টার্ন বাড়ায় এখন বোলিং আরও কার্যকর: আরাফাত সানি

আগে বলে টার্ন ছিল কম- এক জায়গায় টানা বল করে উইকেট নিতে চাইতাম; এখন টার্ন অনেক বেড়েছে তাই বোলিংও অনেক বেশি কার্যকর হয়েছে- বলছিলেন আরাফাত সানি। নিজের নতুন বোলিং অ্যাকশন পুরোপুরি আয়ত্তে আনা বাঁহাতি স্পিনার উন্মুখ জাতীয় দলে হারানো জায়গা ফিরে পেতে।  

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2017, 10:23 AM
Updated : 10 May 2017, 10:23 AM

গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার সময় সানির বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করে গত বছরই মাঠে ফেরা এই স্পিনারের জীবন আরও কঠিন করে তুলে মাঠের বাইরে ঘটনা। এক তরুণীর মামলায় জেল খাটতে হয়েছে তাকে।

কঠিন সময় নিয়ে এখন কথা বলতে চান না। ভুলে যেতে চান তিক্ত অতীত। মাঠের বর্তমান ছন্দ ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে তাকিয়ে আছেন ভবিষ্যতের দিকে।

অষ্টম রাউন্ড শেষে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের উইকেট শিকারীদের তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছেন সানি। ১৭.৫৯ গড়ে নিয়েছেন ২২ উইকেট।

৩৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে লিগ শুরু করা বাঁহাতি স্পিনার শেষ ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৫৬ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। একবার নিয়েছেন চার উইকেট, দুইবার করে দুই উইকেট।

আঁটসাঁট বোলিংয়ের জন্য পরিচিত সানি নতুন বোলিং অ্যাকশনে খুব একটা খরুচে নন। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৫.১০ করে। 

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যে ছন্দ হারাননি তার ইঙ্গিত সানি আগেই দিয়েছেন বিপিএলে। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১২ ম্যাচে ১১ ইনিংসে ১৪.৭৬ গড়ে নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট। ওভার প্রতি খরচ করেছিলেন ৬.২৯ রান। সেরা শূন্য রানে ৩ উইকেট।

সেই পারফরম্যান্স নয়, সানির আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি জাতীয় ক্রিকেট লিগের দুই ম্যাচ। বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে ৪৪ ওভার বল করে ১৪৯ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। খুলনার বিপক্ষে ৪১.৪ ওভার বল করে ১১৩ রানে ৩ উইকেট।

পরিসংখ্যানের দিক থেকে খুব একটা ভালো বলা যাবে না। কিন্তু নিজের নতুন বোলিং অ্যাকশনে লম্বা সময় ধরে মাঠে বোলিং করে যাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল সানির কাছে।

“যখন নতুন অ্যাকশনে বল শুরু করি অবশ্যই আমার জন্য একটু কঠিন ছিল। ক্রিকেট যেহেতু খেলতে হবে এটা আমি আগেই মেনে নিয়েছি। যে অ্যাকশনেই বোলিং করি না কেন বোলিং আমাকেই করতে হবে সেটার সাথে যত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবো তত ভালো। আমি ভাগ্যবান যে, অ্যাকশন সংশোধনের পর থেকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে যে দুইটা ম্যাচ খেলেছি যেখানে ওভারের কোনো লিমিটেশন ছিল না…।”

“আমার জন্য খুব বড় ফেভার ছিল, আমি টানা বোলিং করেছি ওই দুই ম্যাচে। সম্ভবত বল করেছি ৮০ ওভারের মতো। এটা আমার জন্য খুবই সহায়ক হয়েছে।”

বিপিএলের সময় রংপুরের কোচ জাভেদ ওমর বেলিম বলেছিলেন, নতুন অ্যাকশনে সব ধরনের ক্রিকেটে এখন আরও বেশি কার্যকর হবেন সানি। বাঁহাতি স্পিনারের নিজেও তা-ই মনে করেন।

“আগে টার্ন ছিল না খুব একটা। বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ, জায়গায় বল ফেলার ব্যাপারটা আগের মতোই আছে কিন্ত এখন দুইটা জিনিস ভাল হচ্ছে। আগের চেয়ে টার্ন বেড়েছে আর সঙ্গে বল ড্রিফটও করছে। নতুন বোলিংয়ে অ্যাকশনে এই দুইটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।”

বোলিং অ্যাকশন সংশোধনের পর সোজা জাতীয় দলে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তেমনটা হয়নি সানির ক্ষেত্রে। প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করে ফিরতে হবে বাঁহাতি স্পিনারকে।

“জাতীয় দলে নেই এ নিয়ে আমি এক ফোঁটাও হতাশ না। এটা হতেই পারে একজন খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে। দল থেকে বের হবে, আবার ঢুকবে- সেটা হওয়াই স্বাভাবিক। আমি প্রশ্নবিদ্ম বোলিংয়ের জন্য দল থেকে বের হয়েছি। যদি এখানে পারফম করি… টানা ভালো করে যেতে থাকি, সর্বোচ্চ উইকেট পাই তাহলে হয়তো জাতীয় দলে ফিরতে পারি।”