দারুণ জয়ে বাংলাদেশের শুরু

শেষ টেস্টে জয়ের আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশ বয়ে আনল ওয়ানডেতেও। দুর্দান্ত ব্যাটিং, দারুণ বোলিং আর উদ্দীপ্ত ফিল্ডিং মিলিয়ে প্রায় পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স। প্রথম ওয়ানডেতে ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কাকে ৯০ রানে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2017, 08:31 AM
Updated : 25 March 2017, 06:00 PM

পেরেরাকে ফিরিয়েই শেষ

প্রায় সব হরিয়ে জ্বলে উঠেছিলেন থিসারা পেরেরা। করেছেন ঝড়ো অর্ধশতক। কিন্তু সেটি কেবল ব্যবধানই কমিয়েছে। পেরেরাকে ফিরিয়েই লঙ্কান ইনিংসের ইতি টেনেছেন মুস্তাফিজ।

৩৫ বলে ৫৫ করে ফিরেছেন পেরেরা। ২৯ বল আগেই ২৩৪ রানে অলআউট শ্রীলঙ্কা।

৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার মুস্তাফিজ। আঙুল ভাঙার পর ফিট হয়ে প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাশরাফি নিয়েছেন ২ উইকেট। অভিষেকে দুটি মিরাজ।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৯ ম্যাচে বাংলাদেশের এটি পঞ্চম জয়। আগের চারটি জয়ই ছিল পরে ব্যাট করে।

আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে সাত নম্বর জায়গা ধরে রাখতে এই সিরিজে একটি জয় ছিল আবশ্যক। বাংলাদেশ সেটি করে ফেলল প্রথম ম্যাচেই। এবার ছয়ে ওঠার পথে হাঁটার পালা।

শেষের কাছে শ্রীলঙ্কা

বোলিংয়ে আগের ওভারে বেশ রান গুণেছিলেন মুস্তাফিজ। সেটি পুষিয়ে দিতে চাইলেন যেন ফিল্ডিংয়ে। সরাসরি থ্রোতে রান আউট করলেন লাকশান সান্দকানকে। ৪৩.৫ ওভারে শ্রীলঙ্কা তখন ৯ উইকেটে ২৩২।

পেরেরার ঝড়ো অর্ধশতক

এক প্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মাঝেও থিসারা পেরেরা চালিয়ে যাচ্ছেন চেষ্টা। যে রকম ব্যাটিংয়ের জন্য তিনি পরিচিত, দলের ফেরার ইনিংসে খেললেন সেরকমই একটি ঝড়ো ইনিংস। ২৮ বলে করেছেন অর্ধশতক।

প্রায় আড়াই বছর পর ওয়ানডেতে করলেন অর্ধশতক। সবশেষ ২০১৪ সালে ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ২৬ বলে ৫৪।

মুস্তাফিজের দুই, শ্রীলঙ্কার আট

নিজের মতোই শট খেলছিলেন থিসারা পেরেরা। আরেক পাশে সুরাঙ্গা লাকমল দিচ্ছিলেন সঙ্গ। তবে সেই সঙ্গ সাঙ্গ হলো মুস্তাফিজের স্লোয়ারে। উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাব্বির রহমানের হাতে ধরা লাকমল। ফিরলেন ৮ রানে।

মুস্তাফিজের দ্বিতীয় উইকেট। শ্রীলঙ্কা তখন ৪০.৪ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৮।

ফিরেই মাশরফির আরেকটি

ইনিংসের তৃতীয় বলে নিয়েছিলেন প্রথম উইকেট। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে অতটাও অপেক্ষা করতে হলো না মাশরাফিকে। এবার প্রথম বলেই উইকেট!

