তানভীর না মোসাদ্দেক?

দুজন বোলিং করছিলেন পাশাপাশি নেটে। ব্যাটিং অনুশীলনে গেলেন কাছাকাছি সময়ে। তবে প্রথম ওয়ানডেতে খেলবেন দুই স্পিনিং অলরাউন্ডারের একজন। মুস্তাফিজুর রহমানের পাশাপাশি এই সিদ্ধান্ত নিয়েও দোলাচলে আছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তানভীর হায়দার নাকি মোসাদ্দেক হোসেন?

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনি ক্রাইস্টচার্চ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2016, 07:13 AM
Updated : 25 Dec 2016, 09:19 AM

টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্র বলছে, তানভীরকে খেলাতে খুবই আগ্রহী চন্দিকা হাথুরুসিংহে। অক্টোবরে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডারকে মনে ধরেছিল বাংলাদেশ কোচের। পরে অনুশীলনেও কোচের মন জয় করেছেন তানভির।

বোলিংয়ে আক্রমণাত্মক বিকল্প হিসেবে তানভীরকে একাদশে রাখতে চান কোচ। তার মতে, মাঝের ওভারগুলোয় জুটি ভাঙতে বা গুরুত্বপূর্ণ দুই-একটি উইকেট এনে দিতে পারেন এই লেগ স্পিনার।

নিউ জিল্যান্ডের মিডল অর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের আধিক্য অবশ্য তানভীরের বিপক্ষে যাচ্ছে। কলিন মানরো, জেমস নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, সবাই আক্রমণাত্মক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। আনকোরা লেগ স্পিনারকে পেয়ে বসতে পারেন তারা। তবে নিউ জিল্যান্ডের অন্য বেশিরভাগ মাঠের সীমানা ছোট হলেও হ্যাগলি ওভাল তুলনামূলক ভাবে একটু বড়। তাতে বাজিটা ধরার সাহস পাচ্ছেন কোচ।

টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যরা আবার পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছেন না তানভীরকে নিয়ে। বাংলাদেশের সবশেষ ওয়ানডেতেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে অপরাজিত ৩৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মোসাদ্দেক। তার বুদ্ধিদীপ্ত অফ স্পিনটাও কার্যকর হতে পারে।

অনুশীলনের পারফরম্যান্স অবশ্য এগিয়ে রাখছে তানভীরকে। জানা গেছে, বোলিংয়ের পাশাপাশি নেটে তানভীরের ব্যাটিং দেখেও ভালো লেগেছে কোচের। গতি আর বাউন্সে ভড়কে যাচ্ছেন না। কিন্তু নিউ জিল্যান্ডে আসার পর নেটে পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে মোসাদ্দেকের ব্যাটিং খানিকটা নড়বড়ে মনে হয়েছে কোচের কাছে।

সিদ্ধান্তটি শেষ পর্যন্ত হওয়ার কথা রোববার রাতে বা ম্যাচের দিন সকালে। তবে একটা ব্যাপার নিশ্চিত। আবার পুরোনো পরিচয়ে ফিরছেন সৌম্য সরকার। গত বছর অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবেই স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছিলেন সৌম্য। এবার সেই নিউ জিল্যান্ডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে খেলবেন অলরাউন্ডার হিসেবেই।

নেটে নিয়মিতই বোলিং করছেন সৌম্য। রোববার দলের অনুশীলন শেষে আলাদা করে সেন্টার উইকেটে বেশ কিছুক্ষণ বোলিং অনুশীলন করেছেন। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও বেশ মুগ্ধ সৌম্যর বোলিংয়ে। ম্যাচেও সেটি কাজে লাগাতে চান।

শুরুতে সৌম্যকে মিডল বা লোয়ার-মিডল অর্ডারে খেলানোর পরিকল্পনা থাকলেও এখন সেখান থেকে সরে এসেছেন কোচ। প্রস্তুতি ম্যাচগুলোয় সৌম্যর ব্যাটিংয়ের ধরনে খুশি কোচ তাকে জায়গা করে দিচ্ছেন তিন নম্বরে।

তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের পর সৌম্য। চার থেকে ছয়ে মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের পজিশন ঠিক করে দেবে ম্যাচের পরিস্থিতি। তিন নম্বরে ভালো করতে শুরু করলেও সৌম্যকে জায়গা দিতে সাব্বির রহমানকে নামতে হচ্ছে সাতে। আটে তানভীর বা মোসাদ্দেক। তার পর অধিনায়ক মাশরাফিসহ তিন পেসার।

চার পেসার খেলানোর ভাবনাও ছিল। তবে উইকেট নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না দল। তাই ব্যাটিংয়ে শক্তি একটু বাড়ানো হচ্ছে। সৌম্যর বোলিংও জোগাচ্ছে চতুর্থ পেসার হিসেবে কাজ চালানোর ভরসা। তাছাড়া উইকেট আভাস দিচ্ছে ব্যাটিং সহায়ক হওয়ার। সেক্ষেত্রে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনা, পেসারের চেয়ে স্পিনে বিকল্প বেশি থাকা ভালো। এজন্যই আটে তানভীর বা মোসাদ্দেক।

বাংলাদেশের মতো অলরাউন্ডারের কমতি নেই নিউ জিল্যান্ড দলেও। নিশাম, স্যান্টনারের পাশাপাশি কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম আছেন। কাজ চালতে পারেন মানরো, কেন উইলিয়ামসনও। শেষ পর্যন্ত হয়ত দু দলের অলরাউন্ডারদের পারফরম্যান্সের পার্থক্যই গড়ে দেবে ম্যাচের ভাগ্য!