আবার মাশরাফিদের হারাল তামিমের চিটাগং

বড় সংগ্রহ গড়েও লাভ হলও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ১৮৩ রান নিয়েও হেরে গেল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। মোহাম্মদ নবি, শোয়েব মালিকদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2016, 01:52 PM
Updated : 21 Nov 2016, 05:03 PM

চলতি আসরে শিরোপাধারীদের বিপক্ষে তামিমদের এটা দ্বিতীয় জয়। সাত ম্যাচ তিন জয়ে চার নম্বরে উঠে এসেছে চিটাগং। সমান ৬ পয়েন্ট হলেও রান রেটে পিছিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে এক ম্যাচ কম খেলা বরিশাল বুলস। ৭ ম্যাচে ১ জয় পাওয়া কুমিল্লা আছে তলানিতেই।

লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা পায় চিটাগং। অভিষেকে নিজের প্রথম ওভারে ১৮ রান দেন অফ স্পিনার হাবিবুর রহমান। তবে আক্রমণে এসেই আঘাত হানেন মাশরাফি। পাঁচটি চারে ২১ রান করা ডোয়াইন স্মিথকে এলবিডব্লিউ করেন অধিনায়ক।

৬ রানে ইমরুলের হাতে জীবন পাওয়া তামিম ইকবাল দ্বিতীয় উইকেটে এনামুলের সঙ্গে ৭.১ ওভারে গড়েন ৬২ রানের জুটি। বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি ভাঙেন সাত নম্বর বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা রায়ান টেন ডেসকাটে। পরপর দুই ওভারে বোল্ড করেন তামিম ও এনামুলকে।

স্টাম্পের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে কাট করতে গিয়ে পারেননি একটি করে ছক্কা- চারে ৩০ রান করা তামিম। আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলে ফিরে যান এনামুল। ৩০ বলে দুটি করে ছক্কা চারে করেন ৪০ রান।

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে টানা তিন চারে আবার দলকে লড়াইয়ে ফেরান দলে ফেরা শোয়েব মালিক। ৬.৩ ওভার মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ৬৪ রানের জুটিতে দলকে নিয়ে যান জয়ের কাছে। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে তাকে বোল্ড করেন সোহেল তানভির।  

পাঁচটি চার হাঁকিয়ে মালিক (২৫ বলে ৩৮) ফিরে যাওয়ার সময় চিটাগংয়ের দরকার ছিল ১১ বলে ১৭ রান। পাকিস্তানের অলরাউন্ডার ফিরে যাওয়ার পর পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেন নবি। তানভিরকে ছক্কা হাঁকিয়ে সমীকরণ একটু সহজ করেন। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে চার-ছক্কায় ম্যাচ শেষ করে দেন আফগান এই অলরাউন্ডার।

২৪ বলে ৫টি ছক্কা ও দুটি চারে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন নবি।

স্পিনারদের দিয়ে দুই ওভার বল করান মাশরাফি। তাতে কোনো উইকেট না দিয়ে ৩১ রান সংগ্রহ করে চিটাগং। চার ওভার বল করেছেন এমন বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম ৩২ রান দিয়েছেন শরীফ। বোলাররা খুব একটা ভালো করেননি, তাদের কাজটা আরও অনেক কঠিন হয়ে যায় বাজে ফিল্ডিংয়ে।

এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সোমবারের দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লাকে ভালো শুরু এনে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও খালিদ লতিফ। ৪.১ ওভারে এই দুই জনে গড়েন ২৯ রানের জুটি। তাসকিন আহমেদের বল ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরেন নাজমুল, ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।

আগের ম্যাচে চার নম্বরে ব্যাট করা ইমরুল এবার খেলেন তিনে। লতিফ সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে। তামিম ইকবালের সরাসরি থ্রোয়ে শেষ হয় ইমরুলের আশা জাগানো ইনিংস। রান আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩৬ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ভাঙে ৮ ওভার স্থায়ী ৬৮ রানের জুটি।

৩৮ বলে আসে লতিফের অর্ধশতক। ইমরুলের বিদায়ের পর চড়াও হন পাকিস্তানের এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। নবির এক ওভারে হাঁকান তিনটি ছক্কা।

৬.৫ ওভারে লতিফ-শেহজাদ গড়েন ৭০ রানের জুটি। শেষ ওভারে রান আউট হওয়ার ৭৬ রান করেন লতিফ। তার ৫৩ বলের ইনিংসটি গড়া ৫টি ছক্কা ও ৬টি চারে। শেহজাদ পাঁচটি চারে অপরাজিত থাকেন ৪০ রানে।

ইমরান খান ছাড়া চিটাগংয়ের আর বোলারের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ছয়। নবি ৩ ওভারে দিয়েছেন ৩৫ রান। তাসকিন চার ওভারে ৪৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। অভিষেকে ৩৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তরুণ পেসার শহিদুল ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৮৩/৩ (নাজমুল ১৭, লতিফ ৭৬, ইমরুল ৩৬, শেহজাদ ৪০*, টেন ডেসকাটে ৯*; মালিক ০/১৬, রাজ্জাক ০/২৮, নবি ০/৩৫, তাসকিন ১/৪৪, শহিদুল ০/৩৭, ইমরান ০/২১)

চিটাগং ভাইকিংস: ১৯.২ ওভারে ১৮৬/৪ (তামিম ৩০, স্মিথ ২১, এনামুল ৪০, মালিক ৩৮, নবি ৪৬*, জহুরুল ১*; হাবিবুর ০/১৮, তানভির ১/৩৩, মাশরাফি ১/৩৪, শরীফ ০/৩২, সাইফুদ্দিন ০/৪০, নাজমুল ০/১৩, ডেন ডেসকাটে ২/১৫)

ফল: চিটাগং ভাইকিংস ৬ উইকেটে জয়ী।