নিউ জিল্যান্ডকে উড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরু

আগের ৩৬ ঘণ্টায় তুমুল বৃষ্টি হয়েছে অকল্যান্ডে। ম্যাচটি নিয়েই ছিল শঙ্কা। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি থামলেও উঠল ঝড়। ব্যাট-বলের সেই ‘প্রোটিয়া ঝড়ে’ উড়েই গেল নিউ জিল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2017, 10:12 AM
Updated : 17 Feb 2017, 10:12 AM

হাশিম আমলার শিল্পিত সৌন্দর্য্যে শুরু। ইমরান তাহিরের গুগলিতে শেষ। মাঝে সময়টা জুড়েও প্রোটিয়া দাপট। সফরের একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকদের ৭৮ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা প্রোটিয়ারা শুরুতেই হারায় কুইন্টন ডি কককে। আমলা ও ফাফ দু প্লেসির ব্যাটে তবু রানের চাকা ঘুরেছে তুমুল গতিতে। ব্যাটিং উইকেট আর ছোট্ট মাঠে রান এসেছে বানের জলের মতো।

বেন হুইলারকে টানা দুটি চারে শুরু করা আমলা এই বাঁহাতি পেসারের পরের ওভারে মেরেছেন টানা চারটি চার। দু প্লেসির প্রথম ছক্কায় বল পেরিয়েছিল স্রেফ ৫১ মিটার। এতটাই ছোট সীমানা। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজনের জুটিতে এসেছে ৫১ বলে ৮৭ রান।

৪৩ বলে ৬২ করে সেই হুইলারের বলেই ফিরেছেন আমলা। ২৫ বলে ৩৬ করে অধিনায়ক দু প্লেসি ফিরেছেন আগেই। ৩৩তম জন্মদিনে ঝড় তোলার ইঙ্গিত ছিল এবি ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটে। তবে আউট হয়ে গেছেন ১৭ বলে ২৬ করে।

মাঝে রানের গতিতে খানিকটা লাগাম দিতে পেরেছিল কিউই বোলাররা। শেষ দিকে জেপি দুমিনির সৌজন্যে তবু ১৮৫ তুলে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৬ বলে ২৯ করে শেষ ওভারে ফেরেন দুমিনি।

এই রান উৎসবেও অসাধারণ বোলিং করে ৪ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট।

প্রথম ইনিংস শেষে এই রানও খুব নিরাপদ মনে হয়নি। কিন্তু প্রোটিয়া বোলাররা এটিকে প্রমাণ করে ছাড়লেন যথেষ্টরও বেশি। ক্রিস মরিসের অসাধারণ প্রথম স্পেলই বেধে দিল সুর। তাহিরের ৫ উইকেট কিউইদের দিল গুঁড়িয়ে।

কিউই ‘ভবিষ্যত ম্যাককালাম’ বলে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া গ্লেন ফিলিপস প্রথম ম্যাচে রাখতে পারেননি সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত। ২০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর পরের বলেই কলিন মানরোকে ফেরান মরিস।

তরুণ পেসার আন্দিলে ফেলুকওয়েয়ো তুলে নেন কেন উইলিয়ামসন ও কোরি অ্যান্ডারসনকে। ম্যাচের ভাগ্য পরিষ্কার হয়ে যায় তখনই। স্রোতের বিপরীতে শুধু একটু ব্যাট চালিয়েছেন টম ব্রুস।

২৭ বলে ৩৩ করা ব্রুসকে দিয়েই শিকার শুরু করেন তাহির। রঙিন পোশাকের এক নম্বর বোলার এরপর ছেটে দিয়েছেন কিউইদের লোয়ার-মিডল অর্ডার ও লেজ। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের দুই ছক্কা আর শেষ দিকে টিম সাউদির ৩ ছক্কায় ২০ রানে কোনো রকমে তিন অঙ্ক ছুঁতে পারে নিউ জিল্যান্ড।

২৪ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাহির। টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ার সেরা। দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় সেরা।

এই ইডেন পার্কেই দুদলের সবশেষ ম্যাচটি এখনও যন্ত্রণা দেয় প্রোটিয়াদের। ২০১৫ বিশ্বকাপ সেমি-ফাইনালে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে গ্র্যান্ট এলিয়টের ছক্কায় জিতেছিল নিউ জিল্যান্ড। এবার অকল্যান্ডে পা রেখে অধিনায়ক দু প্লেসি বলেছিলেন, সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে দল।

বিশ্বকাপের সঙ্গে একটি সাধারণ টি-টোয়েন্টির তুলনাই হয় না। সেই স্মৃতির ক্ষতে প্রলেপও তাই পড়বে না একটুও। তবে সেই একই মাঠে নিঁখুত পারফরম্যান্সে সফর শুরু করার স্বস্তি অন্তত থাকবে দু প্লেসিদের!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৮৫/৬ (আমলা ৬২, ডি কক ০, দু প্লেসি ৩৬, ডি ভিলিয়ার্স ২৬, দুমিনি ২৯, বেহারদিন ৮, মরিস ৯*, পার্নেল ৪*; বোল্ট ২/৮, হুইলার ১/৪৯, সাউদি ০/৪৭, স্যান্টনার ০/৪০, ডি গ্র্যান্ডহোম ২/২২, মানরো ০/১১)

নিউ জিল্যান্ড: ১৪.৫ ওভারে ১০৭ (ফিলিপস ৫, উইলিয়ামসন ১৩, মানরো ০, ব্রুস ৩৩, অ্যান্ডারসন ৬, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৫, রনকি ০, স্যান্টনার ৫, হুইলার ৬, সাউদি ২০, বোল্ট ১*; মরিস ২/১০, প্যাটারসন ০/১৩, পার্নেল ০/৪০, ফেলুকওয়েয়ো ৩/১৯, তাহির ৫/২৪)।

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৭৮ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ইমরান তাহির