বরিশালকে বিদায় করে প্লে অফের পথে রংপুর

শুধু জয় নয়, গাণিতিক সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতেও প্রয়োজন ছিল ঝড়ের গতিতে জয়। সেই সমীকরণ মেলাতে গিয়ে উল্টো হেরেই বসল বরিশাল বুলস। ছিটকে গেল টুর্নামেন্ট থেকে। বর্তমান রানার্সআপের সঙ্গে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। দারুণ জয়ে শেষ চারের সম্ভাবনা দারুণভাবেই টিকিয়ে রাখল রংপুর রাইডার্স।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2016, 08:58 AM
Updated : 3 Dec 2016, 10:45 AM

প্লে অফের পথে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বরিশাল বুলসকে ২৯ রানে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। রংপুরের ১৫৪ রান ১৪.৪ ওভারে তাড়া করতে পারলে রান রেটে এগিয়ে যেত বরিশাল। কিন্তু ১০ বল বাকি থাকতেই তারা গুটিয়ে যায় ১২৫ রানে।

রংপুরের জয়ের ভিত্তি গড়ে দেন মোহাম্মদ শাহজাদ। এই ম্যাচে যার থাকার কথা ছিল নিষিদ্ধ! কিন্তু শাস্তি কমানোয় সুযোগ পেয়েছেন খেলার। সেই শাহজাদই রংপুরকে এনে দেন শক্ত ভিত্তি। সঙ্গে মোহাম্মদ মিঠুনের কার্যকর ইনিংস ও শেষ দিকে জিয়াউর রহমানের ছোটো ঝড়ে রংপুর ছাড়ায় দেড়শ।

মাঝ বিরতিতেই বরিশাল কোচ ডেভ হোয়াটমোর টিভি সাক্ষাতকারে জানান, রান রেট এগিয়ে নিতে দ্রুত জয়কে তাড়া করবেন তারা। সেই লক্ষ্যেই পিঞ্চ হিটার হিসেবে ওপেনিংয়ে নামানো হয় রায়াদ এমরিটকে। কিন্তু ফেরেন তিনি প্রথম ওভারেই।

রান রেটের দাবি মেটাতে তিনে নেমে মুশফিকও বিদায় নেন ১ রানে। লং অনে ধরা পড়েন সোহাগ গাজীকে ছক্কা মারার চেষ্টায়।

বরিশালের আশা তবু খানিকটা টিকে ছিল ডেভিড মালানের ব্যাটে। কিন্তু আনোয়ার আলির লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে কটবিহাইন্ড মালান (২৩ বলে ৩০)।

রান রেট তাড়া করা তো বহু দূর, বরিশালের তখন ম্যাচ জয় নিয়েই টানাটানি। মাঝে ১৬ বলে ২১ করেছেন ফজলে রাব্বি, ১৭ বলে ২৪ থিসারা পেরেরা। কিন্তু জয়ের কাছেও যেতে পারেনি বরিশাল।

রংপুরের হয়ে আবারও দারুণ বোলিং করেছেন সোহাগ গাজী। রুবেল হোসেন, শহিদ আফ্রিদিও বল হাতে রেখেছেন অবদান।

তবে ম্যাচের সেরা শাহজাদ। টস জয়ী রংপুরের হয়ে তাকে ব্যাট হাতে নামতে দেখে চমকে গিয়েছিলেন অনেকেই। ‘বিপিএলের স্বার্থে’ দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে এক ম্যাচে নামিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। শাহজাদও প্রমাণ করলেন, কেন তাকে খেলাতে এত মরিয়া ছিল দল। ৪০ বলে করেছেন ৪৮।

রংপুরের শুরুটা ছিল সৌম্য সরকারের আরেকটি ব্যর্থতা দিয়ে। আগের ম্যাচে সাত নম্বরে ব্যাট করা ব্যাটসম্যান এদিন আবার ফেরেন ওপেনিংয়ে। কিন্তু রান ফেরেনি ব্যাটে। কামরুল ইসলাম রাব্বিকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কায় খানিকটা আশা জাগিয়েছিলেন। পরের বলেই স্লোয়ারে ফ্লিক করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন কাভারে (১৭)।

সেখান থেকে শাহজাদ ও মিঠুনের জুটি। ব্যাটের ঝড়ের গতি না থাকলেও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই রান তোলেন দুজন। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের জুটি ৬৩ বলে ৭৬ রানের। রায়াদ এমরিটের ফুলটসে ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন শাহজাদ।

রানের গতি বাড়াতে চারে নামা শহিদ আফ্রিদি রাব্বিকে পুল করে ছক্কা মারার পরের বলেই ক্যাচ দেন মিড অফে। থিতু হয়ে যাওয়া মিঠুনও বলি হন রান বাড়ানোর চেষ্টায় (৪০ বলে ৩৮)।

শেষ দিকে রান বাড়ানোর কাজটি করেন জিয়া। এমরিটকে ছক্কা মারার পর শেষ ওভারে রাব্বিকে মারেন দুটি চার। ইনিংসের শেষ বলে লিয়াম ডসনের ছক্কায় দেড়শ ছাড়িয়ে যায় রংপুর।

বোলারদের নৈপুণ্যে সেই রানেই ধরা দিয়েছে অনায়াস জয়। শেষ চারের পথে রংপুর এগিয়েছে আরেক ধাপ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৫৪/৫ (শাহজাদ ৪৮, সৌম্য ১৭, মিঠুন ৩৮, আফ্রিদি ৭, জিয়াউর ২৩*, আনোয়ার ৭, ডসন ৭*; তাইজুল ০/২৭, এমরিট ১/৩২, মনির ০/২৮, রাব্বি ২/৩৯, পেরেরা ২/২৬)।

বরিশাল বুলস: ১৮.২ ওভারে ১২৫ (এমরিট ০, মালান ৩০, মুশফিক ১, মেন্ডিস ১২, পেরেরা ২৪, শাহরিয়ার ১৪, এনামুল ৭*, তাইজুল ৯, মনির ১, রাব্বি ০; সোহাগ ২/১২, আনোয়ার ১/২৫, নাইম ১/১৪, জিয়াউর ১/১৬, রুবেল ২/২১, আফ্রিদি ২/২৪, ডসন ২/১২)

ফল: রংপুর রাইডার্স ২৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ শাহজাদ