রাফাতুল্লাহর সেঞ্চুরির পর আল আমিনের ৫ উইকেট

২০ বছর ধরে খেলছেন পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে। ধারাবাহিক পারফর্ম করলেও জাতীয় দলে জায়গা মিলছিল না। অবশেষে ৩৯ বছর বয়সে গত বছর স্বাদ পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের। যদিও বাদ পড়েছেন পাকিস্তানের হয়ে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলেই। তবে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনও বড় নাম রাফাতুল্লাহ মোহমান্দ আলো ছড়ালেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও। এসেই সেঞ্চুরি!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2017, 11:59 AM
Updated : 29 April 2017, 12:17 PM

প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন ৪০ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। পরে বল হাতে পেসার আল আমিন হোসেন নিয়েছেন ৫ উইকেট। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৬৬ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

বিকেএসপি ৪ নম্বর মাঠে প্রাইম ব্যাংকের ২৮৪ রান তাড়ায় রূপগঞ্জ গুটিয়ে যায় ২১৮ রানে। এই নিয়ে পাঁচ ম্যাচের সবকটি জিতল প্রাইম ব্যাংক। সমান ম্যাচে রূপগঞ্জের হার দুটি।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা প্রাইম ব্যাংক ২৬ রানের মধ্যে হারায় দুই ওপেনারকে। দুটিই নেন অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শরীফ। তিনে নামা রাফাতুল্লাহর শুরুটা ছিল সাবধানী। তবে দশম ওভারে সৈয়দ রাসেলকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কায় হাত খোলেন। এরপর আর তাকে আটকানো যায়নি।

তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেটে ৫৩ রানের দুটি জুটিতে রাফাতুল্লাহকে সঙ্গ দিয়েছেন জাকির হাসান ও আল আমিন। তবে প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস সত্যিকার গতি পায় পঞ্চম জুটিতে। আসিফ আহমেদকে নিয়ে রাফাতুল্লাহ গড়েন ৬৭ বলে ৯২ রানের জুটি। জুটিতে একাই ৬৭ রান করেছেন রাফাতুল্লাহ!

প্রথম অর্ধশতকে ৭৪ বল লেগেছিল রাফাতুল্লাহর। পরের পঞ্চাশ ৩৮ বলে। সেঞ্চুরির পর ১৩ বলে ২৮। ১০ চার ও আধ ডজন ছক্কায় ১২৫ করে আউট হয়েছেন শরীফের বলে।

শেষ দিকে রান বাড়ানোর কাজ করেছেন আসিফ ও সালমান হোসেন। শেষ ওভারে আউট হওয়া আসিফ করেছেন ৪৮ বলে ৪৭। ২৮ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত সালমান।

রান তাড়ায় প্রথম তিন ওভারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে রূপগঞ্জ। নতুন বলে প্রাইম ব্যাংকের পেস ও অফ স্পিনের যুগলবন্দীতে তারা হয়ে পড়ে দিশেহারা।

প্রথম ওভারেই এজাজ আহমেকে ফেরান আল আমিন হোসেন। দ্বিতীয় ওভারে অফ স্পিনার নাহিদুল ফেরান হাসানুজ্জামান ও মাহমুদুল হাসানকে। পরের ওভারে আবার আল আমিন, এবার শিকার ভারতীয় অলরাউন্ডার জলজ সাক্সেনা।

রূপগঞ্জের রান তখন ৪ উইকেটে ১৩! ম্যাচ কার্যত তখনই শেষ। এরপর কেবলই ব্যবধান কমানোর লড়াই। যেটির চেষ্টা করেছেন নাঈম ইসলাম, এই ধরনের পরিস্থিতিতে যিনি বিশেষজ্ঞ।

নাঈম নিজের মতোই লড়াই করেছেন। মুশফিক-মাশরাফিরা চলে যাওয়ায় নেতৃত্ব পাওয়া মোশাররফ হোসেন করেছেন ৬৩ বলে ৪২। শেষ দিকে শরীফ ৩২ বলে ৩৪। তাতে একটু ভদ্রস্থ হয়েছে ব্যবধান।

নাঈম যদিও একটি ব্যক্তিগত অপ্রাপ্তির আক্ষেপে পুড়েছেন। আউট হয়েছেন ৯৫ রানে। আর ৫টি রান করলে লিগে চার ম্যাচে হয়ে যেত দুটি সেঞ্চুরি। এর আগে বিসিএলে করেছিলেন চারটি সেঞ্চুরি।

প্রথম স্পেলের দুই উইকেটের পর আরও তিন উইকেট নিয়েছেন আল আমিন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৫ উইকেট পেলেন তৃতীয়বার। এই ম্যাচেই স্পর্শ করেছেন উইকেটের সেঞ্চুরি।

তবে মূল নায়ক ব্যাট হাতে সেঞ্চুরিয়ানই। ১২৫ রানের পর একটি উইকেটও নিয়ে ম্যাচ সেরা রাফাতুল্লাহ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক: ৫০ ওভারে ২৮৪/৬ (মারুফ ১৭, নাহিদল ০, রাফাতুল্লাহ ১২৮, জাকির ২৬, আল আমিন ২২, আসিফ ৪৭, সালমান ৩৩*, আরিফুল ২*; শরিফ ৩/৪২, রাসেল ১/৬০, সাক্সেনা ১/৩৮, মোশাররফ ০/৬৬, মুরাদ ১/৪৯, মাহমুদুল ০/২২)।

রূপগঞ্জ: ৪৯.২ ওভারে ২১৮ (এজাজ ৪, হাসানুজ্জামান ৮, মাহমুদুল ০, নাঈম ৯৫, সাক্সেনা ০, ইয়াসির ২০, মোশাররফ ৪২, শরিফ ৩৪, শাহিন ৩, রাসেল ৬, মুরাদ ১*; আল আমিন ৫/৪৯, নাহিদুল ২/৩৭, আরিফুল ০/৩০, নাজমুল অপু ২/৩৫, আল আমিন ০/৩৯, রাফাতুল্লাহ ১/২৬)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ৬৬ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রাফাতুল্লাহ মোহমান্দ