অবশেষে মাশরাফির কুমিল্লার জয়

এই প্রথম কোনো দলকে দেড়শ’ ছাড়ানো লক্ষ্য দিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই প্রথম জয় পেল বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। টানা পাঁচ হারের পর রাজশাহী কিংসকে ৩২ রানে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2016, 01:54 PM
Updated : 19 Nov 2016, 04:48 PM

টানা তৃতীয় হারের তিক্ত স্বাদ পেল ড্যারেন স্যামির রাজশাহী। পাঁচ ম্যাচে তাদের জয় একটি।

শেষে ঝড় তুলতে না পারলেও নাজমুল হোসেন শান্ত ও ইমরুল কায়েসের ব্যাটে প্রথমবারের মতো দেড়শ’ ছাড়ায় কুমিল্লা। ৫ উইকেটে তারা করে ১৫২ রান। চলতি আসরে প্রথম ইনিংসে তাদের আগের সর্বোচ্চ ছিল ১২৯ রান।

জবাবে সোহেল তানভির ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের দারুণ বোলিংয়ে ১৯ ওভারে ১২০ রানে অলআউট হয়ে যায় রাজশাহী। এবারের আসরে এই প্রথম কোনো দলকে অলআউট করতে পারল কুমিল্লা।

লক্ষ্য তাড়ায় এক প্রান্ত ধরে রাখেন মুমিনুল হক। কিন্তু অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট হারানোয় কখনও সেভাবে জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি রাজশাহী। পরপর দুই বলে জুনায়েদ সিদ্দিক ও সাব্বির রহমানকে ফিরিয়ে তাদের সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন তানভির।

অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন দ্রুত ফিরিয়ে দেন উমর আকমল ও নুরুল হাসানকে। দুই জনের কেউই যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।

তালগোল পাকানো এক ওভারে মুমিনুলকে ফিরিয়ে দেন রায়ান টেন ডেসকাটে। পাঁচটি ওয়াইড করা সেই ওভারে ১৯ রান দেন তিনি। শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে মুমিনুল দলের বিপদ আরও বাড়ান। পরের ওভারের প্রথম বলে স্যামি রান আউট হলে ম্যাচ পুরোপুরি কুমিল্লার দিকে হেলে পড়ে।    

স্যামির বিদায়ের পর বেশিদূর এগোয়নি রাজশাহীর ইনিংস। তানভির-সাইফুদ্দিনের দাপটে রাজশাহীর শেষ ৯ ব্যাটসম্যানের মাত্র একজন দুই অঙ্ক পর্যন্ত যেতে পারেন। ১২ রান করা সামিত প্যাটেলকে বোল্ড করেন মাশরাফি।

১৮ রানে চার উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সেরা বোলার তানভির। সাইফুদ্দিন ৩ উইকেট নেন ২৭ রানে।

এর আগে টানা পাঁচ ম্যাচ হেরে মরিয়া কুমিল্লা পরিবর্তন আনে উদ্বোধনী জুটিতে। ইমরুল কায়েস-লিটন দাসের জায়গায় ইনিংস শুরু করেন নাজমুল ও খালিদ লতিফ। পাঁচ নম্বরে উঠে আসেন মাশরাফি। 

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবারের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লার। ৬ রান করেই ফিরে যান লতিফ। আগের দিন মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য সমালোচনার মুখে পড়া আহমেদ শেহজাদ বিদায় নেন দুই চার হাঁকিয়েই।

ইমরুলের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৪৩ রানের জুটি গড়েন নাজমুল। তবে লম্বা সময় ক্রিজে থাকলেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি তরুণ এই ব্যাটসম্যান। ড্যারেন স্যামির বলে পুল করতে গিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ধরা পড়েন তিনি। চারটি চারে ৪১ রান করতে ৪০ বল খেলেন নাজমুল।

চার নম্বরে নামা ইমরুল খেলছিলেন দারুণ। রান আউটে শেষ হয় তার ২৫ বল স্থায়ী ৩৪ রানের ইনিংস। মাশরাফির ওপরে উঠে আসা সফল হয়নি। ফিরেন ১০ বলে ১০ রান করে।

অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেটে ৪.৫ ওভার ৪১ রানের জুটি গড়েন রায়ন টেন ডেসকাটে ও সোহেল তানভির। তাদের জুটিতে ছিল কেবল দুটি চার।

পাঁচ বোলার ব্যবহার করেন রাজশাহীর অধিনায়ক স্যামি। আঁটসাঁট বোলিং করেন দুই পেসার মোহাম্মদ সামি ও ফরহাদ রেজা। ৩৪ রানে দুই উইকেট নেন অধিনায়ক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫২/৫ (নাজমুল ৪১, লতিফ ৬, শেহজাদ ১১, ইমরুল ৩৪, মাশরাফি ১০, টেন ডেসকাটে ২১*, তানভির ১৫*; মিরাজ ১/২৯, সামি ০/২৬, রেজা ১/২৬, হাসান ০/৩২, স্যামি ২/৩৪)

রাজশাহী কিংস: ১৯ ওভারে ১২০ (মুমিনুল ৫৩, জুনায়েদ ১০, সাব্বির ০, আকমল ৩, নুরুল ৮, প্যাটেল ১২, স্যামি ০, মিরাজ ৫, রেজা ১, হাসান ৬*, সামি ৭; নাজমুল ০/১৩, মাশরাফি ১/১৫, তানভির ৪/১৮, সাইফুদ্দিন ৩/২৭, শরীফ ০/২৪, টেন ডেসকাটে ১/১৯)

ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৩২ রানে জয়ী