তালগোল পাকিয়ে বাংলাদেশের হার

স্কোর: বাংলাদেশ ৪২.৪ ওভারে ১৮৪; নিউ জিল্যান্ড ২৫১। নিউ জিল্যান্ড ৬৭ রানে জয়ী।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2016, 06:35 PM
Updated : 29 Dec 2016, 05:30 AM

বাঁচা-মরার ম্যাচে এক সময়ে ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান তখন খেলছেন আস্থার সঙ্গে। দলের রান ১ উইকেটে ১০৫। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৫২ রানের লক্ষ্যটা তখন খুব কাছের মনে হচ্ছিল। সাব্বিরের রান আউট দিয়ে ম্যাচের চিত্র পাল্টানোর শুরু। এরপর ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই হারল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। 
 
নিল ব্রুমের শতকে সিরিজ ঘরে তুলেছে নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশকে ১৮৪ রানে অলআউট করে স্বাগতিকরা জিতেছে ৬৭ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজে তারা এখন ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে। 
 
৭৯ রান তুলতে শেষ ৯ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় সবাই নিজের উইকেট ছুড়ে এসেছেন। তাই ১ উইকেটে শতরান পার হওয়ার পরও দুইশ’ পর্যন্তও গেল না বাংলাদেশের ইনিংস।

নুরুল হাসানকে ফিরিয়ে ৪২.৪ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দেন ট্রেন্ট বোল্ট। এই পেসার আর তার নতুন বলের সঙ্গী টিম সাউদি নেন দুটি করে উইকেট। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ২২ রানে নেন ৩ উইকেট। 
 
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৫৯ রান ইমরুল কায়েসের। সাব্বির রহমান করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুই জনে গড়েন ৭৫ রানের জুটি। এরপর আর সেভাবে কোনো জুটি গড়তে পারেননি অতিথিরা।

শূন্য রানে তাসকিনের ফেরা
 
নুরুল হাসানকে সঙ্গ দিতে পারলেন তাসকিন আহমেদও। শূন্য রানে তার বিদায়ে জয়ের আরও কাছে পৌঁছে যায় নিউ জিল্যান্ড।  ৪০তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ১৭৫/৯।

বেশিক্ষণ টিকলেন না মাশরাফিও
 
বেশিক্ষণ টিকেননি মাশরাফি বিন মুর্তজাও। ট্রেন্ট বোল্টকে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করার চেষ্টায় কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচে পরিণত হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
 
৩৭তম ওভারে মাশরাফি ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১৬২/৮।

উইলিয়ামসনের তৃতীয় শিকার তানবীর
 
অভিষেকে বোলিংয়ে উইকেটশূন্য তানবীর হায়দার ব্যাটিংয়েও ভালো করতে পারলেন না। আউট হলেন ২ রান করে। কেন উইলিয়ামসনের অফ স্পিন এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে আর জায়গায় ফিরতে পারলেন না।
 
স্টাম্পড হয়ে তানবীরের ফেরার সময়ে ৩৩তম ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৪১/৭। ৩৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে অতিথিরা।

আসা-যাওয়ার মিছিলে ইমরুলও
 
দ্রুত উইকেট পতনের মধ্যে ফিরেন ইমরুল কায়েসও। উইকেটে অনেকক্ষণ থাকার পরও পা নিয়ে না খেলে টিম সাউদির বলে ক্যাচ দেন নিল ব্রুমকে।
 
৬টি চারে ৫৯ রান করে ৩২তম ওভারে ইমরুল ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ১৩৬ রান। এক সময়ে ১ উইকেটে ১০৫ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর ছিল অতিথিরা।

বাজে শটে ফিরলেন মোসাদ্দেকও
 
উইকেটে থেকে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে খেলার চেষ্টা করেননি মোসাদ্দেক হোসেন। কেন উইলিয়ামসনের অফ স্পিন তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই তরুণ।
 
