শেষের চাপ জয় করে নায়ক মাহমুদউল্লাহ

প্রয়োজনীয়তাই অনেক সময় জন্ম দেয় নায়কের। মাহমুদউল্লাহ যেমন হলেন। শেষ ওভারে বল হাতে নিয়েছিলেন বিকল্প নেই বলে। অসাধারণ বোলিংয়ে সেই তিনিই খুলনা টাইটানসকে জেতালেন রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2016, 02:33 PM
Updated : 9 Nov 2016, 03:34 PM

জয়ের জন্য শেষ ওভারে রাজশাহীর প্রয়োজন ছিল ৭ রান, হাতে ছিল ৩ উইকেট। প্রথম দুই বলে ওয়াইডসহ মাহমুদউল্লাহ দেন তিন রান। পরের চার বলে রান দেননি একটিও, ৩ উইকেট নিয়ে গুটিয়ে দেন রাজশাহীকে। খুলনা জেতে ৩ রানে।

অফ স্পিনার হয়ে শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসা যথেষ্টই ঝুঁকির ছিল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ ব্যাখ্যা করলেন নিজেকেই শেষে আনার কারণ।

“শেষ মুহুর্তে আমার হাতে স্ট্রাইক বোলার হিসেবে শফিউল আর জুনাইদ ছিল। জুনাইদকে মাঝখানে এক ওভার করিয়েছি, কারণ উইকেট দরকার ছিল। সৌভাগ্যবশত, পরের ওভারে শফিউল আমাদেরকে সেই ব্রেক থ্রু’টা এনে দেয়। স্যামির উইকেটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শেষ ওভারে যেহেতু অন্য কোন বিকল্প ছিল না, তাই আমার বোলিংয়ে আসতে হয়েছে।”

পরিস্থিতি প্রচণ্ড চাপের হলেও মাহমুদউল্লাহ চেষ্টা করেছেন স্বাভাবিক থাকতে। শেষ বলের আগে অবশ্য অনুভব করছিলেন একটু চাপ।

“আমি নিজের উপর খুব একটা চাপ নিচ্ছিলাম না। আমি শুধু ভাবছিলাম যে যদি ভালো জায়গায় বল ফেলতে পারি আর ভাগ্যের সহায়তা পাই, তাহলে হয়তো ম্যাচ জিততেও পারি। তবে শেষ বলটা করার সময় চাপে ছিলাম। ছয় বলে সাত রান রাজশাহীর জন্য খুবই সহজ লক্ষ্য ছিল। এ রকম একটা ম্যাচ জিততে পেরে বেশ ভালো লাগছে।”

ওভারের শেষ দু বল খেলেছেন নাজমুল অপু। প্রয়োজন ছিল তখন চার রান। এমনিতে বোলার হলেও স্লগ সুইপটা বেশ ভালো খেলেছেন এই বাঁহাতি। লোয়ার অর্ডারদের ব্যাটের কানায় লেগে চার হওয়ার ঘটনাও ক্রিকেটে আছে অনেকে। এজন্যই শেষে একটু ভাবনায় ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

“আমি ওইটাই চিন্তা করছিলাম (ব্যাটের কানায় লাগে কিনা)। আমার পরিকল্পনা ছিল আউটসাইড অফস্টাম্প। আমি জানি, অপুর একটা ভালো অপশন হচ্ছে স্লগ সুইপ। তাই আমি ওই জায়গায় বল ফেলতে চাচ্ছিলাম না।”

“শেষের আগের বলটায় আমি একটু থেমেছিলাম, দেখতে চেয়েছিলাম সে কি করে। দেখি যে সে আসলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছে। তারপর আমি ঠিক করেছি অফস্টাম্পের বাইরে বল করবো। এক্সট্রা কভার ফিল্ডারটাও বের করে রেখেছিলাম। অপু মিস করেছে, আমরাও ম্যাচটা জিতে গেছি।”

অথচ ম্যাচ ছিল রাজশাহীর হাতের মুঠোয়। শেষ ১২ বলে রাজশাহীর প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। হাতে তখনও ৪ উইকেটে। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ফরহাদ রেজার বাউন্ডারিতে সমীকরণ নেমে আসে ১১ বলে ৯ রান। এই ম্যাচও শেষ পর্যন্ত হেরেছে রাজশাহী। মাহমুদউল্লাহও বললেন, সহজ ম্যাচ হেরেছে রাজশাহী।

“আমার মনে হয়, ওদের জন্যই খেলাটা সহজ ছিল। ওরা যদি ওদের পরিকল্পনাগুলো ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতো, ওরাই জিতত। যদি রাজুর আউটটা দেখেন, বলটা ওর নাগালে ছিল, কিন্তু সে ভালোভাবে টাইমিং করতে পারেনি। রাজুর উইকেটটা আমাকে একটা মোমেন্টাম দিয়েছে। তখনই আমি ভাবা শুরু করেছি যে, ফলাফলটা আমাদের দিকেও আসতে পারে।”