অপ্রতিরোধ্য গাজীর এমন পরাজয়!

অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছিল জয়রথ। নামে বড় দল, ভারে বড় দল, ঐতিহ্যে বড় দল, থামাতে পারছিল না কেউই। সেই গাজী গ্রুপের জয়রথ থামাল কিনা তলানির দিকের দল কলাবাগান! সেই হারও খুব বাজেভাবে, কলাবাগানের কাছে রীতিমত বিধ্বস্ত গাজী।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2017, 01:13 PM
Updated : 18 May 2017, 01:13 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ১২৭ রানে হারিয়েছে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র। বৃহস্পতিবার ফতুল্লায় কলাবাগানের ২২২ রান তাড়ায় গাজী গুটিয়ে গেছে ৯৫ রানেই।

দশ ম্যাচে প্রথম হারের পর শীর্ষেই গাজী; তবে কমেছে পরের দলের সঙ্গে ব্যবধান। ১৮ পয়েন্ট গাজীর। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ঠিক পেছনেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী।

দুই দলের স্কোরই বলছে ম্যাচের বাস্তবতা। কলাবাগান গড়তে পেরেছিল মাঝারি স্কোর। তাতেই ধরা দিয়েছে বড় জয়। বোলারদেরই তাই বড় অবদান। তবে বোলারদের ম্যাচেও ম্যান অব দা ম্যাচ একজন ব্যাটসম্যান। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে কলাবাগানের নায়ক তাসামুল হক।

উইকেট মন্থর ছিল, বল ব্যাটে এসেছে ধীরে। আড়াআড়ি ব্যাটে খেলা ছিল ঝুঁকির। তবে সোজা ব্যাটে খেললে টিকে থাকা যায়, রান করা যায়। যেটি করে দেখিয়েছেন তাসামুল।

ওপেনিংয়ে নেমে তাসামুল দলকে টেনে নিয়েছেন ৪৭ ওভার পর্যন্ত। সেভাবে লম্বা সময় তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। ওপেনিংয়ে ৫৮ রানের জুটির পর জসিম উদ্দিন ফিরেছেন ২৮ রানে।

আগের ম্যাচে ৮১ রানের ইনিংস খেলা মোহাম্মদ আশরাফুল এবার ৩৩ বলে করেছেন ১৫। চারে নামা তুষার ইমরানের সঙ্গে তাসামুলের জুটি ৬৪ রানের।

এরপর সেভাবে আর গড়ে ওঠেনি জুটি। ৮১ বলে অর্ধশতক স্পর্শ করেছিলেন তাসামুল। পরের পঞ্চাশ করেছেন ৪৯ বলে। ১৩২ বলে ১০২ রান করে আউট হয়েছেন ৪৮তম ওভারে।

২৫ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে কলাবাগান। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গাজীর ভারতীয় অফ স্পিনার পারভেজ রসুল এদিনও নিয়েছেন ৪ উইকেট।

তাসামুলের মতো দেখেশুনে খেলার ব্যাটসম্যান গাজীতে অনেক আছে। মন্থর উইকেটেও তাই লক্ষ্য খুব কঠিন ছিল না। কিন্তু কলাবাগানের দুর্দন্ত বোলিং আর গাজীর ব্যাটসম্যানদের একের পর এক বাজে শটে সেই লক্ষ্যই হয়ে উঠল অসম্ভব!

নতুন বলে অফ স্পিনার সঞ্চিত সাহা ফিরিয়ে লেন জহুরুল ও মুমিনুলকে। অনিয়মিত বোলার তুষার ফেরালেন এনামুল ও মেহেদিকে। আসা-যাওয়ার মিছিয়ে ৪২ রানেই নেই ৭ উইকেট!

অধিনায়ক নাদীফ চৌধুরির ৪৫ রান গাজীকে আরও বিব্রতকর স্কোর থেকে বাঁচায়। তার পরও একশ ছোঁয়া হয়নি। ৩ উইকেট নিয়ে লেজ মুড়িয়ে দেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার সাদ নাসিম।

গাজীর কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন দলের হারে দায় দিচ্ছেন ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই। আর হারেও খুঁজে নিচ্ছেন ইতিবাচক দিক।

“বাজে শট নির্বাচনই আমাদের হারের কারণ। সোজা ব্যাটে খেলে উইকেট আঁকড়ে রাখতে পারেনি আমাদের কেউ। ওদের তাসামুল যেমন দেখেশুনে খেলে ইনিংস লম্বা করেছে। আমাদের কোনো ব্যাটসম্যান সেটি করতে পারেনি।”

“তবে হারের মাঝেও একটা ভালো দিক হলো যে পরাজয়টা সুপার লিগের আগেই এসেছে। এছাড়া ছেলেদের ওপর অতি-আত্মবিশ্বাসও ভর করতে পারত। এখন আশা করি, আমাদের পা মাটিতেই থাকবে।”

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কলাবাগান: ৫০ ওভারে ২২২/৯ (তাসামুল ১০২, জসিম ২৮, আশরাফুল ১৫, তুষার ৩২, সাদ ২০, মুক্তার ২, আবুল হাসান ২, মেহরাব জুনিয়র ৬, নুরুজ্জমান ৩, সঞ্জিত ৫*, নাবিল ০*; আবু হায়দর ০/৩৯, হোসাইন ১/৩০, মেহেদি ১/৩৬, সোহরাওয়ার্দী ০/৫৪, রসুল ৪/৫৫, নাঈম জুনি. ০/১৫)।

গাজী গ্রুপ: ৩২.৫ ওভারে ৯৫ (এনামুল ১৬, জহুরুল ১, মুমিনুল ০, সোহরাওয়ার্দী ৬, মেহেদি ০, রসুল ৫, নাদিফ ৪৫, ফারুক ২, আবু হায়দার ১১, নাঈম ০, হোসাইন ০; সঞ্জিত ৩/৭, আবুল হাসান ২/২৪, তুষার ২/১৯, সাদ ৩/১২, নাবিল ০/১০, মুক্তার ০/১১, মেহরাব ০/৫)।

ফল: কলাবাগান ১২৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: তাসামুল হক