৩১তম ওভারে মোসাদ্দেক (৩) ফেরার সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৩৪ রান।

বিপদে ফেলে সাকিবের বিদায়
 
কেন উইলিয়ামসনের অনেক বাইরের বলে বাজে শট খেলে শর্ট থার্ডম্যানে ব্রুমকে ক্যাচ ফিরেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের বিদায়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ২৯তম ওভারে ৭ রান করে সাকিবের ফেরার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১২৮/৪।

ইমরুলের অর্ধশতক
 
লকি ফার্গুসনকে চার হাঁকিয়ে অর্ধশতকে পৌঁছান ইমরুল কায়েস। ৭৯ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করতে সব ৬টি চার মারেন বাঁহাতি উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যান।

ফার্গুসনের ইয়র্কারে মাহমুদউল্লাহর বিদায়
 
সাব্বির রহমানের রান আউটের পর মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। বোলিংয়ে আসার আগেই ইমরুল কায়েসের সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন লকি ফার্গুসন। এসেই দারুণ এক ইয়র্কারে মাহমুউল্লাহর স্টাম্প এলোমেলো করে দেন এই পেসার।
 
২৬তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর (১) বিদায়ের সময় বাংলাদেশের স্কোর ১১২/৩।
 
জীবন পেলেন ইমরুল
 
মিচেল স্যান্টনারের বলে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান ইমরুল কায়েস। স্লগ সুইপে ওঠা ক্যাচ কয়েকবারের চেষ্টাতেও হাতে জমাতে পারেননি লকি ফার্গুসন । সে সময় ৪৫ রানে ব্যাট করছিলেন ইমরুল।

দারুণ জুটি ভাঙল ভুল বোঝাবুঝিতে
 
২৩তম ওভারের শেষ বল খেলেই রানের জন্য ছুটেন ইমরুল কায়েস। সাড়া দিয়ে এগিয়ে যান সাব্বির রহমান। কিন্তু হঠাৎ করেই ফেরার চেষ্টা করেন এই তরুণ। তখন আর ফেরার সুযোগ নেই ইমরুলের। দুই ব্যাটসম্যান ছুটেন এক প্রান্তে। কিন্তু সাব্বিরের আগে পৌঁছান ইমরুল। দুই জনের পাগলামিতে ভাঙে ৭৫ রানের জুটি। রান আউট হয়ে ফিরে যান সাব্বির। ৩ ছক্কা আর ২ চারে ৪৯ বলে করেন ৩৮। বাংলাদেশের স্কোর তখন ১০৫/২।

বাংলাদেশের একশ’ পার
 
ইমরুল কায়েস-সাব্বির রহমানের দৃঢ়তায় ২২তম ওভারে তিন অঙ্কে পৌঁছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। জেমস নিশামকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে শত রানে নিয়ে যান সাব্বির।

ইমরুল-সাব্বিরের জুটিতে ফিফটি
 
তামিম ইকবালের বিদায়ের পর বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে ইমরুল কায়েস ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে। অনেক ডট বল খেলায় মাঝে মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে শট খেলেন দুই ব্যাটসম্যান। ১১.৪ ওভারে পঞ্চাশ স্পর্শ করে তাদের অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেট জুটি।

বোল্ট-সাউদির আঁটসাঁট বোলিং
 
পাওয়ার প্লেতে আঁটসাঁট বোলিংয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখেন ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি। এক-দুই নিতে না পারায় চাপ বাড়ে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ওপর। সেই চাপ কমাতে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে আউট হন তামিম ইকবাল। সীমানায় একটুর জন্য ফিল্ডারের হাতে যায়নি ইমরুল কায়েসের ক্যাচ। সৌম্য না থাকায় তিনে উঠে আসেন সাব্বির রহমান। ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৩২ রান তোলে বাংলাদেশ।

সতর্ক শুরুর পর ফিরলেন তামিম
 
অষ্টম ওভারে ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকা তামিম ইকবাল টিম সাউদির বলে এগিয়ে এসে মারতে দিয়ে শর্ট কাভারে ক্যাচ দেন।
 
২৩ বলে ১৬ রান করে তামিম ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৩০/১।

এবার জেতার মতো লক্ষ্য?
 
সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদের কাছ থেকে পেলেন যোগ্য সঙ্গ। আগের ম্যাচের চেয়ে বোলিং-ফিল্ডিংও এ দিন অনেক ভালো হল। তাই নিল ব্রুমের প্রথম শতকের পরও খুব বড় সংগ্রহ গড়তে পারলো না নিউ জিল্যান্ড।
 
সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৫২ রানের লক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ। 
 
৪৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অতিথিদের সেরা বোলার মাশরাফি। দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও সাকিব। অভিষেকে ৪৫ রানে ১ উইকেট নেন শুভাশীষ রায়। ৮ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন আরেক অভিষিক্ত তানবীর হায়দার।
 
নিজের প্রথম ওয়ানডেতে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের ডিসমিসাল তিনটি। 
 
শেষ বলে ২৫১ রানে অলআউট হওয়া নিউ জিল্যান্ড এত দূর আসতে পারে ব্রুমের নৈপুণ্যে। ১০৭ বলে খেলা তার অপরাজিত ১০৯ রানের ইনিংসটি গড়া ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ রান লুক রনকির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৫১ (গাপটিল ০, ল্যাথাম ২২, উইলিয়ামসন ১৪, ব্রুম ১০৯*, নিশাম ২৮, মানরো ৩, রনকি ৩৫, স্যান্টনার ৯, সাউদি ২, ফার্গুসন ৪, বোল্ট ১২ ; মাশরাফি ৩/৪৯, শুভাশীষ ১/৪৫, তাসকিন ২/৪৫, সাকিব ২/৪৭, তানবীর ০/৪৭, মোসাদ্দেক ১/১২)

ব্রুমের প্রথম শতক
 
দারুণ ব্যাটিং করা নিল ব্রুম পান নিজের প্রথম শতকের দেখা। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মধ্যে এক প্রান্ত আগলে রাখেন তিনি। রানের চাকা সচল রাখার কাজটাও করতে হয় তাকেই। ১০১ বলে পৌঁছান তিন অঙ্কে। ততক্ষণে ৭টি চার ও তিনটি ছক্কা এসেছে তার ব্যাট থেকে।

মাশরাফির তৃতীয় শিকার ফার্গুসন
 
দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া মাশরাফি বিন মুর্তজা উইকেট পান নিজের শেষ ওভারেও। শর্ট বলে লকি ফার্গুসনকে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের গ্লাভবন্দি করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
 
ফার্গুসন ফেরার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২২৮/৯।

সাকিবের শেষ ওভারে কট বিহাইন্ড সাউদি
 
নিজের শেষ ওভারে আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের গ্লাভসবন্দি হন টিম সাউদি।
 
৩ রান করে সাউডি ফেরার সময় স্বাগতিকদের স্কোর ২১৪/৮।

শুভাশীষের প্রথম উইকেট স্যান্টনার
 
শর্ট বলে সাফল্য পান শুভাশীষ রায়। পুল করতে গিয়ে আকাশে তুলে মাশরাফির হাতে ক্যাচ হয়ে ফিরেন মিচেল স্যান্টনার।  এটাই অভিষিক্ত পেসারের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট।
 
৯ রান করে স্যান্টনার ফিরে যাওয়ার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ১৯৮/৭।

বিপজ্জনক রনকিকে ফেরালেন তাসকিন
 
তাসকিন আহমেদের আগের ওভার থেকে এল ১১ রান। পরেরটিতে সাকিব আল হাসান দিলেন ১৩ রান। হঠাৎ গতি পেল নিউ জিল্যান্ডের স্কোর বোর্ড। তাতে দারুণ অবদান লুক রনকির। ৩৮ বলে ৩৫ রান করা এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানকে তানবীর হায়দারের ক্যাচে পরিণত করে বাংলাদেশ দলে স্বস্তি ফেরান তাসকিন। 
 
