বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের তিন ম্যাচের দুটিতে থিতু হয়েছেন, দুবারই পৌঁছেছেন তিন অঙ্কে। ১৮৫ ও ১০০ রানের ইনিংসগুলোতে দেখিয়েছেন দৃঢ়তা, অসামান্য মনসংযোগ।
২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের সর্বশেষ সিরিজে ঢাকা টেস্টে পেয়েছিলেন শতক। চোটের জন্য পরের বছরের মার্চে যেতে পারেননি শ্রীলঙ্কায়। এরপর ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন কিন্তু টেস্টে আর ফেরা হয়নি নাঈমের।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৯ অর্ধশতক আর ১৯ শতকের অধিকারী নাঈম এখনও স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলে ফেরার।
“অবশ্যই, প্রত্যেক খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে খেলার বা বাদ পড়লে আবার ফিরে আসার। মনের গহীনে সবারই এটা থাকে। কিন্তু আমি যদি আমার লক্ষ্য ঠিক করে নিই যে, এই টুর্নামেন্ট থেকেই ফিরে আসবো, তাহলে শুধু শুধু নিজের উপর একটা বাড়তি চাপ তৈরি করা হবে। তাই আমি চাই না নিজের উপর কোনো চাপ তৈরি করতে। এখন পর্যন্ত আমি যেভাবে খেলছি, ভালো যাচ্ছে। এভাবেই খেলাটা চালিয়ে যেতে চাই।”
প্রায় চার বছর ধরে টেস্ট দলের বাইরে থাকা নাঈম দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রান করছেন নিয়মিতই। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৩টি শতকসহ ৫৭.৬২ গড়ে করেন ৯২২ রান। গত মৌসুমে একটি শতকসহ ৩৫.১৬ গড়ে ৬৩৩ রান।
মাঝে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে চার ইনিংসে মোটে ২৭ রান করা নাঈম চলতি মৌসুমেও পেয়েছেন দুটি শতক।
“দলের বাইরে থাকা নিয়ে হতাশার কিছু নেই। বাংলাদেশ দলে অনেকদিন ধরে একটা দল খেলছে। মোটামুটি ১৫/২০ জন খেলোয়াড় খেলছে। তাই হুট করে একটা ছেলে খারাপ করলেই তাকে বাদ দিয়ে দিবে ব্যাপারটা এরকমও না। হুট করে একজন ভালো করলেই তাকে দলে নিয়ে নিবে ব্যাপারটা তাও না। কেউ যদি অসাধারণ পারফরম্যান্স করে সেক্ষেত্রে হয়তো তার জন্য একটা সুযোগ থাকবে।”
“আমি যদি অসাধারণ কোনো পারফরম্যান্স করি তাহলে হয়তো নির্বাচকরা আমাকে নিতে বাধ্য হবে। এখানে আমার ঘাটতি যে, আমি ওই রকম কোনো পারফরম্যান্স করতে পারিনি। যে কারণে তাদেরকে বাধ্য করতে পারিনি আমাকে নেওয়ার জন্য।”
“আমি চাই যারা ভালো পারফর্ম করবে তারাই সুযোগ পাক। যদি এমন হয় যে, আমি ভালো পারফরমারদের মধ্যে একজন, তাহলে সুযোগ পেতেই পারি।”
বয়স মাত্র ৩০, ব্যাটসম্যান হিসেবে সামনে এখনও লম্বা ক্যারিয়ার পড়ে আছে। জাতীয় দল নিয়ে না ভেবে নাঈম এখন শুধু মাঠের সময়টা উপভোগ করে যেতে চান।
“আমি যখন মাঠে খেলছি, রান করতে পারছি, এটাই হচ্ছে আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণা। রান করে যখন ফিরি, এটার যে একটা আত্মতৃপ্তি আছে, এটা কোনো জায়গায় পাওয়া যায় না।”
বিসিএলে সব ম্যাচেই বড় ইনিংস গড়ার লক্ষ্য থাকে মধ্যাঞ্চলের। সেখানে ব্যাট হাতে নাঈমের থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১১১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ঋদ্ধ এই ব্যাটসম্যান নীরবে করে চলেছেন নিজের কাজ।