কুমিল্লার কাছে ফের হারল রাজশাহী

জেমস ফ্র্যাঙ্কলিনের দারুণ ব্যাটিংয়েও প্রতিশোধ নেওয়া হল না রাজশাহী কিংসের। বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ধরা ছোঁয়ার মধ্যে লক্ষ্য পাওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স জিতেছে সহজেই, ৮ উইকেটে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2016, 01:49 PM
Updated : 1 Dec 2016, 08:22 PM

ড্যারেন স্যামির দলকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। চলতি আসরে এটি মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের সব মিলিয়ে তৃতীয় জয়। ১০ ম্যাচে এটি রাজশাহীর পঞ্চম হার।

এই জয়ে পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরে উঠে এসেছে কুমিল্লা। রান রেটে বরিশাল বুলসকে পেছনে ফেলেছে তারা।

শাহাদাত হোসেনের করা শেষ ওভারে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ২৪ রান নিয়ে দলকে ৭ উইকেটে ১২৪ রানে নিয়ে যান নিউ জিল্যান্ডের অলরাউন্ডার ফ্র্যাঙ্কলিন।

দ্বিতীয় উইকেটে আহমেদ শেহজাদের সঙ্গে মারলন স্যামুয়েলসের চমৎকার জুটির ওপর ভর দিয়ে ১৮ ওভার ৪ বলে ২ উইকেট হারিয়ে সহজেই জিতেছে কুমিল্লা।

লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুত ফিরে যান ইমরুল কায়েস। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে উড়াতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

শুরুর সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি রাজশাহী। স্যামুয়েলস-শেহজাদের দৃঢ়তাভরা ব্যাটিংয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে সহজ জয়ের পথে এগিয়ে যায় কুমিল্লা। দ্বিতীয় উইকেটে ১১.৩ ওভারে ৯০ রানের জুটি উপহার দেন এই দুই জনে।

ফরহাদ রেজার বলে ক্যাচ দেয় শেষ হয় শেহজাদের ৪৫ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় গড়া ৪৬ রানের ইনিংস। খালিদ লতিফকে নিয়ে বাকিটুকু সহজেই সারেন স্যামুয়েলস।

মিরাজকে টানা তিনটি ছক্কা হাঁকানো স্যামুয়েলস শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে। তার ৪১ বলের ইনিংসটি গড়া চারটি ছক্কা ও দুটি চারে। 

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবারের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহীকে ভালো শুরু এনে দেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। দলে ফেরা নুরুল হাসানের সঙ্গে মুমিনুল হকের জুটিতে আসে ৩৮ রান।

পঞ্চম ওভারে রশিদ খানের বলে মুমিনুলের এলবিডব্লিউ দিয়ে রাজশাহীর দিক হারানোর শুরু। এক ওভারের বিরতির পর টানা তিন ওভারে ফিরে নুরুল, সাব্বির রহমান ও সামিত প্যাটেল। মাশরাফির বলে রশিদের তালুবন্দি হন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান নুরুল।

প্যাটেলকে এলবিডব্লিউ করা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পরের ওভারে ফিরে দেন আরও বড় ধাক্কা। পরপর দুই বলে তুলে নেন মিরাজ ও ড্যারেন স্যামির উইকেট। বিনা উইকেটে ৩৮ থেকে তখন রাজশাহীর স্কোর ৫৯/৬।

আগের ম্যাচে ধ্বংসস্তুপ থেকে রাজশাহীকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়া ফরহাদ রেজা ফিরেন দুই অঙ্কে গিয়েই। নিজের শেষ ওভারে এই অলরাউন্ডারকে বিদায় করেন মাশরাফি।

প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে দলের সংগ্রহ ১২০ ছাড়ান ফ্র্যাঙ্কলিন। ৩২ বলে তিনটি ছক্কা ও দুটি চারে অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে।

১২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সেরা বোলার অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিন। ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন আফগান লেগ স্পিনার রশিদ। বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ ৩ ওভারে ১৪ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। প্রথম দুই ওভারে ১৯ রান দেওয়া মাশরাফি শেষ পর্যন্ত ২৪ রানে নেন ২ উইকেট।

শাহাদাত ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। এই পেসার ছাড়া কুমিল্লার আর কোনো বোলার ওভার প্রতি ৬ রানের বেশি দেননি, তাই লক্ষ্যটা থাকে ধরা ছোঁয়ার মধ্যেই। স্যামুয়েলস, শেহজাদের ব্যাটে সেই লক্ষ্যে সহজেই পৌঁছায় কুমিল্লা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১২৪/৭ (মুমিনুল ২০, নুরুল ১৭, সাব্বির ৮, প্যাটেল ৪, মিরাজ ৭, ফ্র্যাঙ্কলিন ৪৪*, স্যামি ০, রেজা ১৩, হাসান ৪*; মাশরাফি ২/২৪, শাহাদাত ০/৪১, নাবিল ১/১৪, রশিদ ১/১৪, সাইফুদ্দিন ৩/১২, নাজমুল ০/১১)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৮.৪ ওভারে ১২৫/২ (ইমরুল ৯, শেহজাদ ৪৬, স্যামুয়েলস ৫৫*, লতিফ ৭*; সামি ০/১৯, মিরাজ ১/২৭, নাজমুল ০/৩১, প্যাটেল ০/১৪, হাসান ০/৯, রেজা ১/১৪, ফ্র্যাঙ্কলিন ০/৭)

ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৮ উইকেটে জয়ী।