রান উৎসবের ম্যাচে মোহামেডানকে হারাল আবাহনী

লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর শতকে বিশাল সংগ্রহ গড়া আবাহনী হারতে বসেছিল। রকিবুল হাসানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে জয়ের আশা জাগানো মোহামেডানকে থামিয়েছেন মানান শর্মা। রান উৎসবের ম্যাচে নিয়েছেন ৫ উইকেট, দলকে জিতেয়েছেন ২৭ রানে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2017, 01:05 PM
Updated : 8 May 2017, 01:18 PM

চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এই জয় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আট ম্যাচে তাদের ষষ্ঠ। মোহামেডানের এটি তৃতীয় হার।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস জিতে ৫ উইকেটে ৩৬৬ রান করে আবাহনী। জবাবে ৯ উইকেটে ৩৩৯ রান তুলতে পারে মোহামেডান।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি মোহামেডানের। নবম ওভারে ৩৮ রানের মধ্যে ফিরে যান টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। তখন থেকেই শুরু হয় রকিবুলের লড়াই।

চারিথ আসালঙ্কার কাছ থেকে দারুণ সঙ্গ পেয়েছেন ম্যাচ সেরা রকিবুল। ১২৬ বলে দুই জনে গড়েছেন ১৭৫ রানের জুটি। ৬০ বলে ৮টি চারে ৬৩ রান করা আসালঙ্কাকে বিদায় করে আবাহনীকে ম্যাচে ফেরান মানান।

এরপর আর কোনো ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে খুব একটা সহায়তা পাননি রকিবুল। ধীরে ধীরে কঠিন হতে থাকে তার কাজ। জয়ের জন্য শেষ ১০ ওভারে দরকার দাঁড়ায় ৯৯ রান, ঠিক এই রানই নিজেদের শেষ ১০ ওভারে তুলেছিল আবাহনী।

শেষের দিকে নিয়মিত উইকেট হারানোয় পেরে উঠেনি মোহামেডান। শেষ ওভারে গিয়ে থামে রকিবুলের লড়াই। তার ১৯০ রানের ধ্রুপদী ইনিংসটি লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি আগে থেকেই তার।

১৩৮ বলে খেলা ২০৪ মিনিট স্থায়ী ইনিংসটি ১৭টি চার ও ১০টি চারে সাজানো।

৪৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে মোহামেডানের সেরা বোলার মানান। প্রথম চার ওভারে ৪০ রান দেওয়া অনিক শেষ ৬ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।

এর আগে আবাহনীকে ১৬ ওভার স্থায়ী ১০৩ রানের উদ্বোধনী দারুণ সূচনা এনে দেন লিটন-সাদমান ইসলাম। দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুলের সঙ্গে ১০৯ রানের আরেকটি চমৎকার জুটি উপহার দেন লিটন।

এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ফেরেন ১৩৫ রান করে। তার ১০৩ বলের ইনিংসটি গড়া ১৫টি চার আর দুটি ছক্কায়। শুরুতে এক-দুই রান নিয়ে লিটনকে সঙ্গ দিয়ে যাওয়া নাজমুল মোহামেডানের বোলারদের ওপর চড়াও হন ৪০ ওভারের পর।

চলতি আসরে দ্বিতীয় শতক পাওয়া নাজমুল ফিরেন ১১০ রান করে। তার ১০০ বলের ইনিংসটি ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় গড়া। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের এটাই সর্বোচ্চ।

শেষটায় আবাহনীর রান সাড়ে তিনশ ছাড়ানোয় বড় অবদান রয়েছে শুভাগত হোম চৌধুরীর। ২৭ বলে তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন এই অলরাউন্ডার।

মোহামেডানের তাইজুল ইসলাম ৩ উইকেট নেন ৫৭ রানে। অন্য বোলারদের কাছ থেকে খুব একটা সহায়তা পাননি বাঁহাতি এই স্পিনার।     

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৫০ ওভারে ৩৬৬/৫ (লিটন ১৩৫, সাদমান ২৮, নাজমুল ১১০, সাইফ ২৯, মিঠুন ৫, শুভাগত ৪৮*, আফিফ ৬*; রাব্বি ১/৭৮, তাইজুল ৩/৫৭, সাজেদুল ০/৮১, এবাদত ৪/৩৪, আসালঙ্কা ০/৭০, শামসুর ১/৪৫)

মোহামেডান: ৩৩৯/৯ (অভিষেক ৩, রনি ১৯, শামসুর ১৪, আসালঙ্কা ৬৩, রকিবুল ১৯০, জাবিদ ৫, নাজমুল ২২, সাজেদুল ৬, রাব্বি ৫*, তাইজুল ০, এবাদত ০*; সাইফুদ্দিন ১/৬১, মানান ৫/৪৭, আফিফ ০/২৬, শুভাগত ০/৭১, অনিক ২/৭২, সাকলাইন ১/৪৫, নাজমুল ০/১১)

ফল: আবাহনী ২৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রকিবুল হাসান।