স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ বল করেছিলেন মাশরাফি। সাচিথ পাথিরানা চেষ্টা করলেন মাঠের বাইরে ফেলতে। কিন্তু বলটি ছিল অফ কাটার। বল উঠল শুধু আকাশে। কাভারে ক্যাচ নিলেন মাহমুদউল্লাহ।

৩১ রানে ফিরলেন পাথিরানা। শ্রীলঙ্কার রান তখন ৩৭.১ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭১। বাংলাদেশের জয় কেবল সময়ের ব্যাপার।

মুস্তাফিজের প্রথম

সাচিথ পাথিরানা ও মিলিন্দা সিরিবর্ধনার জুটিতে রান বাড়ানোর চেষ্টা করছিল শ্রীলঙ্কা। বাধা হয়ে দাঁড়ালেন মুস্তাফিজ। সিরিবর্ধনাকে ফিরিয়ে ভাঙলেন জুটি।

আগের বলটিতেই মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মেরেছিলেন সিরিবর্ধনা। পরের বলটি মুস্তাফিজ করলেন শর্ট। সিরিবর্ধনার পুল শট অনেকটা দৌড়ে দারুণ দক্ষতায় হাতে জমালেন শুভাগত। এই বদলি ফিল্ডারের এটি দ্বিতীয় ক্যাচ। ম্যাচ জুড়ে দারুণ ফিল্ডিং করে চলেছেন শুভাগত। মুস্তাফিজ নিলেন ম্যাচে প্রথম উইকেট।

৩৩.৩ ওভারে শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ১৫৩।

সরল চান্দিমাল-বাধাও
 
বাংলাদেশের বিপক্ষ বরাবরই ভালো খেলেন চান্দিমাল। যথারীতি দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। তবে রান-বলের টানাপোড়েন এত বেড়ে চলেছে যে তারও কিছু করার ছিল না। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে তাকে ফেরালেন মিরাজ।
 
বলে ফ্লাইট দেখেই সুইপ করতে গিয়েছিলেন চান্দিমাল। বল গ্লাভসে লেগে উঠে যায় ক্যাচ, শর্ট ফাইন লেগে সেটি হাতে জমান সৌম্য সরকার। ৭০ বলে ৫৯ রানে ফিরলেন চান্দিমাল। মিরাজ নিলেন দ্বিতীয় উইকেট। ২৮.৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৫ উইকেটে ১২১।

জুটি ভাঙলেন সাকিব

শুরুর বিপর্যয়ের পর একটু একটু করে ইনিংস থিতু করছিলেন দিনেশ চান্দিমাল ও আসেলা গুনারত্নে। চেষ্টা করছিলেন জুটি গড়ার। তবে আস্কিং রান রেট বেড়েই যাচ্ছিল। সেই চাপের বলি হলেন গুনারত্নে।

রিভার্স সুইপ খেলেছিলেন সাকিবকে। কিন্তু বল রাখতে পারেননি নীচে। পয়েন্টে নীচু ক্যাচ নিয়েছেন মোসাদ্দেক। ২৪ রানে ফিরলেন গুনারত্নে। ভাঙল চতুর্থ উইকেটে ৫৬ রানের জুটি।

২৩.১ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে ৮৭। চান্দিমাল খেলছেন ৩৫ রানে।

এসেই তাসকিনের উইকেট

১০ ওভার শেষে প্রথম বোলিং পরিবর্তন। নতুন বোলারের প্রথম ওভারেই সাফল্য। বাংলাদেশের বিপক্ষে বরাবরই সফল উপুল থারাঙ্গাকে বিদায় করে দিলেন তাসকিন আহমেদ।

নিজের প্রান্তে তাসকিনকে আক্রমণে এনেছেন মাশরাফি। ওভারের শেষ বলটি ছিল শর্ট। থারাঙ্গা চেয়েছিলেন পুল করতে। কিন্তু পরাস্ত গতিতে। মিড অনে লঙ্কান অধিনায়ক ধরা পড়লেন বাংলাদেশ অধিনায়কের হাতে।

১৯ রানে ফিরলেন থারাঙ্গা। ১১ ওভারে শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেটে ৩১।

