভ, কাট, স্ট্রেইট ড্রাইভ। প্রতিপক্ষের ভালো বোলিং সামলেছেন সতর্কতার সঙ্গে। নিজের জোনে বল পেলে চড়াও হয়েছেন। শতকে পৌঁছানোর পথে হাঁকিয়েছেন ১১টি চার ও লংঅন দিয়ে বিশাল এক ছক্কা।

বাংলাদেশের দুইশ, তিনশতে চোখ

আইসিসির ওয়ানডে টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম শতকের পথে থাকা তামিম ইকবালের ওপর থেকে চাপ কমাতে ইংলিশ বোলারদের ওপর চড়াও হন মুশফিকুর রহিম। জেইক বলকে আপার কাটে দারুণ এক চার হাঁকিয়ে ৩৮তম ওভারে দলকে নিয়ে যান দুইশ রানে।

৩৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২০৯/২। তামিমের রান ৯৭, মুশফিকের ৬০।

মুশফিকের অর্ধশতক, জুটির শতক

শুরু থেকে রানের জন্য মনোযোগী মুশফিকুর রহিম ৪৮ বলে পৌঁছেছেন অর্ধশতকে। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান এক-দুই রান নিয়ে সচল রেখেছেন রানের চাকা। কাভার ড্রাইভ, কাট আর পুলে হাঁকিয়েছেন চারটি চার।

জো রুটকে চার মেরে নিজের অর্ধশতকের সঙ্গে তামিম ইকবালের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটির রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান মুশফিক। দুই জনের দারুণ ব্যাটিংয়ে তিনশ রানের পথে রয়েছে বাংলাদেশ।

তামিম-মুশফিকের অর্ধশত রানের জুটি

বেন স্টোকসকে পুল করে চার হাঁকিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিকে অর্ধশত রানে নিয়ে গেছেন মুশফিকুর রহিম। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান শুরু থেকেই রানের গতি বাড়াতে মনোযোগী। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তার সঙ্গী তামিম ইকবাল খেলছেন নিজের মতো করেই।

২৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৫০/২। ৮৮ বলে তামিমের রান ৭১ ও মুশফিক ২৬ বলে ২৯।

২২ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১০৮ রান। তামিমের রান ৫০, মুশফিকের ৮।

বাংলাদেশের একশ পার, তামিমের অর্ধশতক

লিয়াম প্লানকেটের বলে মুশফিকুর রহিমের চারে ২২তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর একশ ছাড়ায়। সেই ওভারেই কাট করে চার হাঁকিয়ে অর্ধশতকে পৌঁছান তামিম ইকবাল।

৭১ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৭টি চার।

থিতু হয়ে আউট ইমরুলও

সৌম্য সরকারের মতো থিতু হয়ে ফিরেন টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসও। লিয়াম প্লানকেটের অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্লগ করতে গিয়ে ধরা পড়েন মার্ক উডের হাতে। মিড অন থেকে খানিকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে দুই হাতেবল মুঠোয় নেন তিনি।

২০ বলে তিনটি চারে ১৯ রান করে ইমরুল ফেরার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৯৫/২। ৪৫ রানে ব্যাট করা তামিম ইকবালের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।

সৌম্যর বিদায়ে ভাঙল অর্ধশত রানের জুটি

মাঝে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া সৌম্য মাত্রই নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেছিলেন।  বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের অর্ধশত রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছেন বেন স্টোকস।

ইংলিশ অলরাউন্ডারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি মারার মতোই ছিল। সৌম্যর আপার কাটে সহজ ক্যাচ যায় সরাসরি ডিপ কাভারের ফিল্ডারের কাছে। ৩৪ বলে চারটি চার আর একটি ছক্কায় সৌম্য ফিরেন ৩৪ রান করে।

১২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৫৬/১। ২৬ রান করা তামিম ইকবালের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন ইমরুল কায়েস।

প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৩৬ রান

ধীরে ধীরে খোলস থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করেছেন তামিম ইকবাল। প্রথম ২১ বলে ৮ রান সংগ্রহ করা বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ৩৫ বলে করেছেন ২৩ রান। তার ব্যাট থেকে এসেছে চারটি চার।

শুরুতে শট খেলা সৌম্য সরকার নিজেকে খানিকটা গুটিয়ে নেন। এক সময়ে ১১ বলে ১০ রান করা এই বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পরের ১৪ বলে করেছেন ২ রান।  ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩৬/০।

জীবন পেলেন সৌম্য

জেইক বলের ওভারের আগের পাঁচটি বল খেললেন ডট। ষষ্ঠ বলে চড়াও হতে গেলেন সৌম্য সরকার। স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ গেল মইন আলির কাছে, কিন্তু মুঠোয় নিতে পারেননি ইংলিশ অলরাউন্ডার।

সে সময় ১১ রানে ছিলেন সৌম্য। ৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২০/০।

সতর্ক তামিম, আত্মবিশ্বাসী সৌম্য

মেডেন দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশ এগোচ্ছে ধীর গতিতে। এক প্রান্তে নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে রেখেছেন তামিম ইকবাল। সুযোগ পেলেন শট খেলছেন আরেক বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার।

৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৪/০। তামিম ১৭ বলে ৩ আর সৌম্য ১৩ বলে ১০।

একাদশে ইমরুল, নেই মিরাজ

তিন পেসারের সঙ্গে তিন স্পিনিং অলরাউন্ডার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। একাদশে ফিরেছেন ইমরুল কায়েস। গত ডিসেম্বরে শেষ দেশের হয়ে ওয়ানডে খেলা এই বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান একাদশে ফেরায় মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করবেন সাব্বির রহমান।

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে খেলা দল থেকে বাদ পড়েছেন নাসির হোসেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলেই নেই তিনি। তার জায়গাতেই একাদশে ফিরেছেন ইমরুল। 

প্রথম ম্যাচে একাদশে নেই তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে পেস বোলিংয়ে আছেন রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান। স্পিনে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আছেন মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন।

ইংল্যান্ড একাদশ: ওয়েন মর্গ্যান, মইন আলি, জেইক বল, জস বাটলার, অ্যালেক্স হেলস, লিয়াম প্লানকেট, জো রুট, জেসন রয়, বেন স্টোকস, ক্রিস ওকস, মার্ক উড।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

লন্ডনের কেনিংটন ওভালে বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যান। টস জিতলে মাশরাফি বিন মুর্তজাও ফিল্ডিং নিতেন। ভালো সংগ্রহ গড়ার সঙ্গে ফিল্ডিংয়েও উন্নতির আশার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।  

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ফেরা

১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফিরেছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের আসরে খেলা দলটি দর্শক হয়ে ছিল ২০০৯ ও ২০১৩। মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান ছাড়া এই টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা নেই কারোর।