রনকি ফিরে যাওয়ার সময় স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭১ রান।
 
ব্রুম-রনকির অর্ধশত রানের জুটি
 
একশ’ পেরুতে না পেরুতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া নিউ জিল্যান্ড  প্রতিরোধ গড়ে নিল ব্রুম ও লুক রনকির ব্যাটে। এক প্রান্ত আগলে দলকে এগিয়ে নেন ব্রুম। সময় গড়ানোর সঙ্গে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন রনকি।

ব্রুমের অর্ধশতক
 
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো নিউ জিল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ে নিল ব্রুমের ব্যাটে। আশা হয়ে টিকে থাকা এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান পান দ্বিতীয় অর্ধশতক। তিনটি চার ও একটি ছক্কায় পঞ্চাশ স্পর্শ করতে খেলেন ৬৫ বল।

মাশরাফির দ্বিতীয় শিকার মানরো
 

জ্বলে উঠার আগেই এবার কলিন মানরোকে ফেরান মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়কের একটু ভেতরে ঢোকা বল সামলাতে পারেননি গত ম্যাচে ঝড় তোলা মানরো।
৩ রান করে বোল্ড হয়ে মানরোর ফেরার সময়ে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ১০৭/৫।

এসেই জুটি ভাঙলেন মোসাদ্দেক
 

মোসাদ্দেক হোসেনের প্রথম ওভারটি থেকে ৭ রান নেওয়ার পরও এগিয়ে এসে চড়াও হতে চেয়েছিলেন জেমস নিশাম। ব্যাটে বল ছোঁয়াতেই পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। স্টাম্পিং করার সহজ সুযোগ কাজে লাগান অভিষিক্ত উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান। ওয়ানডেতে এটাই তার প্রথম ডিসমিসাল। 

৩১ বলে ২৮ রান করা নিশামের বিদায় ভাঙে নিল ব্রুমের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি। নিউ জিল্যান্ডের স্কোর তখন ৯৮/৪।

সাকিবের বলে এলবিডব্লিউ বিপজ্জনক ল্যাথাম
 

প্রিয় সুইপ শটই কাল হলো টম ল্যাথামের। প্রথম ওয়ানডে শতক করে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়া এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ফেরান সাকিব আল হাসান। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি নিউ জিল্যান্ডের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর রিভিউ নেন, কিন্তু সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি।
চতুর্দশ ওভারে ল্যাথাম ফেরার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৪৭/৩।

উইলিয়ামসনকে ফেরালেন তাসকিন 
 

বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সুবিধাটা কাজে লাগান তাসকিন আহমেদ। আগের দুই ওভার থেকে আসে সবে ১ রান। একটু অধৈর্য্য হয়ে উঠেন কেন উইলিয়ামসন। তাসকিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিব আল হাসানকে সহজ ক্যাচ দেন নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক। মাশরাফির মতো তাসকিনও নেন মেডেন-উইকেট।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তাসকিনের বলে আউট হলেন উইলিয়ামসন। অধিনায়কের বিদায়ের সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৩৭/২।

মাশরাফি-শুভাশীষদের আঁটসাঁট বোলিং
 
ক্রাইস্টচার্চে প্রচুর শর্ট বল দেওয়া বাংলাদেশের পেসাররা নেলসনে শুরুতে সঠিক লাইন লেংথে বল করেন। খুব একটা বাজে বল দেননি মাশরাফি বিন মুর্তজা ও শুভাশীষ রায়। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে নিউ জিল্যান্ড তুলতে পারে ৩৭ রান।