মিরাজের প্রথম

থারাঙ্গার উইকেট পেতে পেতেও হয়নি। তবে প্রথম উইকেটের জন্য অপেক্ষা খুব একটা দীর্ঘ হয়নি মিরাজের। কুসল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে অভিষিক্ত স্পিনার ধরেছেন রঙিন পোশাকে প্রথম শিকার।

মাশরাফি ও মিরাজের দারুণ বোলিংয়ে শুরু থেকেই চাপে শ্রীলঙ্কা। রান গেছে আটকে। উড়িয়ে মেরে ফাঁস আলগা করতে চেয়েছিলেন মেন্ডিস। সীমানায় ক্যাচ নিলেন বদলি ফিল্ডার শুভাগত হোম চৌধুরী।

৪ রানে ফিরলেন মেন্ডিস। ৬ ওভারে শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটে ১৫।

বাঁচলেন থারাঙ্গা

কতবার যে টিভি রিপ্লে দেখলেন তৃতীয় আম্পায়ার, ইয়ত্তা নেই। সময় নিলেন অনেকক্ষণ। শেষ পর্যন্ত এল ঘোষণা, নটআউট। স্টাম্পড হতে হতে বাঁচলেন উপুল থারাঙ্গা।

মেহেদী হাসান মিরাজের বল টার্ন করছে বেশ। সে রকমই একটি টার্নিং বল ধরে চকিতে বেলস উড়িয়ে দেন মুশফিক। বারবার দেখেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিলো না। এক সময় মনে হচ্ছিলো, থারাঙ্গা অন দা লাইন, মানে আউট। শেষ পর্যন্ত পেলেন বেনিফিট অব ডাউট। হয়তো বুটের একটি স্পাইক ছিল লাইনের পেছনে।

৪ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কা ১ উইকেটে ৮।

ব্যর্থ রিভিউ

মাশরাফির প্রথম ওভারে উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে আরেকটি সম্ভাবনা। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ না দেওয়ায় রিভিউ নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে বল চলে যাচ্ছিলো লেগ স্টাম্পের বাইরে। টিকে গেলেন কুসল মেন্ডিস।

ওই ওভারেই মেন্ডিসের ব্যাট ছুঁয়ে বল পড়ল মুশফিকের গ্লাভসের একটু সামনে। আবার বাঁচলেন মেন্ডিস।

মাশরাফির শুরু জোড়া মেডেনে। শ্রীলঙ্কা ৩ ওভারে ১ উইকেটে ৬।

শুরুতেই মাশরাফির ছোবল

চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরলে ছন্দ পেতে অনেকেরই একটু সময় লাগে। মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দেখে কে বলবে? নতুন বল হাতে শুরু করলেন ইনিংস। তৃতীয় বলেই সাফল্য। শিকার দানুশকা গুনাথিলাকা।

মাশরাফির সিম পজিশন ছিল দারুণ। বল লেংথে পড়ে সোজা হয়েছে আরেকটু, এলবিডব্লিউ। রানের খাতা খোলার আগেই শ্রীলঙ্কার নেই এক উইকেট।

বাংলাদেশের ‘প্রথম’ তিনশ

তামিম-সাকিবরা ফিরলেন, মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেক ছিলেন যেন সুযোগের অপেক্ষায়। বিশেষ করে মোসাদ্দেক খেললেন ৯ বলের টর্নেডো ইনিংস। শেষ দিকে রান উঠল বানের জলের মতো। বাংলাদেশ পৌঁছে গেল এমন ঠিকানায়, যেটির দেখা তারা আগে পায়নি কখনোই!

