সিরিজ জয়ের দুয়ারে কোহলির ভারত

ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ৪০০ করে কখনোই হারেনি কোনো দল। তবে সব কিছুরই প্রথম আছে! অনাকাঙ্ক্ষিত সেই প্রথম হার এখন ইংল্যান্ডের জন্য স্রেফ সময়ের ব্যাপার। ইংলিশদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে বিরাট কোহলি ও জয়ন্ত যাদবের রেকর্ড রানের চাপায়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2016, 12:06 PM
Updated : 11 Dec 2016, 12:07 PM

রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন কোহলি। নয় নম্বরে নেমে ইতিহাস গড়া সেঞ্চুরি করছেন জয়ন্ত। দুজনের জুটিতেও হয়ছে রেকর্ড। পরে ভারতীয় স্পিনে ভেঙে পড়েছে ইংলিশ ব্যাটিং।

প্রথম ইনিংসে ২৩১ রানে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড চতুর্থ দিন শেষ করেছে ৬ উইকেটে ১৮২ রানে। ইনিংস হার এড়াতেই প্রয়োজন এখনও ৪৯ রান। ম্যাচে হার এড়ানো প্রায় অসম্ভব। ২-০তে এগিয়ে থাকা ভারত সিরিজ জিতে যাবে এই ম্যাচ জিতলেই।

ইংল্যান্ডের ৪০০ রানের জবাবে ভারত প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৬৩১। ২৩৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন কোহলি। জয়ন্ত করেছেন ১০৪। পরে অশ্বিন ও জাদেজা ধরেছেন জোড়া শিকার।

ম্যাচের প্রথম আড়াই দিন ভারতের সঙ্গে সমান তালেই ছিল ইংল্যান্ড। তৃতীয় দিন বিকেলে কোহলি ও জয়ন্তর জুটিতে এগিয়ে গিয়েছিল ভারত। চতুর্থ দিন এই জুটি শুধু ম্যাচ থেকেই ছিটকে দেয়নি, পিষ্ট করেছে ইংলিশদের মনোবলও।

স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে প্রথম সেশনেই ১২৮ রান তুলে ফেলেন দুজন। লাঞ্চের আগেই কোহলি পেয়ে যান ডাবল সেঞ্চুরি, ৩০২ বলে।

এক বছরে এটি তার তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি, উঠলেন নতুন উচ্চতায়। বছরে তিন ডাবল সেঞ্চুরি ভারতের হয়ে তিনিই প্রথম, সব মিলিয়ে ইতিহাসে মাত্র পঞ্চম!

জয়ন্ত সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন লাঞ্চের পরপর। নয় নম্বরে এই প্রথম সেঞ্চুরি করলেন ভারতের কোনো ব্যাটসম্যান!

খানিকপর জয়ন্তর বিদায়ে ভাঙে ২৪১ রানের জুটি। তবে রেকর্ড গড়া হয়ে গেছে অনেক আগেই। অষ্টম উইকেটে ভারতের হয়ে আগের সর্বোচ্চ জুটি ছিল মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন ও অনিল কুম্বলের ১৬১।

রান বাড়ানোর তাড়ায় শেষ পর্যন্ত আউট হন কোহলিও। ৩৪০ বলে ২৩৫ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস শেষ হয় সীমানায় ধরা পড়ে। ভারত অধিনায়ক হিসেবে এটি সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। পেছনে পড়ে গেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির ২২৪।

ভারত শুধু বড় রানের লিডই নেয়নি, শুষে নিয়েছে ইংলিশদের জীবনী শক্তিও। ব্যাটিংয়ে ফুটে ওঠে সেটিই। প্রথম ইনিংসে অভিষেকে সেঞ্চুরি করা কিটন জেনিংস আউট ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই। তাকে অনুসরণ করতে থাকেন একের পর এক ব্যাটসম্যান।

জো রুট অবশ্য দারুণ খেলেছেন। চতুর্থ উইকেটে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে একটা জুটিও গড়তে পারেন। ছোবল দেওয়া স্পিনেও দারুণ ব্যাট করেছেন রুট। ৭৭ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে যান জয়ন্তর জোরের ওপর করা বলে।

এরপর একা লড়ে গেছেন বেয়ারস্টো। দিনের শেষ ওভারে ফিরেছেন নাইটওয়াচম্যান জেইক বল। শেষ বিকেলটাও যেন বার্তা দিল ইংল্যান্ডের দু:সহ আগামীর!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪০০

ভারত ১ম ইনিংস: ১৮২.৩ ওভারে ৬৩১ (আগের দিন শেষে ৪৫১/৭) (কোহলি ২৩৫, জয়ন্ত ১০৪, ভুবনেশ্বর ৯, উমেশ ৭* ; অ্যান্ডারসন ০/৬৩, ওকস ১/৭৯, মইন ২/১৭৪, রশিদ ৪/১৯২, বল ১/৪৭, স্টোকস ০/৩২, রুট ২/৩১)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৪৭.৩ ওভারে ১৮২/৬ (কুক ১৮, জেনিংস ০, রুট ৭৭, মইন ০, বেয়ারস্টো ৫০*, স্টোকস ১৮, বল ২; ভুবনেশ্বর ১/১১, উমেশ ০/১০, জাদেজা ২/৫৮, অশ্বিন ২/২৯, জয়ন্ত ১/৩৯)।