চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য সবার আগে ইংল্যান্ডে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। বুধবার রাতেই দেশ ছাড়বে দল। সাসেক্সে প্রস্তুতি ক্যাম্প দিন দশেকের। সেখান থেকে ৭ মে দল যাবে আয়ারল্যান্ডে। খেলবে ত্রিদেশীয় সিরিজে। এরপর জুনের শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিনের সফর।
মঙ্গলবার সফরপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বললেন প্রত্যাশা, সম্ভাবনা নিয়ে। জোর দিলেন মানসিক প্রস্তুতিতে।
“আমরা কিভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিব, সেটার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। পুরো দলেরই যেটা থাকা উচিত, সেটা হলো মানসিকভাবে দ্রুত প্রস্তুত হওয়া। যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত না হতে পারি, তাহলে ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্পও তেমন একটা কাজে দিবে না।”
“আমার কাছে মনে হয় না, ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাব। তবে যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারি, তাহলে অনেক দূর এগোতে পারব। এখানে মানসিক যুদ্ধটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় দলের বিপক্ষে তাদের কন্ডিশনে খেলা; কিছুটা শীত থাকবে, গ্রীষ্মের শুরু যেহেতু। কাজটা সহজ হবে না। ওরা যতটা সহজে পারবে, আমাদের তার চেয়ে দুই গুণ বেশি কষ্ট হবে। সুতরাং আমরা যদি সুস্থ থাকি এবং লড়াইয়ের মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারি, তাহলে আশা করি, ভালো খেলা হবে।”
মানসিক প্রস্তুতি যেমন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকাটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জও। অতীত অভিজ্ঞতা বলে, শঙ্কার কারণ আছে যথেষ্টই। বিশেষ করে এরকম লম্বা সফরে। লম্বা সফরের শেষ দিকে মানসিক ক্লান্তি ও শ্রান্তি পেয়ে বসে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। মাঠে চেয়ে বেশি টানে দেশ, বাড়ি। এবার কাজটা আরও কঠিন। কারণ মূল লক্ষ্য যেটি, সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই থাকবে শেষ দিকে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই এক মাসের বেশি হয়ে যাবে বাংলাদেশের সফর!
শঙ্কা যে আছে, সেটি স্বীকার করে নিচ্ছেন মাশরাফিও। তবে সেটিকে জয় করার পথটাও তার জানা। অধিনায়ক মনে করিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডে ২০১৫ বিশ্বকাপের সাফল্যকে।
“একটা ভয় থাকে, সফরের শেষের দিকে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাই। আগের ইতিহাস বলে, শেষের দিকে এমন হয়েছে, একটা সেশন খুব ভালো খেলে পরের সেশনটা খুব খারাপ হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে আমরা পুরো টুর্নামেন্ট ভালো খেলতে পেরেছিলাম। জয়ের ভেতরে ছিলাম, পয়েন্ট টেবিলে এমন একটা অবস্থায় ছিলাম যে কোয়ার্টারে ওঠার উত্তেজনা ছিল। ক্লান্তি তাই সেভাবে আসেনি। আমার মনে হয়, শুরুর জয়গুলো এই ক্লান্তির ব্যাপারটা দূর করতে পারে। এবার যেটা আয়ারল্যান্ডে করতে পারি। জয়ের ভেতরে থাকলে ভেতরের অনুভূতি খুব ভালো থাকে।”
“আরেকটা ব্যাপার, দলে এক সঙ্গে ১৭-১৮ জন থাকবে, তাদের এক সঙ্গে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সবসময় সবার সময় মসৃণ যাবে না। তবু সবাইকে এক সঙ্গে থাকতে হবে। বিশেষ করে যাদের খারাপ সময় যাবে, তাদেরকে দলের অংশ করে রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের মতো থাকতে হবে। এই দুই ব্যাপার হয়ত আমরা করতে পারি।”
মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাফল্যের মূল মন্ত্রই ছিল দলীয় ঐক্য। এবার মাশরাফির নেতৃত্বের আরও একটি পরীক্ষা। অধিনায়ক মাশরাফি জিতলে, জিতে যাবে বাংলাদেশও!