৫০ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৫ উইকেটে ৩২৪ রান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে এই প্রথমবার তিনশ রান করল বাংলাদেশ। আগে কখনও যেতে পারেনি কাছাকাছিও।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ছিল সেই ১১ বছর আগে। ২০০৬ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মোহালিতে ২৬৫। শ্রীলঙ্কার মাটিতে আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১৩ সালে হাম্বানতোতায় ২৫৯।

এই মাঠ তো বটেই, শ্রীলঙ্কার মাটিতেই ২৯০ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি কোনো দল।

অসাধারণ সেঞ্চুরিতে দলকে টেনেছেন তামিম। দারুণ অর্ধশতকে সঙ্গ দিয়েছেন সাব্বির-সাকিব। শেষ দিকে মোসাদ্দেকের ছোট্ট তাণ্ডব। ৯ বলে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন মোসাদ্দেক, ৭ বলে ১৩ রানে মাহমুদউল্লাহ।

শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ১০৯ রান। শেষ ৫ ওভারেই ৬৮!

অবশেষে তামিম

আগের বলটিতেই সম্ভাব্য ক্যাচকে ছক্কা বানিয়েছেন সিরিবর্ধনা। কিন্তু শেষ সময়ে ভাবাভাবির কিছু নেই। শুধু চাই রান। পরে বলে আবার উড়িয়ে মেরে লংঅনে ধরা পড়লেন তামিম ইকবাল। ফিরলেন ১২৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে।

শহিদ আফ্রিদির ১২৪ ছাড়িয়ে এই মাঠের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এখন তামিমের। আফ্রিদির ইনিংসটি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১০ এশিয়া কাপে।

১৫ চার ও ১ ছক্কায় ১৪২ বলে ১২৭। ইনিংসের ১৩ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ২৮৯।

ঝড়ের পর ফিরলেন সাকিব

আগের বলেই অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে উড়িয়েছেন লং অনের ওপর দিয়ে। ম্যাচের যেটি প্রথম ছক্কা। পরের বলেই আবার অফ স্টাম্পের বাইরের বল ওড়াতে গেলেন সাকিব। এবার লাকমল দিলেন স্লোয়ার ডেলিভারি। টাইমিং ঠিক মতো হলো না। ধরা পড়লেন সান্দাকানের হাতে। ৭১ বলে ৭২ রানে ফিরলেন সাকিব। ৪৫.৫ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ২৬৪।

শেষের ঝড়ের অপেক্ষা

মাইলফলক ছোঁয়ার পর দুই ব্যাটসমানই বাড়িয়েছেন রানের গতি। কুমারাকে টানা তিনটি চার মেরেছেন সাকিব।

৪৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ২৫৬। ১০৭ রানে খেলছেন তামিম, ৬৫ রানে সাকিব। অপেক্ষা শেষ ৫ ওভারের ঝড়ের।

সাকিবেরও অর্ধশতক

তামিমের সেঞ্চুরির পরপর সাকিব ছুঁয়ে ফেললেন তার পঞ্চাশ। ৬১ বলে ছুঁলেন ৩৩তম ওয়ানডে অর্ধশতক। বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ২৩৫।

জুটির সেঞ্চুরি, তামিমের সেঞ্চুরি

লাহিরু কুমারার বল লেগ সাইডে ঘুরিয়েই সিঙ্গেল নিলেন তামিম। একটু সময় নিয়ে যেন ফেললেন স্বস্তির নি:শ্বাস। খানিকপর খুললেন হেলমেট, উঁচিয়ে ধরলেন ব্যাট। সেঞ্চুরি!

১২৭ বলে তামিম ছুঁলেন সেঞ্চুরি। টেস্টের মতো ওয়ানডেতেও তামিমের সেঞ্চুরি এখন আটটি।

জুটির সেঞ্চুরি হয়েছে এর আগেই। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, ওয়ানডেতে ২৪ ইনিংস এক সঙ্গে ব্যাট করে সাকিব ও তামিমের প্রথম সেঞ্চুরি জুটি এটিই! এর আগে অর্ধশত জুটি ছিল মাত্র চারটি। সবশেষটি ২০১২ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৬। যেটি ছিল জুটিতে দুজনের সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশের রান ৪৩ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ২৩৪। তামিম খেলছেন ১০১ রানে, সাকিব ৪৯। জুটির রান ১১৪।

