সেই ভারতেই ওয়ালশের ভিন্ন চ্যালেঞ্জ

ড্রেসিং রুমের সামনেই মাঠে দাঁড়ানো কোর্টনি ওয়ালশ। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে শফিউল ইসলাম, আবু জায়েদ ও শুভাশীষ রায়। প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের তিন পেসার বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনলেন ওয়ালশের কথা। তার পর মাঠে গিয়ে অকাতরে বিলিয়ে দিলেন; নিজেদের নয়, বিলিয়ে দিলেন রান। তাতে শুভাশীষ ছিলেন দারুণ, বাকি দুজনই নিদারুণ!

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিসিকান্দারাবাদ থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2017, 03:47 PM
Updated : 6 Feb 2017, 03:57 PM

ওয়ালশ হয়ত আরও একবার বুঝতে পারলেন, বোলিং কোচের কাজটি কতটা যন্ত্রণার! এই ভূমিকায় শুধু নিজের কথা বলা যায়, করে দেখানোর উপায় তো নেই। সেটি অন্যের হাতে!  

মারের চোটে যখন চোখে শর্ষে ফুল দেখছিলেন শফিউলরা, ওয়ালশের চোখে নিশ্চয়ই ভাসছিল নিজের অতীতের ছবি! হয়ত নিশপিশ করছিল হাত। পারলে নেমে গিয়ে ঝরাবেন আগুন!

এই ৫৪ বছর বয়সে সেটি আর সম্ভব নয়। তবে এক সময় ঠিকই পারতেন, পেরেছেন। ভারতের মরা উইকেটেও প্রাণের সঞ্চার করেছেন। পেসারদের জন্য বেশিরভাগ সময়ই দুঃস্বপ্ন ভারতের উইকেট। অথচ এখানেই ওয়ালশ ছিলেন ব্যাটসম্যানদের দুঃস্বপ্ন! ভারতে ৭ টেস্ট খেলে উইকেট ৪৩টি। ভারতের মাটিতে তার বোলিং গড় ও স্ট্রাইক রেট নিজের ক্যারিয়ার গড় ও স্ট্রাইক রেটের চেয়ে ঢের ভালো। ভারতে ৩০টির বেশি উইকেট নেওয়া পেসারদের মধ্যে ওয়ালশের গড় (১৮.৫৫) ও স্ট্রাইক রেট (৩৮.৭) পেসারদের মধ্যে ইতিহাসের সেরা।

ওয়ালশ জানেন, ভারতে কিভাবে বোলিং করতে হয়। তবে এখন তো আর সবকিছু নিজের হাতে নেই। শিষ্যদের শেখাতে পারেন। তারা সেসব ২২ গজে করতে না পারলে কিছুই করার নেই! যেমনটি হলো প্রস্ততি ম্যাচে।

তবে হতাশা তো আর প্রকাশ্যে জানাতে পারেন না। বাংলাদেশের পেসারদের আগলেই রাখলেন অভিভাবক হয়ে। জানালেন ভারতে পেসারদের কাজ কতটা কঠিন।

“তরুণ ফাস্ট বোলারদের জন্য কাজটি খুবই কঠিন। উইকেট যে রকম পাব আমরা, সেভাবেই মানিয়ে নিতে হবে। ওদের জন্য এটি হবে খুবই ভালো অভিজ্ঞতা।”

ওয়ালশের মতে, এই অভিজ্ঞতার অভাবটাই আপাতত বাংলাদেশের পেসারদের সবচেয়ে বড় ঘাটতির জায়গা। নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশের পেসারদের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ। বোলিং কোচের বিশ্বাস, সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে এখানেও।

“নিউ জিল্যান্ডে ওরা দারুণ ছিল। কাজ এগিয়ে চলছে। এটাও ভিন্ন একটা চ্যালেঞ্জ। ওখানে যে অভিজ্ঞতা ওরা অর্জন করেছে, সেটা এখানেও সাহায্য করবে। একটা বড় সমস্যা হলো অনভিজ্ঞতা। ওরা খুব বেশি টেস্ট খেলেনি। যত খেলবে, তত শিখবে।”

ওয়ালশ নিজেও জ্বলে উঠেছেন ক্যারিয়ারের পরের ধাপে। প্রথম ৬৩ টেস্টে ৫ উইকেট ছিল ৫ বার। পরের ৬৯ টেস্টে নিয়েছেন ১৭ বার!

ওয়ালশের শিষ্যদের জন্য অবশ্য এই সংখ্যাগুলোই স্বপ্নের মত। ওসব অনেক দূরের পথও। আপাতত সামনেই হায়দরাবাদ টেস্ট। ওয়ালশের কিছু টোটকা যদি কাজে লাগানো যায়, নিশ্চিতভাবেই অবদান রাখতে পারবেন পেসাররাও। নইলে সেই পুরোনো তৃপ্তি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে হবে - অভিজ্ঞতা অর্জন!