রুবেলকে না নেওয়ার যুক্তি দেবেন না হাথুরুসিংহে

ক্যামেরা-রেকর্ডারের সামনে আনুষ্ঠানিক কথোপকথন শেষ। কিউই ব্যাটসম্যান হেনরি নিকোলস দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন সংবাদকর্মীদের সঙ্গে। প্রসঙ্গ বাংলাদেশের বোলিং।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিক্রাইস্টচার্চ থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2017, 06:50 AM
Updated : 18 Jan 2017, 04:13 PM

‘ভয়েস অব নিউ জিল্যান্ড’ বলে পরিচিত প্রবীণ ব্রডকাস্টার ব্রায়ান ওয়াডল উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন তাসকিন আহমেদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বির। নিকোলসও সায় দিলেন। শুভাশীষ রায়ের ফলো থ্রু নিয়ে বিস্মিত সবাই। ওয়াডল দেখিয়ে দিচ্ছিলেন, ফলো থ্রুতে কেমন থাকে শুভাশীষের পায়ের অবস্থান। কথার মাঝেই নিকোলস হুট করে তুললেন রুবেল হোসেনের কথা, “টি-টোয়েন্টিতে রুবেল বেশ ভালো পেস ও ছন্দে বোলিং করেছিল। আমরা অবাক যে ওকে নেয়নি! হয়তো এখানে নিতে পারে…।”

নিকোলস অবশ্য জানেন না, খানিক আগে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রুবেলকে নিয়ে কথা বলে গেছেন চন্দিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশ কোচ যা ইঙ্গিত দিলেন, তাতে এখানেও রুবেলের খেলার সম্ভাবনা সামান্যই!

ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের তিন পেসারের কেউই অবশ্য খুব খারাপ করেননি। তবে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ পাচ্ছেন তারা মূলত অনভিজ্ঞতার কারণে। তিন পেসারের দুজনই ছিলেন অভিষিক্ত। বাকি একজনের অভিজ্ঞতা ছিল দুই টেস্টেই। সেই ‘অভিজ্ঞ’ কামরুলই ছিলেন দলের সেরা বোলার। টেস্ট জুড়েই বারবার প্রশ্ন উঠেছে, সবচেয়ে অভিজ্ঞ রুবেল কেন একাদশের বাইরে?

টেস্ট চলার সময় বা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পাওয়া যায়নি অধিনায়ক বা কোচকে। রুবেলকে উপেক্ষার আনুষ্ঠানিক কারণও তাই জানতে চাওয়া যায়নি। সেই সুযোগ মিলল বুধবার। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে জানা গেল না যুক্তিটা। কারণ কোনো যুক্তিই দেননি কোচ!

রুবেলকে না নেওয়ার পেছনে যুক্তির কথা জানতে চাইতেই একটু রূঢ় হয়ে গেল হাথুরুসিহের কণ্ঠ, “আপনাকে কোনো যুক্তি দেওয়ার প্রয়োজন আমার নেই। দলের জন্য যা ভালো মনে করি, আমি সেটাই করি।” চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট।

কোচের কথায় যা ফুটে উঠল, ‘দলের ভালোর’ জন্যই নেওয়া হয়নি রুবেলকে। আরও সরাসরি ব্যাখ্যা দেওয়ারও কেউ নেই দলে। আনুষ্ঠানিকভাবে না বললেও নির্বাচকদের সঙ্গে টুকটাক কথা বলে যা জানা গেছে, টেস্টে লম্বা স্পেলে বেশি ওভার বোলিং করার ‘রিদম’ তার আছে কিনা, সেটি নিয়ে সংশয় আছে টিম ম্যানেজমেন্টের।

পাল্টা প্রশ্ন থাকে এখানেও। দলের ভালোর জন্য যাকে একাদশে নেওয়া হয় না, টেস্টের বোলিং ‘রিদম’ যার নেই, তাকে টেস্ট স্কোয়াডে কেন নেওয়া হলো?

রুবেলের টেস্ট রেকর্ড অবশ্যই ভীষণ বিবর্ণ। ২৩ টেস্টে নিতে পেরেছেন মাত্র ৩২ উইকেট। বোলিং গড় ও স্টাইক রেট ইতিহাসের সবচেয়ে বাজেগুলোর অন্যতম। কিন্তু পরিসংখ্যানকেই যদি বিবেচ্য ধরতে হয়, তাহলে তার টেস্ট স্কোয়াডেই জায়গা পাওয়ার কথা নয়। স্কোয়াডে রাখা হয়েছে মানে একাদশে থাকার যোগ্যতাও আছে। আর সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ হিসেবে তার নামটাই একাদশে আগে ঢোকার কথা। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি সিরিজে যে গতি ও ছন্দে বোলিং করেছিলেন, যা নজর কেড়েছিল নিকোলসের। টেস্টে আবারও ব্যর্থ হলে বাদ দেওয়ার সুযোগ তো থাকছেই!

প্রশ্ন তাই উঠছেই। হ্যাগলি ওভালের উইকেট হওয়ার কথা বেসিন রিজার্ভের চেয়েও সবুজ। এখানেও যদি না থাকেন রুবেল, প্রশ্ন উঠবে আবারও।