তবে এদিনের বাস্তবতা পুরোপুরি একতরফা ছিল না! সাকিবের আউটের ধরণ, সময় ও পরিস্থিতি এতটাই প্রশ্নবিদ্ধ যে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ককে এক পর্যায়ে বলতেই হলো, আরেকটু সতর্ক হতে পারতেন সাকিব।
উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই ঝুঁকিপূর্ণ এক শটে চার রান পান সাকিব। পরের বলে বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান। তাতেও সাবধান হননি। খানিকপর বাইরের বলে চালিয়েই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৮ রানে।
চলতি টেস্ট সিরিজে নি:সন্দেহে বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব। দলের সর্বোচ্চ ২৮৪ রান তার ব্যাট থেকে এসেছে। কামরুল ইসলাম রাব্বির সঙ্গে যৌথভাবে পেয়েছেন দলের সর্বোচ্চ ৬ উইকেট। এমন পারফরম্যান্সের পর প্রশ্ন ওঠার কথা নয়। তবুও উঠছে আউট হওয়া ধরণগুলিতে। টেস্টের চার ইনিংসের তিনটি আউট ছিল বাজে শটে। অভিজ্ঞ একজনের কাছ থেকে বারবার একইরকম ভুল তো প্রত্যাশিত নয়!
স্বাভবিকভাবেই ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে উঠল প্রসঙ্গ। বরাবরের ব্যাখ্যাটিই নতুন করে উঠে এলো তামিমের কণ্ঠে।
“আমার মনে হয়, সাকিবের খুব ভালো টেস্ট সিরিজ কেটেছে। ও এভাবেই ব্যাট করে। কাট করতে গিয়ে আউট হয়েছে। আমরা সবাই জানি, এটা ওর শট। ২১৭ রান যে করল, সেখনে ৩১টি চার ছিল। ২০টির মতো চার কাট শটেই ছিল।”
নিজের ব্যাটিং নিয়েও তামিম সবসময় সহজাত ব্যাটিংয়ের জয়গান গেয়ে চলেন। সাকিবের ক্ষেত্রেও গাইলেন। সহজাত ব্যাটিংয়ে আপত্তি নেই কারও। প্রিয় শটে বেশি আউট হওয়ার নজিরও ক্রিকেটে অহরহ। তবে দলের প্রয়োজনীয়তায় তো সহজাত ব্যাটিংয়ের সঙ্গেও আপোশ করতে হয়। কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রিয় শটকে জানাতে হয় আড়ি।
কাট শটের জন্যই অফ সাইডে গোটা পাঁচেক ফিল্ডার রেখে প্রলুব্ধ করা হচ্ছিলো সাকিবকে। একবার জীবন পেয়ে সাকিব একটু পরই পা দিয়েছেন সেই ভুলের ফাঁদে।
ব্যাপারটি এতটাই দৃষ্টিকটু ছিল যে আড়াল করার শত চেষ্টার পরও তামিমকে খানিকটা মেনে নিতেই হলো ওই সময়ের বাস্তবতা।
“আজকের ডিসমিসাল, আজকের পরিস্থিতিটা হয়তো ভিন্ন ছিল। আজকে ওই পরিস্থিতি ছিল না এটা খেলার। এটাই ওর শট, তবে ঠিকমতো খেলতে পারেনি। ৫/৬ ফিল্ডার যাই থাকুক, ঠিকভাবে খেলতে পারলে হয়ত আউট হতো না। আমার মনে হয়, এটা ও আরও ভালাভাবে সামলাতে পারতো। যেহেতু দুটি উইকেট পড়েছে, আরেকটু সতর্ক হতে পারত।”
এই মেনে নেওয়া অবশ্য ম্যাচের ফল বা সাকিবের আউট বদলাচ্ছে না। তবে ম্যাচ শেষেই তাৎক্ষনিক ময়নাতদন্ত হলো, এটাও কম নয়। তবে ময়নাতদন্তের ফল কতটা কাজে দেবে, সেটা বলবে সময়ই। খুব দূর ভবিষ্যত নয়, ভারত সফর তো এই এলো বলে!