রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ব্রাদার্সের দারুণ জয়

শ্বাসরুদ্ধকর জয় দিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ শেষ করেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। আগের ম্যাচে পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙা ভিক্টোরিয়া রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয়ের আশা জাগিয়ে হেরেছে ১ রানে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2017, 11:57 AM
Updated : 20 May 2017, 05:48 PM

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নিয়েছেন মনির হোসেন। বাঁহাতি এই স্পিনার পরপর তিন বলে ধীমান ঘোষ, নিহাদউজ্জামান ও ইফতেখার সাজ্জাদকে ফিরিয়ে করেছেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক।

৪৮তম ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ধীমানকে। পরের বলে বোল্ড নিহাদউজ্জামান। ৫০তম ওভারে ফিরে প্রথম বলে মোহাম্মদ আরাফাতের ক্যাচে পরিণত করেন সাজ্জাদকে। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক তবে তারপরও জিতেনি ভিক্টোরিয়া।

১১ ম্যাচে পঞ্চম জয় পাওয়া ব্রাদার্সের সুপার লিগে খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই। সমান ম্যাচে দশম হারের তিক্ত স্বাদ পাওয়া ভিক্টোরিয়ার রেলিগেশন লিগ খেলা নিশ্চিত হয়েছে আগেই।

শেষ ৪ ওভারে দরকার ছিল ৩৪ রান, এর মধ্যে এক ওভারেই আসে ১৪ রান। জয়ের সমীকরণ তখন খুব সহজ। কিন্তু নিহাদউজ্জামান ও কাজী কামরুল ইসলামের দারুণ বোলিংয়ে ৩ ওভারে ১৮ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি ভিক্টোরিয়া।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে শনিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ বল বাকি থাকতে ২৩৫ রানে অলআউট হয়ে যায় ব্রাদার্স। জবাবে ৯ উইকেটে ২৩৪ রানে থামে ভিক্টোরিয়া।

ব্যাটিংয়ে শুরু আর শেষ কিছুই ভালো হয়নি ব্রাদার্সের। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ফিরেছেন ৪৫ রানে। শেষ ৬ উইকেটের পতন ৩৯ রানে।

মাঝের সময়টুকুতে অলক কাপালী ও মাইশুকুর রহমানকে নিয়ে লড়াই করেছেন মানভিন্দর বিসলা। ৪২ বলে ৩৫ রান করা কাপালীর সঙ্গে ৫০ ও মাইশুকুরের সঙ্গে ভারতীয় ব্যাটসম্যান গড়েছেন ১০১ রানের দুটি দারুণ জুটি।

৮৭ বলে খেলা বিসলার ৭৮ রানের ইনিংসটি গড়া তিনটি করে ছক্কা-চারে।

৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভিক্টোরিয়ার সেরা বোলার মনির হোসেন। পেসার মাহবুবুল আলম ৩ উইকেট নিয়েছেন ৫৭ রানে।

লক্ষ্য তাড়ায় ভিক্টোরিয়ার প্রায় সব ব্যাটসম্যানই রান পেয়েছেন। প্রথম নয় জনের মধ্যে আট জনই গেছেন দুই অঙ্কে কিন্তু কেউই যেতে পারেননি পঞ্চাশ পর্যন্ত।

সর্বোচ্চ ৪৯ রান উত্তম সরকারের। এর বাইরে চল্লিশের ঘরে গেছেন কেবল মইনুল ইসলাম।

রুবেল মিয়ার সঙ্গে ৬৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালো করে ব্রাদার্স। এটাই হয়ে থাকে তাদের সেরা জুটি। আর কোনো জুটি যেতে পারেনি অর্ধশতক পর্যন্ত।

মইনুল-আবু সায়েম দলের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। বাঁহাতি স্পিনার নিহাদউজ্জামানের শেষ ওভার থেকে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৯ রান। সেই ওভারে থেকে ৭ রানের বেশি নিতে পারেনি ভিক্টোরিয়া।

আগের ওভারে মাত্র ৩ রান দেওয়া কাজী কামরুল নেন সায়েমের ক্যাচ। শেষ বলে ৩ রান নিয়ে টাই করতে চেয়েছিল ভিক্টোরিয়া। কিন্তু তৃতীয় রান নিতে গিয়ে মাইশুকুরের দারুণ থ্রোয়ে মইনুল রান আউট হয়ে গেলে সেই চেষ্টা সফল হয়নি।

৩৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ব্রাদার্সের সেরা বোলার বিসলা। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৪৯.১ ওভারে ২৩৫ (মিজানুর ২৬, জুনায়েদ ৬, রুবেল ১১, কাপালী ৩৫, বিসলা ৭৮, মাইশুকুর ৩৮, ধীমান ১৮, কামরুল ১৪, নিহাদউজ্জামান ০, মেরাজুল ১, সাজ্জাদ ০; মাহবুবুল ৩/৫৭, আরাফাত ০/৪৫, মইনুল ২/৪২, মনির ৫/৩৮, মুস্তাকিম ০/৪৭)

ভিক্টোরিয়া: ৫০ ওভারে ২৩৪/৯ (রুবেল ২৬, উত্তম ৪৯, কার্তিক ২২, শফিউল ২৪, আরাফাত ৩, মইনুল ৪১, মাহবুব ১৬, মনির ১০, সায়েম ৩৪, মাহবুবুল ০*; নিহাদউজ্জামান ১/৪৪, মেরাজুল ১/২৭, কাপালী ১/৩৮, মাইশুকুর ০/৯, কামরুল ০/৩৯, বিসলা ৩/৩৯, সাজ্জাদ ২/৩৩)

ফল: ব্রাদার্স ১ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মানভিন্দর বিসলা