১২৮ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার এমন ধস!

কেপ টাউন বা ট্রেন্ট ব্রিজ, এজবাস্টন কিংবা গল, হায়দরাবাদ থেকে মেলবোর্ন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের সমার্থক হয়ে গেছে ধস। তবে এবার হোবার্ট ছাড়িয়ে গেছে যেন সব কিছুকেই। দ্বিতীয় ইনিংসে যে ধস নামল, তেমন কিছুর নজির খুঁজতে যেতে হচ্ছে যে ১২৮ বছর পেছনে!

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2016, 07:22 AM
Updated : 15 Nov 2016, 07:23 AM

হোবার্ট টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইনিংস ও ৮০ রানে হেরে সিরিজও হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছে তারা ৩২ রানে। নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যটিং ধসকে স্পর্শ করেছে এই ধস।

সেই ১৮৮৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিডনিতে সবশেষ এমন ধস নেমেছিল অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ে। প্রথম ইনিংসে ৪২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল পার্সি ম্যাকডনেলের অস্ট্রেলিয়া। ৫টি করে উইকেট নিয়েছিলেন জর্জ লোহম্যান ও ববি পিল। সেই ইনিংসে ৩২ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

সেই বিপর্যয় তবু ছিল বোধগম্য। সেই যুগে উইকেট ঢেকে রাখার নিয়ম বা রীতি ছিল না। সিডনির উইকেট ছিল বৃষ্টিভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে। গোটা ম্যাচেই ধুঁকতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। দুই ইনিংসে ইংল্যান্ডের রান ছিল ১১৩ ও ১৩৭, অস্ট্রেলিয়ার ৪২ ও ৮২।

কিন্তু এবার উইকেট তেমন কোনো ‘মাইন ফিল্ড’ ছিল না। স্রেফ খানিকটা সিম আর সুইং করেছে। তাতেই কুপোকাত এক সময়ের প্রবল পরাক্রমশালী দলটির ব্যাটসম্যানরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে অমন ধসের আগে প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল স্টিভেন স্মিথের দল। গোটা টেস্টে খেলতে পেরেছে মাত্র ৫৫৮ বল। গত ৮৮ বছরে দেশের মাটিতে কোনো টেস্টে এত কম বল খেলেনি অস্ট্রেলিয়া। সবশেষ ১৯২৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রিসবেনে স্বাগতিকরা খেলেছিল ৪৫৭ বল।

নিজেদের আরেকটি বিব্রতকর রেকর্ডও স্পর্শ করেছে স্মিথের এই অস্ট্রেলিয়া। এই টেস্টে দু অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই আউট হয়েছে দলের ১৬ ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাসে এমনটি হয়েছিল আর একবারই। ১৯১২ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক অঙ্কে আউট হয়েছিল ১৬ অস্ট্রেলিয়ান।

গোটা টেস্টে দুই দল মিলিয়েই মোট খেলা হয়েছে ১৯৩.৫ ওভার। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এর চেয়ে কম ওভারে কোন টেস্টে ফল হয়েছিল সেই ১৯৫০ সালে। অ্যাশেজের ব্রিসবেন টেস্টে।

সব কিছুই ফুটিয়ে তুলছে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের বর্তমান চিত্র। ম্যাচ শেষে অসহায় কণ্ঠে অধিনায়ক স্মিথের সরল স্বীকারোক্তিই বলে দিচ্ছে বাস্তবতা, “বল সিম করুক, স্পিন করুক বা সুইং, কোনোটিরই জবাব এই মুহূর্তে জানা নেই আমাদের!”