তামিম-সাকিব জুটিতেও পঞ্চাশ

জোড়া ধাক্কা বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠেছে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটে। তামিম ও সাকিব এগিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশকে।

সাব্বির ও মুশফিককে দ্রুত হারানোর পর এই জুটির শুরুটা ছিল সাবধানী। তবে রানের গতি খুব একটা কমেনি কখনোই। সময়ের সঙ্গে বেড়েছে গতি। এক ওভারে তিনটি চার মেরেছেন তামিম। সাকিব এগোচ্ছেন এক-দুই করে।

৩৫ ওভার শেষে রান ৩ উইকেটে ১৯১। চতুর্থ উইকেট জুটির রান ৭১। ৮৬ রান নিয়ে খেলছেন তামিম, সাকিব ২২।

তামিমের পঞ্চাশ

টেস্ট সিরিজটি যেখানে শেষ করেছিলেন, ওয়ানডে সিরিজ তামিম শুরু করলেন যেন সেখান থেকেই। টেস্টে ম্যাচ জেতানো ৮২ রানের ইনিংসের পর প্রথম ওয়ানডেতেও অর্ধশতক।

শুরুতে সৌম্য, দারুণ জুটির পর ফিরেছেন সাব্বির ও মুশফিক। কিন্তু এক প্রান্তে টিকে দলের ইনিংসটার হাল ধরে রেখেছেন তামিম। পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৭৫ বলে। ২৫.২ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৩ উইকেটে ১৩৩।

মুশফিক এলেন ও গেলেন

সাব্বিরের বিদায়ের ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই আউট বড় ভরসা মুশফিকুর রহিম। ক্যাচ আউটের সিদ্ধান্তও অবশ্য নিতে হলো তৃতীয় আম্পায়ারকে।

লাকশান সান্দাকানের বলে ড্রাইভ করেছিলেন মুশফিক। ফিরতি বল হাতে জমান এই চায়নাম্যান বোলার। টিভি রিপ্লে দেখে আম্পায়ার নিশ্চিত হন, বল মাটি ছুঁয়ে আসেনি।

মুশফিক ফিরলেন ১ রানেই। বাংলাদেশের রান তখন ২২.১ ওভারে ৩ উইকেটে ১২০।

আবার সেই গুনারত্নে

টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে দারুণ ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন আসেলা গুনরারত্নে। একই কাজ ওয়ানডেতেও। দ্বিতীয় জুটিতে ছুটছিলেন তামিম ও সাব্বির। বল হাতে নিয়ে তৃতীয় বলেই ভাঙলেন জুটি, ফেরালেন সাব্বিরকে।

স্লো মিডিয়াম পেসারের মতো দৌড়ে এসে গুনারত্নে বল ছাড়েন স্পিনারের মতো। ফুল লেংথ বলে ড্রাইভ করেছিলেন সাব্বির। বলে ছিল দারুণ গতি। কিন্তু শর্ট কাভারে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে নীচু হয়ে দুর্দান্ত রিফ্লেক্স ক্যচ নেন অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা।

৫৪ রনে ফিরেন সাব্বির। তামিমের সঙ্গে জুটি ছিল ৯০ রানের। ২১.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ২ উইকেটে ১১৯।

সাব্বিরের পঞ্চাশ

শুরুতে সৌম্যকে হারানোর ধাক্কা যেন বুঝতেই দিলেন না সাব্বির। উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই খেলছেন দারুণ সব শট। তামিমকে ছাড়িয়ে পঞ্চাশও ছুঁয়ে ফেললেন আগেই।

৪৮ বলে সাব্বির করেছেন অর্ধশতক। তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ইনিংসে দ্বিতীয় পঞ্চাশ!