উইলিয়ামসনকে জীবন দিলেন শুভাশীষ
 
ওয়ানডে অভিষেকে নিজের চতুর্থ ওভারে উইকেট পেতে পারতেন শুভাশীষ রায়। কেন উইলিয়ামসনের ফিরতি ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি এই পেসার। সে সময় ১৩ রানে ব্যাট করছিলেন নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক।

প্রথম ওভারেই মাশরাফির আঘাত
তৃতীয় বলে রিভিউ নিয়েও মার্টিন গাপটিলকে ফেরাতে পারেনি বাংলাদেশ। ইম্প্যাক্ট অফ স্টাম্পের বাইরে হওয়ায় বেঁচে যান নিউ জিল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। পরের বলে আর বাঁচেননি; মাশরাফি বিন মুর্তজার ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি। বাংলাদেশ অধিনায়কের প্রথম ওভারটি ছিল মেডেন।

অভিষেক ৩ জনের

অনুমিতভাবেই তিন অভিষিক্তকে নিয়ে সাজানো হয়েছে বাংলাদেশের একাদশ। উইকেটের পেছনে নুরুল হাসানসহ ওয়ানডে ক্যাপ পেয়েছেন পেসার শুভাশীষ রায় ও লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার তানবীর হায়দার।

বিশ্রাম পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান, জায়গা হারিয়েছেন সৌম্য সরকার। চোট ছিটকে দিয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। ২০১০ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশের রেকর্ড টানা ৯২ ওয়ানডে খেলার পর অবশেষে দর্শক মুশফিক।

টসে জিতে বোলিংয়ে বাংলাদেশ

আগের দুদিনই ছিল ঝকঝকে রোদ। কিন্ত ম্যাচের দিন সকাল থেকেই মেঘে ঢাকা আকাশ। কাঁপিয়ে দেওয়ার মত না হলেও বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। নেলসনের আবহাওয়ায় হুট করেই ক্রাইস্টচার্চের আবহ। বদলে গেল বাংলাদেশের টস ভাগ্যও। এবার জিতেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা; বেছে নিয়েছেন বোলিং।

আকাশ মেঘলা বলে টস জিতলে বোলিং নিতে চেয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসনও। তবে ব্যাটিংয়েও আপত্তি নেই কিউই অধিনায়কের। উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া থাকলেও ব্যাটিং সহয়কই হবে বলে ধারণা তার। স্বাগতিকরা খেলছে একই একাদশ নিয়ে।

বাংলাদেশের বাঁচা-মরার ম্যাচ

সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। বাঁচা-মরার ম্যাচে তারা খেলবে নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে। এই মাঠে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে জিতেছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।    

আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

তামিম ইকবাল মনে করছেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সিরিজ বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের বিশ্বাস, নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করতে পারলে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙা যাবে।  

বিশ্রামে মুস্তাফিজ

দীর্ঘদিন পর ফেরা মুস্তাফিজুর রহমানকে টানা না খেলানোর পরামর্শ দিয়েছেন ফিজিও। তাই দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিংয়ের সেরা অস্ত্রকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। দলের বাঁচা-মরার ম্যাচে বিশ্রাম পাচ্ছেন মুস্তাফিজ।

থামছে মুশফিকের রেকর্ড যাত্রা

২০১০ সালের জুলাই থেকে এবারের নিউ জিল্যান্ড সফরের প্রথম ওয়ানডে পর্যন্ত টানা ৯২ ওয়ানডে খেলেছেন মুশফিক। বাংলাদেশের হয়ে টানা সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলার রেকর্ডধারী এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের খেলা হচ্ছে না দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে দুই সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন টেস্ট অধিনায়ক।

বড় রানের মাঠ স্যাক্সটন ওভাল

স্যাক্সটন ওভাল ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড বাংলাদেশের। এই মাঠে সর্বোচ্চ ৩১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জেতার রেকর্ডও মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের। নিউ জিল্যান্ডে কেবল এই একটি মাঠেই কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয়ের স্মৃতি আছে তাদের।