সাকলাইনকে ছাড়িয়ে রেকর্ড সানজামুলের

বুক চিতিয়ে লড়লেন নুরুল হাসান। পেলেন দারুণ শতক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিরতে হল একরাশ হতাশা নিয়ে। তার অসাধারণ লড়াইয়ের পরও ইনিংস ও ৫০ রানে হেরেছে মধ্যাঞ্চল। দ্বিতীয় ইনিংসে রেকর্ড ৯ উইকেট নিয়ে একাই প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিয়েছেন উত্তরাঞ্চলের সানজামুল ইসলাম।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2017, 12:11 PM
Updated : 7 Feb 2017, 04:00 AM

দ্বিতীয় ইনিংসে সানজামুল ৮০ রানে নেন ৯ উইকেট। আব্দুল মজিদের উইকেটটি কেবল পাননি তিনি, মধ্যাঞ্চলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রান আউট হন। দারুণ বোলিংয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন বাঁহাতি এই স্পিনার।

২০১৪/১৫ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৮২ রানে ৯ উইকেট নিয়ে এই রেকর্ড ছিল সাকলাইন সজীবের অধিকারে।   

স্কোর কার্ডের ভুলে শুরুতে বোঝা যায়নি রেকর্ড গড়েছেন সানজামুল। আরেক বাঁহাতি স্পিনার সোহরাওয়ার্দী শুভর দুই ওভার তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাওয়ায় তার বোলিং ফিগার ছিল ৯/৮৫। পরে স্কোর কার্ড সংশোধন হলে জানা যায়, এখন তিনিই সেরা।

এক দিনে ১৭ উইকেট হারানো হারানো মধ্যাঞ্চল ম্যাচ নিতে পারেনি চতুর্থ দিনে। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটি দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ২১৯ রানে রানে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সোমবার প্রথম ইনিংসের ৩ উইকেটে ১২০ রান নিয়ে খেলা শুরু করে মধ্যাঞ্চল। কোনো রান যোগ না করেই ফিরে যান তাইবুর রহমান। সাইফ হাসান ও নুরুল হাসান দলকে ৪ উইকেটে ১৯৭ রানে নিয়ে যান। এরপরই মধ্যঞ্চলকে এলোমেলো করে দেন ফরহাদ রেজা ও সানজামুল।

দুই বোলার ৪৪ রানের মধ্যে তুলে নেন মধ্যাঞ্চলের শেষ ৬ উইকেট। মাত্র ৭ রানের জন্য শতক পাননি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান সাইফ। ১৬৪ বলে খেলা তার ৯৩ রানের ইনিংসটি গড়া ১১টি চার ও দুটি ছক্কায়। নুরুল ফিরেন ৩৭ রান করে।

৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে প্রথম ইনিংসে উত্তরাঞ্চলের সেরা বোলার রেজা। ৬৪ রানে ৩ উইকেট নেন সানজামুল।

ফলোঅনে পরে দ্বিতীয় ইনিংসে সানজামুলের স্পিন খেলতেই পারেনি ব্যাটসম্যানরা। ২৯ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানের বিদায়ে ভীষণ বিপদে পড়ে মধ্যাঞ্চল। নুরুলের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটিতে খানিকটা প্রতিরোধ গড়ে ফিরেন মার্শাল আইয়ুব। এরপর দ্রুত বিদায় নেন শুভাগত হোম চৌধুরী ও তানবীর হায়দার। শেষ তিন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে লড়াই করে দলের সংগ্রহ দুইশ’ পার করেন নুরুল।

এগারো নম্বর ব্যাটসম্যান দেওয়ান সাব্বির ক্রিজে আসার পর তরুণ এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান চার হাঁকিয়ে পৌঁছান শতকে। তাকে ফিরিয়েই মোশাররফ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক (দুবার) ও সাকলাইনে পর বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ইনিংসে ৯ উইকেট নেন সানজামুল।

ম্যাচে মোট ১২ উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন সানজামুলই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৫০২

মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৬১.১ ওভারে ২৩৩ (শামসুর ১১, মজিদ ৯, সাইফ ৯৩, মার্শাল ২৭, তাইবুর ১৬, নুরুল ৩৭, শুভাগত ১, তানবীর ০, শাহাদাত ২৬, শহিদুল ৫, সাব্বির ৩*; রেজা ৪/৩৮, আরাফাত ২/৪৮, আরিফুল ০/১৮, সানজামুল ৩/৬৪, শুভ ০/৬৩)

মধ্যাঞ্চল ২য় ইনিংস: ৫৭.৪ ওভারে ২১৯ (শামসুর ১, মজিদ ৪, সাইফ ৯, তাইবুর ৪, মার্শাল ৩২, নুরুল ১১৩, শুভাগত ৬, তানবীর ১, শাহাদাত ১৫, শহিদুল ১৮, সাব্বির ১০*; আরাফাত ০/৩৬, সানজামুল ৯/৮০, রেজা ০/১৮, শুভ ০/৫৭, আরিফুল ০/১৯)।

ফল: বিসিবি উত্তরাঞ্চল ইনিংস ও ৫০ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সানজামুল ইসলাম