পাকিস্তানের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই

সিডনি টেস্টের শেষ দিন ক্রিকেট বিশ্ব দেখল ইউনুস খানের দারুণ এক ইনিংস আর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং তাণ্ডব। ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এক সেশনেই আরও ব্যকফুটে চলে গেল পাকিস্তান। তৃতীয় টেস্টের শেষ দিনে অতিথিদের লড়াইটা তাই এখন শুধুই হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2017, 11:23 AM
Updated : 6 Jan 2017, 12:22 PM

জয়ের জন্য শেষ দিনে এখনও ৪১০ রান চাই পাকিস্তানের, যা প্রায় অসম্ভব। অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৯ উইকেট।

সিডনি টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫৫ রান। আজহার আলি ১১ ও নাইটওয়াচম্যান ইয়াসির শাহ ৩ রানে ব্যাট করছেন।

৪৬৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় দলকে ভালো সূচনা এনে দেন অভিষিক্ত শারজিল খান ও আজহার। তাদের ১২ ওভার স্থায়ী ৫১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন নাথান লায়ন। দিনের শেষ চার ওভার ইয়াসিরকে নিয়ে কাটিয়ে দেন আজহার।

এর আগে সুযোগ থাকলেও পাকিস্তানকে ফলোঅন করাননি স্বাগতিক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। বোলারদের পুঁজি আর হাতে যথেষ্ট ওভার রাখতে দ্বিতীয় ইনিংসে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করে অস্ট্রেলিয়া।

আগের দিন হেলমেটে বল লাগা ম্যাট রেনশকে সতর্কতার জন্য এই ম্যাচ থেকে সরিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তার জায়গায় ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেন ওসমান খাওয়াজা। ৮.৪ ওভারে ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে স্বাগতিকদের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত।

২৭ বলে ৮টি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫৫ রানের ঝড়ো  ইনিংস খেলেন ওয়ার্নার। দেশের হয়ে টেস্টে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়তে ২৩ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান তিনি। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে ২৯ বলে অর্ধশতক ছিল ব্রুস ইয়ার্ডলির অধিকারে।

ওয়ার্নারের চেয়ে কম বলে টেস্টে অর্ধশতক ছুঁয়েছেন মাত্র একজন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২১ বলে পঞ্চাশ করে বিশ্ব রেকর্ড পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের অধিকারে।

খাওয়াজার সঙ্গে ১০৩ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন স্মিথ। ৪৩ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৯ রান করে ফিরেন অধিনায়ক। মাত্র ৩২ ওভারে ২ উইকেটে ২৪১ রানে তিনি ইনিংস ঘোষণার সময় খাওয়াজা ৭৯ ও পিটার হ্যান্ডসমক ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা ওভার প্রতি রান সংগ্রহ করে ৭.৫৩ করে।

টেস্টে ১০০ রানের বড় ইনিংসে ওভার প্রতি এই প্রথম কোনো দল ৭-এর বেশি রান সংগ্রহ করলো। ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে কাছাকাছি গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের বিপক্ষে ৬.৮২ গড়ে রান তুলেছিল তারা।

ঝড়ের সবচেয়ে বড় অংশটা বয়ে গেছে ইয়াসির শাহর ওপর দিয়ে। টেস্টে ১০ ওভারের বেশি বোলিং করেছেন এমন বোলারদের মধ্যে সব খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন এই লেগ স্পিনার। ১৪ ওভার ১২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। ওভার প্রতি ৮.৮৫ করে রান দিয়ে পেছনে ফেলেন বাংলাদেশের শাহাদাত হোসেনকে (৮.৪১)।

চোটের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করেননি পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির।

এর আগে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুক্রবার ৮ উইকেটে ২৭১ রান নিয়ে দিন শুরু করে পাকিস্তান। বৃষ্টির দাপটে এদিনও দিনের প্রথম সেশনে খেলা সম্ভব হয়নি। ইয়াসিরকে নিয়ে দলকে ফলোঅন এড়ানোর পথে রাখেন ইউনুস। কিন্তু তিন বলের মধ্যে ইয়াসির ও ইমরান খানকে বিদায় করে ৩১৫ রানে অতিথিদের গুটিয়ে দেন জশ হেইজেলউড।

১৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন ইউনুস। তার ৩৩৪ বলের ইনিংসটি গড়া ১৭টি চার ও ৩টি ছক্কায়।

৫৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার হেইজেলউড।

তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৫৩৮/৮ ইনিংস ঘোষণা।

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১১০.৩ ওভারে ৩১৫ (আজহার ৭১, শারজিল ৪, বাবর ০, ইউনুস ১৭৫*, মিসবাহ ১৮, শফিক ৪, সরফরাজ ১৮, আমির ৪, ওয়াহাব ৮, ইয়াসির ১০, ইমরান ০; স্টার্ক ১/৭৭, হেইজেলউড ৪/৫৫, ও কিফে ১/৫০, লায়ন ৩/১১৫, কার্টরাইট ০/১৫)

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৩২ ওভারে ২৪১/২ (ওয়ার্নার ৫৫, খাওয়াজা ৭৯*, স্মিথ ৫৯, হ্যান্ডসকম ৪০*; ইমরান ০/৪৩, ইয়াসির ১/১২৪, ওয়াহাব ১/২৮, আজহার ০/৪০)

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ১৬ ওভারে ৫৫/১ (আজহার ১১*, শারজিল ৪০, ইয়াসির ৩*; স্টার্ক ০/১৮, হেইজেলউড ০/৮, লায়ন ১/২৭, ও’কিফে ০/২)