খুলনাকে আবার হারিয়ে শীর্ষে রংপুর

প্রতিশোধ নেওয়া হল না খুলনা টাইটানসের। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই মাহমুদউল্লাহর দলকে টেক্কা দিয়ে আবার জয় পেয়েছে রংপুর রাইডার্স। চট্টগ্রামে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৭ উইকেটের জয়ে শীর্ষে উঠেছে নাঈম ইসলামের দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2016, 08:47 AM
Updated : 22 Nov 2016, 12:27 PM

খুলনার সমান ১০ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে এক ম্যাচ কম খেলা রংপুর।

আগেরবারের মতো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েনি খুলনার ব্যাটিং। তবে বড় সংগ্রহও গড়তে পারেনি তারা। আরাফাত সানি, রুবেল হোসেন, সোহাগ গাজীদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১২৫ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা। 

দুই দলের প্রথম দেখায় ৪৪ রানে অলআউট হওয়া খুলনা হেরেছিল ৯ উইকেটে। তারপর টানা চার ম্যাচ জিতেছিল দলটি। কিন্তু আবার রংপুরের মুখোমুখি হয়ে দিক হারাল দলটি।

মোহাম্মদ মিঠুন, মোহাম্মদ শাহজাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৯ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় রংপুর। খুলনার জয়রথ থামিয়ে টানা তৃতীয় জয় পেয়েছে রংপুর।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। তিন রান করেই ফিরে যান সৌম্য সরকার। জুনায়েদ খানের বলে দারুণ ক্যাচ নেন শফিউল ইসলাম। তবে উইকেটরক্ষক রিকি ওয়েসেলসে এগিয়ে আসায় দুই জনের মধ্যে সংঘর্ষও হয়। তবে হাত থেকে বল ছাড়েননি ফিল্ডার। 

শুরুতে উইকেট উইকেট নেওয়ার সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি খুলনা। শাহজাদ-মিঠুনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছায় রংপুর। ১০ ওভারে দুই ব্যাটসম্যান গড়েন ৭০ রানের জুটি।

হাত ফস্কে একটি চার উপহার দেওয়া অলক কাপালী দারুণ এক ক্যাচে বিদায় করেন শাহজাদকে। চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৭ রান করা শাহজাদ অফ স্পিনার মাহমুদউল্লাহে লংঅন দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন।

চার নম্বরে উঠে আসে শহিদ আফ্রিদি এক ওভারে দুইবার বেঁচে যান। প্রথমবার বেনি হাওয়েলের বলে বোল্ড হয়ে বাঁচেন ‘নো’ বলের কল্যাণে। পরে পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডারের ফিরতি ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি ইংলিশ পেসার।

নিজের শেষ ওভারে ফিরে আফ্রিদিকে বোল্ড করেন হাওয়েল। ততক্ষণে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে যায় রংপুর। লিয়াম ডসনকে নিয়ে বাকিটুকু সহজেই সারেন মিঠুন। ৪১ বলে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে কাঙ্ক্ষিত শুরু পায়নি খুলনা। সানির স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ২০ রানের মধ্যে ফেরেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আব্দুল মজিদ ও আন্দ্রে ফ্লেচার।

হাসানুজ্জামানের জায়গায় দলে ফেরা মজিদ বোল্ড হন। অফ স্টাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফ্লেচার আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন।

দলকে আরও চাপে ফেলে দ্রুত ফিরে যান মাহমুদউল্লাহও। আফ্রিদির বলে মিডউইকেটে ক্যাচ দেন অধিনায়ক।

দ্রুত তিন উইকেট হারানো খুলনা প্রতিরোধ গড়ে রিকি ওয়েসেলস ও তাইবুর রহমানের ব্যাটে। প্রতিরোধ পর্ব ঠিকঠাক করলেও এই দুই জনে পারেননি রানের গতি বাড়াতে। ৯.১ ওভার গড়েন ৫৬ রানের জুটি।

পরিস্থিতির দাবি মেটাতে শেষের দিকে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন দুই থিতু ব্যাটসম্যান। তখনই আঘাত হানেন রুবেল। ৫ বলের মধ্যে ফিরিয়ে দেন ওয়েসেলস (৩৩ বলে ২৭) ও তাইবুরকে (৩৭ বলে ৩২)।

শেষটায় আফ্রিদির বলে আরিফুল হকের দুই ছক্কায় ১২০ ছাড়ায় খুলনার সংগ্রহ। ১৩ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।

দুই দলের প্রথম দেখায় শূন্য রানে তিন উইকেট পাওয়া বাঁহাতি স্পিনার সানি এবার ১৬ রানে নিয়েছেন দুই উইকেট। রুবেল ১৯ রানে নেন দুই উইকেট। লেগ স্পিনার আফ্রিদি ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ৩০ রান। কোনো উইকেট না পেলেও দুই ওভারে মাত্র ৬ রান দেন অফ স্পিনার সোহাগ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইটানস: ২০ ওভারে ১২৫/৬ (ফ্লেচার ৮, মজিদ ১০, ওয়েসেলস ২৭, মাহমুদউল্লাহ ১১, তাইবুর ৩২, আরিফুল ২২*, হাওয়েল ৩, কাপালী ৩*; সানি ২/১৬, আনোয়ার ০/১৯, ডসন ০/২৭, আফ্রিদি ২/৩০, সোহাগ ০/৬, রুবেল ২/১৯)।

রংপুর রাইডার্স: ১৯ ওভারে ১২৯/৩ (শাহজাদ ৩৭, সৌম্য ৩, মিঠুন ৪৯*, আফ্রিদি ২৬, ডসন ৫*; মোশাররফ ০/২৩, জুনায়েদ ১/২৩, হাওয়েল ১/৩১, শফিউল ০/২৩, কাপালী ০/১৪, মাহমুদউল্লাহ ১/১৪)

ফল: রংপুর ৭ উইকেটে জয়ী।