কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব মাঠে বুধবার বোর্ড সভাপতি একাদশের দেওয়া ৩৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেটে ৩৫২ রান করে বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচে অতিথিরা হেরেছে ২ রানে।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ইমরুল কায়েস। এর আগে কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রথম বলে ফিরেছিলেন তিনি।
তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে ইমরুলের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধনী করা সৌম্য প্রতিরোধ গড়েন সাব্বিরের সঙ্গে। দুই সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন, গড়েছেন শতরানের জুটি।
দারুণ সব ড্রাইভ উপহার দিয়েছেন সাব্বির। মিডউইকেট দিয়ে পেয়েছেন অনেক বাউন্ডারি। সৌম্যও সাবলীল ছিলেন ড্রাইভে। এগিয়ে এসে ফ্লিক করে হাঁকিয়েছেন ছক্কা। অর্ধশতক পাওয়ার পথেই ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মিলিন্দা সিরিবর্ধনেকে এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে ক্যাচ দেন লংঅনে।
৪৩ বলে ৪৭ রান করা সৌম্যর চমৎকার ইনিংসটি গড়া ৫টি চার ও দুটি ছক্কায়। তার বিদায়ে ভাঙে ১১৬ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। প্রায় একইভাবে ফিরেন সাব্বির। চতুরঙ্গা ডি সিলভাকে এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে লংঅনে ক্যাচ দেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
৬৩ বলে ১১টি চার ও একটি ছক্কায় সাব্বিরের রান ৭২।
মুশফিবুর রহিম খেলছিলেন দারুণ। তরুণ মোসাদ্দেককে নিয়ে জুটিতে এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। রিভার্স সুইপে হাঁকিয়েছিলেন চার। তার সম্ভাবনাময় ইনিংসের ইতি প্রিয় স্লগ সুইপে, স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ২০ রান করে।
পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি গড়েন মোসাদ্দেক। ছন্দে থাকা তরুণ এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান অর্ধশতকে পৌঁছান রিভার্স সুইপে ছক্কা হাঁকিয়ে। এরপর আর নিজের ইনিংস বড় করতে পারেনি। লংঅনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনিও।
শুভাগত হোম চৌধুরী, সানজামুল ইসলাম যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। ২৩৯ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তখন বড় ব্যবধানে হারের শঙ্কায়। সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিতে দেখা গেছে মাশরাফির রুদ্রমূর্তি।
শেষ ২০ ওভারে ১৭০ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের, সেটাকে শেষ ২ ওভারে ১৭ রানে নামিয়ে আনতে অধিনায়ক খেলেন টি-টোয়েন্টি মেজাজের ইনিংস। মাশরাফি শট খেলেছেন উইকেটের চারপাশে। মাঠের পাশের দুই দিকের রাস্তায় দুইবার উড়িয়ে বল ফেলেছেন অধিনায়ক।
মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৯.৪ ওভারে ১০১ রানের জুটিতে জয়ের আশা জাগান মাশরাফি। লাহিরু মদুশঙ্কার বলে লংঅনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৫ বলে ৪টি করে ছক্কা-চারে ৫৮ রান করেন তিনি।
মাশরাফির বিদায়ের পর দারুণ চেষ্টা করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ ২ বলে প্রয়োজন ছিল ৮ রান। আগের বলে চার হাঁকালেও শেষ বলে এক রানের বেশি নিতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ৬৮ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৭১ রানে।
দলকে জেতাতে না পারলেও মাহমুদউল্লাহর ছন্দে ফেরা স্বস্তি হয়েই আসবে দলে। শেষ চার ওয়ানডেতে ১০ রান করা মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও দেখিয়েছেন নিজের সাফল্য।
৬১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে আকিল ধনঞ্জয়া নিয়ে বোর্ড সভাপতি একাদশের সেরা বোলার। চতুরঙ্গা ২ উইকেট নেন ৫৩ রানে।
আগামী শনিবার ডাম্বুলায় হবে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বোর্ড সভাপতি একাদশ: ৫০ ওভারে ৩৫৪/৭
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩৫২/৮ (ইমরুল ০, সৌম্য ৪৭, সাব্বির ৭২, মুশফিক ২০, মোসাদ্দেক ৫৩, মাহমুদউল্লাহ ৭১*, শুভাগত ২, সানজামুল ৫, মাশরাফি ৫৮*, সাইফুদ্দিন ২*, ফার্নান্দো ১/৪৬, মদুশঙ্কা ১/৩৯, শানাকা ০/২৪, থিসারা ০/৬৮, আকিলা ৩/৬১, সিরিবর্ধনে ১/৫৯, চতুরঙ্গা ২/৫৩)
ফল: বোর্ড সভাপতি একাদশ ২ রানে জয়ী