অপেক্ষায় শঙ্কা আর সম্ভাবনার শেষ দিন

অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে বেশ খানিকটা ভেতরে ঢুকল বল। সাকিব আল হাসান ছেড়ে দিয়েছিলেন। অল্পের জন্য বল স্পর্শ করল না অফ স্টাম্প। দারুণ লেগ ব্রেক। তবে বোলারের নামটি চমকে দেবে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন!

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিহায়দরাবাদ থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2017, 01:00 PM
Updated : 12 Feb 2017, 03:53 PM

দিনের শেষ বলটি যেন শেষ বিকেলের প্রতীকী, শেষ দিনের ইঙ্গিতও। অফ স্পিনারের লেগ স্পিনই যদি এতটা ভয়ঙ্কর হয়, আসল বলগুলি কেমন হবে! শেষ ঘণ্টায় সেটার ‘ট্রেইলারও’ মোটামুটি দেখা গেছে। টেস্টের আগের পুরোটা সময় উইকেট নিষ্প্রাণ থাকলেও চতুর্থ দিন বিকেল থেকেই করছে গ্রিপ, মিলছে টার্ন। অশ্বিন-জাদেজা হয়ে উঠছেন হুমকি।

শেষ দিনে সেই হুমকি সামলানোর চ্যালেঞ্জ। তবে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের মাথা আবারও ভেঙে গেছে শুরুতেই। ঝরে গেছে টপ অর্ডারের তিন উইকেট। জিততে চাই আরও ৩৫৬ রান। তবে সেই এভারেস্ট চূড়ায় তাকানোর দুঃসাহস বুঝি আর নেই। বরং বেস ক্যাম্পের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছতে চাই ৯০ ওভার টিকে থাকা। সম্বল ৭ উইকেট।

দিনের শুরু ছিল স্বপ্ন নিয়ে। কিন্ত প্রথম ওভারেই এসেছে ধাক্কা। এরপর মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ সেঞ্চুরিতেও ভারতের বড় লিড। ফলো অন না করানো। এক সেশনেই দেড়শ রান তুলে ছেড়ে দেওয়া। তামিমের আরেকটি ব্যর্থতা। আবারও থিতু হয়ে সৌম্য ও মুমিনুলের বিদায়। বল ঘোরা শুরু। অশ্বিনের ছন্দ পাওয়া। স্বপ্ন দিয়ে শুরু দিনের শেষটা তাই শঙ্কায়।

প্রথম ইনিংসে নিজের ছায়া হয়ে থাকা অশ্বিনকে এবার নতুন বল দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ বোলার দেখা গেল শুরু থেকেই ছন্দে। প্রথম আঘাতটাও তার। নিউ জিল্যান্ডের পর তামিমের ভারত সফরও শেষ হলো হতাশায়।

সৌম্য ও মুমিনুল চেষ্টা করেছেন লড়াইয়ের। বেশ কবারই বেঁচে গেছেন অল্পতে। এর ফাঁকে খেলেছেন দারুণ সব শটও। জুটি জমে যাওয়ার পরই ছন্দপতন। সৌম্যকে ডিফেন্সে সামনে টেনে আনলেন জাদেজা। ব্যাটের মুখ খোলা রেখে ডিফেন্স করে বাঁহাতি ওপেনার ক্যাচ দিলেন স্লিপে। ৪২ রানের ইনিংসটি হতে পারত আরও অনেক বড়!

যেমন বড় হতে পারত মুমিনুলের ২৭ রানে ইনিংস। শুরুর সমটা কাটিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাঙ্গেল বদলে অশ্বিন ওভার দা উইকেট আসতেই কাটা পড়লেন খুব বেশি সামনে না গিয়ে। বলটিও ছিল দারুণ।

সাকিব অবশ্য কথা রেখেছেন। খেলার ধরন বদলানোর বিন্দুমাত্র ছাপ ছিল না ব্যাটিংয়ে। যতক্ষণ ছিলেন, চালিয়ে খেলেছেন। শেষ দিনেও ভিন্ন কিছুর আশা করা বৃথা।

মাহমুদউল্লাহ টিকে গেছেন। এই ইনিংস শুধু ম্যাচ বাঁচানোর নয়, হতে পারে তার দলে জায়গা টিকিয়ে রাখার লড়াইও। একটি বড় ইনিংস না এলে নামতে পারে খড়গ।

শঙ্কার পিঠেই থকে সম্ভাবনা। সাকিব বিপজ্জনক পথেই হাঁটবেন। বাংলাদেশ কেবল প্রার্থনা করতে পারে, দিনটি হোক সাকিবের। জায়গা হারানোর দ্বারপ্রান্তে থাকা মাহমুদউল্লাহ হয়ে উঠুন ম্যাচ বাঁচানোর নায়ক!

শেষ দিনের বাস্তবতায় এসব আশার বিপরীতে আশাই কেবল ভরসা!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: ৬৮৭/৬ (ইনিংস ঘোষণা)

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৮৮

ভারত ২য় ইনিংস: ২৯ ওভারে ১৫৯/৪ (ইনিংস ঘোষণা)

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ৩৫ ওভারে ১০৩/৩ (লক্ষ্য ৪৫৯) (তামিম ৩, সৌম্য ৪২, মুমিনুল ২৭, মাহমুদউল্লাহ ৯*, সাকিব ২১*; ভুবনেশ্বর ০/১৪, অশ্বিন ২/৩৪, ইশান্ত ০/১৯, উমেশ ০/৯, জাদেজা ১/২৭)।