খেলা সময়মত শুরু হলো। তবে নিউ জিল্যান্ডকে সময় মত অল আউট করতে পারল না বাংলাদেশ। একটি দুটি জুটি গড়ে ঠিকই কাছাকাছি এগোল কিউইরা, দূরে সরতে থাকল বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন। প্রাপ্তিযোগ অবশ্য তার পরও আছে। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মত লিড পাওয়া।
ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৬ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। আগের দিন ৮ উইকেটে ৫৯৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ড অল আউট হয়েছে ৫৩৯ রানে।
শুরুতে যেমন উইলিয়ামস-টেইলরদের ছাপিয়ে লম্বা ইনিংস খেলেছে টম ল্যাথাম, শেষ দিকে বিজে ওয়াটলিংকে ছাপিয়ে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন দুজনই।
আগের দিনের জুটিকে এদিন আরও লম্বা করেন ল্যাথাম ও নিকোলস। দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েও নেওয়া যায়নি খুব একটা ফায়দা। শেষ পর্যন্ত সেই সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ডার সত্তা জেগে উঠল বলেই ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশ।
ল্যাথাম ততক্ষণে পেরিয়ে গেছেন নিজের আগের সর্বোচ্চ ১৩৭ রান। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম সবে ঝড় তোলার চেষ্টা করেছিলেন। টানা চার-ছয় হজম করার পরের বলেই তাকে ফিরিয়ে প্রথম টেস্ট উইকেটের হুঙ্কার ছুঁড়েছেন শুভাশীষ রায়।
প্রথম সেশনে মিলেছে আরও একটি বড় সাফল্য। সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে শেষ হয়েছে ল্যাথামের দুর্দান্ত ইনিংস। ১৭৭ রানের ইনিংসটি গত ৬৪ বছরে বেসিন রিজার্ভে কোনো ওপেনারের সর্বোচ্চ।
প্রথম সেশনেই তিন উইকেটে তখন উজ্জীবিত বাংলাদেশ। উঁকি দিচ্ছে বড় লিডের আশা। ওয়াটলিং ও স্যান্টনারের ব্যাটে একটু একটু করে মিলিয়ে গেল সেই আশা। সপ্তম উইকেটে দুজনের জুটি ৭৩ রানের।
দীর্ঘ ইনিংসেও বিস্ময়করভাবে বোলিংয়ে দেখা যাচ্ছিল না মাহমুদউল্লাহকে। এই জুটি ভাঙতে শেষ পর্যন্ত তকে মনে পড়ল ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবালের। সাফল্যও হাতেনাতে। বলটি যদিও ছিল বাজে!
লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ইমরুল কায়েসের দারুণ ক্যাচে ফিরলেন ওয়াটলিং। নিজের সবচেয়ে রানপ্রসবা মাঠে অর্ধশতক থেকে ১ রান দূরে ছিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ওই ওভারে দারুণ এক আর্ম বলে টিম সাউদিকেও ফেরান মাহমুদউল্লাহ।
ইনিংস জুড়ে দারুণ বোলিংয়ে আলাদা করে চোখে পড়েছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। বদলি কিপার হিসেবে ৫ ডিসমিসালে ইমরুল নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসে। প্রায় দেড়শ ওভার কিপিং করার পর আবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করার কঠিন কাজটিও করতে হয়েছে তাকে।
ম্যাচের উত্তেজনাও অনেকটাই শেষ। এখন হয়ত শুধু ব্যক্তিগত প্রাপ্তি আর ‘মোরাল ভিক্টরির’ লড়াই!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫২ ওভারে ৫৯৫/৮ ইনিংস ঘোষণা।
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৪৮.২ ওভারে ৫৩৯ (আগের দিন শেষে ২৯২/৩) (ল্যাথাম ১৭৭, নিকোলস ৫৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৪, ওয়াটলিং ৪৯, স্যান্টনার ৭৩, সাউদি ০, ওয়েগনার ১৮, বোল্ট ৪*; মিরাজ ০/১১৬, শুভাশীষ ২/৮৯, তাসকিন ১/১৪১, রাব্বি ৩/৮৭, সাকিব ২/৭৮, মাহমুদউল্লাহ ২/১৫)।