তামিম, গেইলের ব্যাটে চিটাগংয়ের অনায়াস জয়

বিপিএলের এই আসরে প্রথম খেলতে নেমে প্রত্যাশিত ঝড় তুললেন ক্রিস গেইল। সঙ্গে তামিম ইকবালের অধিনায়কোচিত ব্যাটিংয়ে সহজেই ৯ উইকেটে রংপুর রাইডার্সকে হারিয়েছে চিটাগং ভাইকিংস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2016, 01:44 PM
Updated : 27 Nov 2016, 03:15 PM

সাকলাইন সজীব, শুভাশীষ রায়, তাসকিন আহমেদদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১২৪ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর।

গেইল-তামিম একবার নিজেদের শট খেলা শুরুর পর আর চিটাগংয়ের জয় নিয়ে কোনো সংশয় থাকেনি। শেষ পর্যন্ত ১৬ ওভারে কেবল গেইলের উইকেট হারিয়েই জয় তুলে নেয় দলটি।

ব্যাটিংয়ের সময় চোট পাওয়ায় ফিল্ডিংয়ে নামেননি রংপুরের অধিনায়ক নাঈম ইসলাম ও নিয়মিত উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শাহজাদ। এ দিন উইকেটের পেছনে দাঁড়ান মোহাম্মদ মিঠুন।

অফ স্পিনার সোহাগ গাজীকে শুরু থেকে টানা বোলিং করিয়ে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান গেইল-তামিমকে উইকেটে বেধে রেখেছিল রংপুর। চড়াও হওয়ার জন্য সোহাগের শেষ ওভারটি বেছে নেন গেইল। প্রথম তিন ওভারে মোটে ৭ রান দেওয়া অফ স্পিনারের শেষ ওভারে টানা দুই ছক্কায় নেন ১৬ রান।

টুর্নামেন্টে আঁটসাঁট বোলিং করা শহিদ আফ্রিদিকেও টানা দুই ছক্কা হাঁকান গেইল। তৃতীয়টির চেষ্টা করতে গিয়ে ফিরেন আনোয়ার আলির হাতে ধরা পড়ে। ভাঙে ৯ ওভার স্থায়ী ৭০ রানের জুটি। ৪০ রান করা গেইলের ২৬ বলের ইনিংসটি চার দুটি, ছক্কা চারটি।

এনামুল হককে নিয়ে বাকিটুকু সহজেই সারেন তামিম। টানা দুটি চার হাঁকিয়ে দলকে দারুণ জয় এনে দেওয়া তামিম অপরাজিত থাকেন ৬২ রানে। তার ৪৮ বলের ইনিংসটি গড়া ৯টি চার ও একটি ছক্কায়।  

অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে ৫৮ রানের জুটি গড়া এনামুল একটি ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২২ রানে। 

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববারের দ্বিতীয় ম্যাচে শুরু করেই নিজের ইনিংস বড় করতে পারনেনি রংপুরের টপ অর্ডারের কোনো ব্যাটসম্যান।

রানে ফিরতে মরিয়া সৌম্য সরকারের ব্যাটে ছিল স্বরূপে ফেরার আভাস। মোহাম্মদ নবিকে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে পরের ওভারেই ফিরে যান এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান (২৬)।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন মোহাম্মদ শাহজাদ ও মোহাম্মদ মিঠুন। তিন বলের মধ্যে এই দুই জনকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন আহমেদ। গতির কাছে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হন রংপুরের দুই ব্যাটসম্যান।

তাসকিনের জোড়া আঘাত সামলানোর আগেই আহত হয়ে ফিরে যান অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। দুই অঙ্কে পৌঁছেই বিদায় নেন শহিদ আফ্রিদি ও লিয়াম ডসন। অফ স্পিনার নবির বলে চড়াও হতে গিয়ে ক্যাচ দেন এই দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

বিশাল ছক্কা হাঁকানোর সুনাম আছে মুক্তার আলির। কিন্তু এদিন ব্যাটে বল ঠিক মতো লাগাতেই পারেননি তিনি। ইমরান খানের বলে দৌড়ে এসে তাকে রান আউট করেন উইকেটরক্ষক এনামুল হক।

১৩ বলে একটি করে ছক্কা-চারে ২০ রানে অপরাজিত আনোয়ার আলির ব্যাটে কোনোমতে ১২০ পার হয় রংপুরের সংগ্রহ।

বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন ৪ ওভারে দেন ১৭ রান। সমান রান দিয়ে সৌম্যর উইকেট নেন পেসার শুভাশীষ। তাসকিন ও নবি নেন দুটি করে উইকেট।

টানা চতুর্থ আর সব মিলিয়ে ৯ ম্যাচে পঞ্চম জয় নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা চিটাগংয়ের পয়েন্ট ১০। আট ম্যাচে তৃতীয় হারের স্বাদ পাওয়া রংপুরের পয়েন্টও ১০। পঞ্চম স্থানে থাকা রাজশাহীর পয়েন্ট ৮ ম্যাচে ৮। ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট করে নিয়ে প্রথম দুটি স্থানে আছে ঢাকা ডায়নামাইটস ও খুলনা টাইটানস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১২৪/৬ (শাহজাদ ২১, সৌম্য ২৬, মিঠুন ১২, ডসন ১৪, নাঈম ৩* (আহত অবসর), আফ্রিদি ১৩, আনোয়ার ২০*, মুক্তার ৪, সোহাগ ১*; সাকলাইন ০/১৭, শুভাশীষ ১/১৭, ইমরান ০/২৮, নবি ২/৩১, তাসকিন ২/২৫)

চিটাগং ভাইকিংস: ১৬ ওভারে ১২৮/১ (তামিম ৬২*, গেইল ৪০, এনামুল ২২*; সোহাগ ০/২৩, আনোয়ার ০/১৭, রুবেল ০/১৭, আফ্রিদি ১/২৫, ডসন ০/২৫, সানি ০/১৫, মুক্তার ০/৫)

ফল: চিটাগং ৯ উইকেটে জয়ী

ম্যাচ অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল