তিন সেঞ্চুরিয়ানে তুলোধুনো বাংলাদেশ

২০০১ সালে ক্রিকেট অভিধানে নতুন এক ধরনের আউট যোগ হয়েছিল বাংলাদেশের সৌজন্যে। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির পর স্বেচ্ছায় বেরিয়ে গিয়েছিলেন মারভান আতাপাত্তু, দেড়শ করে মাহেলা জয়াবর্ধনে। টেস্ট ইতিহাসে ‘রিটায়ার্ড আউট’ এখনও এই দুটিই। এত বছর পর বাংলাদেশকে আবারও সেই বিব্রতকর স্বাদ উপহার দিলেন দুজন। এবার প্রস্তুতি ম্যাচে ভারত ‘এ’ দলের দুই উঠতি ব্যাটসম্যান!

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিসিকান্দারাবাদ থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2017, 10:33 AM
Updated : 6 Feb 2017, 02:07 PM

স্বেচ্ছা অবসরে আগে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন শ্রেয়াস আইয়ার। আরেক সেঞ্চুরিয়ান প্রিয়াঙ্ক কিরিত পাঞ্চালকে দেখেও মনে হলো বাংলাদেশের বোলিং খেলার চেয়ে আরামের কিছু আর নেই। আটে নেমে বিজয় শঙ্কর সেঞ্চুরি করলেন ওয়ানডের গতিতে। উইকেট যা কিছু পড়ল, সেটি রান বাড়ানোর তাড়া আর ঝড় তোলার চেষ্টায়।

৯০ ওভারে ৬ উইকেটে ৪৬১ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে ভারত ‘এ’ দল। তিন সেঞ্চুরিয়ানের কাউকেই আউট করতে পারেনি বোলাররা। আগের দিন বাংলাদেশ ইনিংস ছেড়েছিল ৮ উইকেটে ২২৪ রানে।

একমাত্র শুভাশীষ রায়ই বল হাতে যা একটু করতে পারলেন। বাকি কেউ যেন বল ফেলার জায়গাই পাচ্ছিলেন না। ওভারপ্রতি পাঁচের বেশি রান তুলেছে ভারত ‘এ’। আগের দিন উইকেটে দারুণ বাউন্স পেয়েছিলেন ভারতীয় পেসাররা। এদিন সেই বাউন্স উধাও। উইকেট নিশ্চয়ই রাতারাতি ঘুমিয়ে পড়েনি। দায়টা নিতে হবে বাংলাদেশের পেসারদেরও। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের স্পিনও ছিল একদমই নির্বিষ।

পাঞ্চাল ও শ্রেয়াস দিনের শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের জুটি ১৫৯ রানের। এক ডজন চার ও চারটি ছক্কায় ৯২ বলে সেঞ্চুরি করে উইকেট ছেড়ে যান ২২ বছর বয়সী শ্রেয়াস। পরে ১৪৮ বলে ১০৩ করে স্বেচ্ছায় মাঠ ছাড়েন ওপেনার পাঞ্চাল। প্রথম সেশনেই ৩০ ওভারে ১৫২ রান তোলে ভারত।

এবার রঞ্জিতে দুর্দান্ত ব্যাট করা ইশাঙ্ক জাজ্ঞিকে দারুণ এক ফিরতি ক্যাচে ফিরিয়েছেন শুভাশীষ। রঞ্জিতেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ের অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতায় ব্যাট করা রিশাভ পান্ত ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে তার অধিনায়ক ইশান কিশান আউট হয়েছেন ঝড় তোলার চেষ্টাতেই।

দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ২০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়েছিল ভারত ‘এ’। কিন্তু এরপরই বিজয় শঙ্কর ও নিতিন সাইনি তুলোধুনো করেছেন বাংলাদেশের বোলিং।

তামিলনাড়ুর অলরাউন্ডার বিজয় শঙ্কর তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ৮১ বলে। ৯৩ থেকে ছক্কায় বল পাঠালেন মাঠের সীমানা ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা গাছের সারির ওপর দিয়ে আরও দূরে! এবার রঞ্জির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার সাইনি করেছেন ৮৫ বলে ৬৬।

বাংলাদেশের বোলিং ছিল যাচ্ছেতাই, শরীরী ভাষা আরও বাজে। যথারীতি এদিনও ক্যাচ পড়েছে গোটা তিনেক। মাঠে ছুটোছুটিতে ফিল্ডারদের ছিল অনীহা। পাস নম্বর দেওয়া যায় শুধু একজনকেই। প্রচণ্ড গরমে সতীর্থদের সমর্থন না পেয়েও প্রতিটি স্পেলেই নিজেকে উজার করে বোলিং করেছেন শুভাশীষ।

মূল দুই পেসার ও সাকিব মিলিয়ে দলের সেরা তিন বোলার খেলেননি এই ম্যাচে। তার পরও বাকিদের যা বোলিং ও শরীরী ভাষা, টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচটি জানিয়ে রাখল অশনি সংকেত!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২২৪/৮ (ইনিংস ঘোষণা)

ভারত ‘এ’ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৪৬১/৮ (ইনিংস ঘোষণা) (আগের দিন ৯১/১) (পাঞ্চাল ১০৩ রিটায়ার্ড আউট, মুকুন্দ ১৬, শ্রেয়াস ১০০ রিটায়ার্ড আউট, জাজ্ঞি ২৩, পান্ত ১৯, কিশান ১১, পান্ডিয়া ৭, শঙ্কর ১০৩*, সাইনি ৬৬, জয়ন্ত ৬*; শফিউল ০/৫০, আবু জায়েদ ০/৭২, শুভাশীষ ৩/৫৭, মিরাজ ০/৯২, তাইজুল ৩/১৪১, সৌম্য ০/১৩, মাহমুদউল্লাহ ০/২৪, মুমিনুল ০/৭)।