২০ ওভার শেষে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ১১৪। সাব্বিরের সঙ্গে তামিম খেলছেন ৫৯ বলে ৪১ রানে।

পঞ্চাশ ছাড়িয়ে জুটি

শুরুর মেঘ কাটিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসে ঝলমলে রোদ। তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমানের স্ট্রোকের ফোয়ারায় ছুটে চলেছে বাংলাদেশ। দুজনই খেলেছেন দারুণ সব শট। দ্বিতীয় উইকেট জুটির পঞ্চাশ হয়ে গেছে ৪৮ বলেই।

১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৮৯। ৪৫ বলে ৩৪ রানে খেলছেন তামিম, সাব্বির ৩২ বলে ৩৮ রান। দুজনের জুটির রান ৬০।

সাব্বিরের টানা তিন চারে বাংলাদেশের পঞ্চাশ

গত অগাস্টের পর প্রথমবারের মতো দেশের হয়ে ওয়ানডে খেলতে নামা থিসারা পেরেরাকে টানা তিন চার মারেন সাব্বির রহমান। একস্ট্রা কাভার, মিডউইকেট আর পয়েন্টের ফিল্ডারকে ফাঁকি দিয়ে সীমানা খুঁজে নেন টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। সৌম্য সরকারের উইকেট হারিয়ে অষ্টম ওভারে পঞ্চাশ স্পর্শ করে বাংলাদেশের স্কোর।

৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৫০/১।

শুরুতেই সৌম্যর বিদায়

পঞ্চম ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরের বলটির লেংথ বুঝতে পারেননি সৌম্য সরকার। সুরঙ্গা লাকমলের দেরিতে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বল ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পারেননি, ব্যাটের কানায় লাগা ক্যাচ সহজেই গ্লাভসে নেন দিনেশ চান্দিমাল। ১৩ বলে দুটি চারে ১৩ রান করে সৌম্য ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২৯/১।

তামিমের ১০ হাজার রান

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করেছেন তামিম ইকবাল। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৯ হাজার ৯৯৯ রান নিয়ে প্রথম ওয়ানডে শুরু করেন বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ম্যাচের তৃতীয় বলে দুই রান নেওয়ার পথে পৌঁছান পাঁচ অঙ্কের রানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণেই তামিম বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

ফিরলেন মুশফিক, সৌম্য

চোট কাটিয়ে ওয়ানডে দলে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। ছন্দ ফিরে পাওয়া সৌম্য সরকার ফিরেছেন একাদশে।

নিউ জিল্যান্ডে খেলা তৃতীয় ওয়ানডের একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন তিন জন। সৌম্য ফেরায় জায়গা হয়নি ইমরুল কায়েসের। চোট কাটিয়ে মুশফিক ফেরায় একাদশে নেই তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান। লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার তানবীর হায়দার স্কোয়াডেই নেই।

বাংলাদেশ দল: মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ।

টস হেরেও ইচ্ছাপূরণ মাশরাফির

টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা। মাশরাফি বিন মুর্তজা জানিয়েছেন, টস জিতলে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তই নিতেন তিনি। 

মিরাজের অভিষেক

ওয়ানডে অভিষেক হচ্ছে তরুণ অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের।

রনগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মিরাজের মাথায় টুপি পড়িয়ে দেন আরেক অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ। ১৯ বছর বয়সী মিরাজ বাংলাদেশের ১২৩তম ওয়ানডে ক্রিকেটার। 

টেস্ট সিরিজের পর দেশে ফিরেছিলেন মিরাজ। খেলার কথা ছিল ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে। কলম্বোয় প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং দেখে হঠাৎ ডাকা হয় তাকে। এখন পর্যন্ত ৭ টেস্ট খেলা এই তরুণ লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এখনও ততটা সফল নন। ২৭ ম্যাচে ২৯.১৪ গড়ে নিয়েছেন ২৭ উইকেট। সেরা ২/১৯।