ব্যাটিংয়ে নিজেকে আরও মেলে ধরতে প্রস্তুত মুশফিক

সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিম হয়তো ততটা হাসিখুশি থাকেন না। কিন্তু ম্যাচের আগে কথা বলতে এসে তাকে অতটা বিমর্ষও কখনও দেখায়নি। কারণটাও স্পষ্ট, ১০ বছর পরে থাকা কিপিং গ্লাভস জোড়া ফিরিয়ে নেওয়া হল। সেই হতাশাকে পেছনে ফেলে, ব্যাটিংয়ে নিজেকে আরো মেলে ধরার প্রত্যয় জানালেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।

ক্রীড়া প্রতিবেদক গল থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2017, 10:21 AM
Updated : 6 March 2017, 04:02 PM

২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরেই টেস্টে দলের কিপিং গ্লাভস নিজের করে নিয়েছিলেন মুশফিক। সেই দেশেই এবার ফিরে হারাতে হল উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব। গল টেস্টের আগে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে এগোতে চান তিনি।

“সিদ্ধান্তটা এসেছে টিম ম্যানেজমেন্টের দিক থেকে। কখনও এই সিদ্ধান্তগুলো আপনার জন্য ভালো হবে কখনও হবে না। আমাকে এটা মেনে নিতে হবে। কারণ, টিম ম্যানেজমেন্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের জন্য এই কাজ করতে পেরেও আমি খুশি। দলের জন্য আরও বেশি অবদান রাখার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। আশা করি, অতীতের চেয়ে আরও অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারবো। ভাবনায় এখন কেবল এটাই আছে।”

Embed_
 

টেস্টে লম্বা সময় কিপিং করায় ওপরের দিকে ব্যাটিং করতে পারেননি। দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানকে খেলতে হয় ছয় নম্বরে। অনেকেরই ধারণা কিপিংয়ের জন্য ব্যাটিংয়ে সেভাবে এখনও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। তবে অধিনায়ক নিজে মনে করেন, উইকেটের পেছনে থাকলেই বরং তার ব্যাটিং ভালো হয়!

“এত গরমে আপনি ফিল্ডিং বা কিপিং যাই করেন না কেন এটা খুব কঠিন কাজ। আমি বারবার বলে এসেছি কিপিং সব সময় আমাকে সহায়তা করত। আমি উইকেটের পিছন থেকে বুঝতে পারতাম যে, উইকেটে কি আচরণ হচ্ছে। এটা আমার ব্যাটিংয়ে অনেক সহায়তা করতো। এবার একটু ভিন্ন অনুভূতি হবে অবশ্যই।”

মুশফিকের চার নম্বরে ব্যাটিং করা প্রায় নিশ্চিত। ঠিক কত নম্বরে নামবেন বলতে চাননি অধিনায়ক। কিপিংয়ের চাপ কমেছে কিন্তু তার জন্য ব্যাটিংয়ে আরও ভালো করার চাপ যোগ হয়েছে তার ওপর।

“টেস্ট ক্রিকেটে টপঅর্ডার বা মিডলঅর্ডারে খেললে আপনাকে অবশ্যই বড় ইনিংস খেলতে হবে। এটা করলে যে কোনো দলের জন্য খুব সহায়ক হয়। আমাদের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়।”

“হতে পারে ওপরে ব্যাট করবো। আপনি যখন উইকেটরক্ষক নন আর বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন তখন আপনাকে অন্তত ৫ নম্বরে ব্যাট করতে হবে। আশা করি, আমি ওপরে ব্যাট করবো আর ভালো করব। দলের যা প্রয়োজন সেটা দিতে পারবো। কারণ, যারা ব্যাটসম্যান আছে তাদের দায়িত্ব দলের জন্য বেশি বেশি রান করা।”

সেই বয়স ভিত্তিক পর্যায় থেকে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে আসা মুশফিক জাতীয় দলে প্রথম সুযোগ পেয়েছিলেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে। ২০০৫ ও ২০০৬ সালে দুটি টেস্ট খেলেছেন শুধুই ব্যাটসম্যান হিসেবে। পরের বছর শ্রীলঙ্কা সফর থেকে তার উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো শুরু। ১০ বছর পর সেই বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় ফিরে যাওয়ার সময় কিপিং প্যাড-গ্লাভসের মায়া কাটছে না তার।

“এখন কিপিং প্যাড-গ্লাভস ছাড়া থাকতে হচ্ছে। অবশ্যই এবার ভিন্ন অনুভূতি হবে। কিন্তু দলের জন্য যা করা দরকার তা করব। কিপিং, ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং যেটাই করি না কেন অবশ্যই আমাকে অবদান রাখতে হবে। ভালো করতে হবে।”

সর্বশেষ ২০১৫ সালে চোটের কারণে তিনটি টেস্ট বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছিলেন মুশফিক। সে সময় কিপিংয়ের দায়িত্ব পালন করা লিটন দাসকে গলে দেখা যাবে তার জায়গায়।