তামিমের তাণ্ডবে এলোমেলো কলাবাগান

প্রথম ম্যাচে ছিলেন না তামিম ইকবাল। গাজী গ্রুপের চাকায় পিষ্ট হয়েছিল মোহামেডান। অধিনায়ক ফিরলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। তুললেন ঝড়। তাতে এলোমেলো কলাবাগান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2017, 12:26 PM
Updated : 18 April 2017, 01:10 PM

এবারের লিগে প্রথম খেলতে নেমেই রেকর্ড গড়া ইনিংস খেললেন তামিম। প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া দলকে এনে দিলেন জয়ের স্বাদ। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রকে ২৪ রানে হারাল মোহামেডার স্পোর্টিং ক্লাব।

বিকেএসপিতে মোহামেডান তুলেছিল ৫০ ওভারে ৩০৭ রান। তামিম একাই করেন অর্ধেকের বেশি। সেই ঝড় সামলে ব্যাটিংয়ে খানিকটা গুছিয়ে উঠেছিল কলাবাগান। তবে জয়ের কাছে যেতে পারেনি। তুলেছে ২৮৩ রান।

গত লিগের শেষ ম্যাচে আবাহনীর হয়ে ১৪২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম। দল বদলে এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে। প্রথম ম্যাচেই খেললেন ১৫৭ রানের অসাধারণ ইনিংস।

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যনের সর্বোচ্চ ইনিংস এটিই। তামিম ছাড়িয়ে গেছেন ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নিজের করা ১৫৪ রানের ইনিংসকে।

তামিমের ১২৫ বলের ইনিংসে ছিল ১৮টি চার, ৭টি ছক্কা।

টস জিতে শামসুর রহমানকে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন তামিম। শুরুতে রান বাড়ানোর কাজটি করেছেন শামসুরই, তামিম ছিলেন সাবধানী। থিতু হয়ে যাওয়ার পর গতি পায় তামিমের ইনিংস।

উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৭৩ রান। দ্বিতীয় উইকেটে রনি তালুকদারকে নিয়ে তামিম তোলেন ৫৭ রান।

২০ রান করে রনি আউট হওয়ার পর দ্রুত ফেরেন রকিবুল হাসান ও রহমত শাহ। কিন্তু তামিমের ব্যাট তখন উন্মত্ত!

৬১ বলে তামিম ছুঁয়েছিলেন অর্ধশতক। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১৩তম সেঞ্চুরি করেছেন ১০২ বলে। সেঞ্চুরি থেকে দেড়শ ছুঁতে লেগেছে মাত্র ২১ বল!

পঞ্চম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৭৭ রানের জুটি গড়েছেন মাত্র ৪৭ বলে। জুটিতে মিরাজ করেছেন ২০ বলে ১০, তামিম ২৭ বলে ৬৫!

হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কায় ছাড়িয়েছেন দেড়শ। সঞ্জিত সাহাকে চার মেরে ছাড়িয়ে গেছেন আগের ১৫৪। পরের বলে সঞ্জিতকেই দিয়ে এসেছেন উইকেট।

চার উইকেট নিয়ে তরুণ এই অফ স্পিনার চেষ্টা করেছিলেন একটু রাশ টানার। কিন্তু শেষ দিকে কামরুল ইসলাম রাব্বির ১৬ বলে ২১ রান মোহামেডানকে এনে দেয় তিনশর বেশি রান।

কলাবাগানের রান তাড়ার শুরুটা ছিল মন্থর। মোহাম্মদ আশরাফুল ও জসিমউদ্দিন প্রথম ৮ ওভারে তোলেন ২৫ রান। প্রথম ২০ বলে আশরাফুলের ছিল ৬ রান।

আশরাফুল পরে রানের গতি একটু বাড়ান। কিন্তু কলাবাগান অধিনায়ক খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। আফগান লেগ স্পিনার রহমত শাহর বলে ফিরেছেন ৪৯ বলে ৪৬ রানে।

তৃতীয় উইকেটে ৯২ রানের জুটিতে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন মাসাকাদজা ও তুষার ইমরান। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই রান করছেন তুষার। তবে মাসাকাদজা পারেননি ততটা। রানের চাপ তাই বাড়ছিলই।

প্রয়োজন ছিল কোনো একজনের বড় একটি সেঞ্চুরি। সেই দাবি মেটাতে পারেননি কেউ। ৬১ বলে ৬৪ করে আউট তুষার। ৮০ বলে ৬৮ মাসাকাদজা।

এরপর উইকেট পড়েছে নিয়মিত। সাতে নেমে ৩২ বলে অপরাজিত ৩৮ করেছেন মুক্তার আলি। তবে সেভাবে জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি কলাবাগান কখনোই।

তামিমের এমন ইনিংসের দিনে আসলে মোহামেডান হারতেই পারত না!

মোহামেডান: ৫০ ওভারে ৩০৭/৯ (তামিম ১৫৭, শামসুর ৩৮, রনি ২০, রকিবুল ৭, রহমত ৮, মিরাজ ২১, মিলন ২, তাইজুল ৮, কামরুল রাব্বি ২২, সাজেদুল ১১*, শুভাশীস ১*; সঞ্জিত ৪/৫২, তুষার ০/৪, নাবিল ২/৪৪, শাহবাজ ০/৪১, আশরাফুল ০/৫২, আবুল হাসান ১/৫১, মুক্তার ২/৩০, মাসকাদজা ০/৩০)।

কলাবাগান: ৫০ ওভারে ২৮৩/৯ (জসিম ১১, আশরাফুল ৪৬, মাসাকাদজা ৬৮, তুষার ৬৪, মেহরাব ১০, তাসামুল ১১, মুক্তার ৩৮*, আবুল হাসান ১০, সঞ্জিত ৩, শাহবাজ ০, নাবিল ০*; তাইজুল ০/২৪, শুভাশীস ১/৪০, কামরুল রাব্বি ৩/৬৯, সাজেদুল ১/৪২, রহমত ১/৩৬, মিরাজ ২/৫৬)।

ফল: মোহামেডান ২৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: তামিম ইকবাল