জিম্বাবুয়ে ও ‘দুর্বল’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে এই প্রথম কোনো দলকে টেস্টে হারাল বাংলাদেশ। টেস্ট ইতিহাসে এটা তাদের অষ্টম জয়। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে স্মরণীয় জয়।
ম্যাচ ও সিরিজ সেরা মিরাজ
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস ধসিয়ে দিতে মূল ভূমিকা রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭৭ রানে ৬ উইকেট নেন বাংলাদেশের তরুণ এই অফস্পিনার। প্রথম ইনিংসেও ৬ উইকেট নেন তিনি, খরচ করেন ৮২ রান। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতে। দুই টেস্ট মিলিয়ে ১৯ উইকেট পাওয়া মিরাজ জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কারও।
ঢাকা টেস্টের স্কোরকার্ড
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৬৩.৫ ওভারে ২২০ (তামিম ১০৪, ইমরুল ১, মুমিনুল ৬৬, মাহমুদউল্লাহ ১৩, সাকিব ১০, মুশফিক ৪, সাব্বির ০, শুভাগত ৬, মিরাজ ১, তাইজুল ৫*, কামরুল ০; ওকস ৩/৩০, ফিন ০/৩০, মইন ৫/৫৭, আনসারি ০/৩৬, স্টোকস ২/১৩, রশিদ ০/৪৪)।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৮১.৩ ওভারে ২৪৪ (কুক ১৪, ডাকেট ৭, রুট ৫৬, ব্যালান্স ৯, মইন ১০, স্টোকস ০, বেয়ারস্টো ২৪, আনসারি ১৩, ওকস ৪৬, রশিদ ৪৪*, ফিন ০; মিরাজ ৬/৮২, সাকিব ১/৪১, তাইজুল ৩/৬৫, কামরুল ০/১৬, শুভাগত ০/৮, সাব্বির ০/১২)।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৬৬.৫ ওভারে ২৯৬ (তামিম ৪০, ইমরুল ৭৮, মুমিনুল ১, মাহমুদউল্লাহ ৪৭, সাকিব ৪১, মুশফিক ৯, সাব্বির ১৫, শুভাগত ২৫*, তাইজুল ৫, মিরাজ ২, কামরুল ৭; ফিন ০/১৮, মইন ১/৬০, আনসারি ২/৭৬, স্টোকস ৩/৫২, রশিদ ৪/৫২, ওকস ০/১৪)।
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৩) ৪৫.৩ ওভারে ১৬৪ (কুক ৫৯, ডাকেট ৫৬, রুট ১, ব্যালান্স ৫, মইন ০, স্টোকস ২৫, বেয়ারস্টো ৩, ওকস ৯*, রশিদ ০, আনসারি ০, ফিন ০, মিরাজ ৬/৭৭, সাকিব ৪/৪৯, শুভাগত ০/২৫, তাইজুল ০/৭)
মিরাজের ষষ্ঠ উইকেটে জয়
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন স্টিভেন ফিন (৮ বলে শূন্য)। তার বিদায়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়টা পায় বাংলাদেশ। ১০৮ রানের জয়ে ১-১ সমতায় সিরিজ শেষ করে তারা। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করা মিরাজ ৬ উইকেট নেন ৭৭ রানে। সাকিব আল হাসান ৪ উইকেট নেন ৪৯ রানে।
দারুণ এক ওভারে বেন স্টোকস, আদিল রশিদ ও জাফর আনসারিকে আউট করে বাংলাদেশকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে আসেন সাকিব আল হাসান। ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান আনসারির আউটের ক্যাচটি দুর্দান্ত। কয়েকবার চেষ্টায় হাতে নিতে পারেননি মুমিনুল হক, পাশেই থাকা আরেক ফিল্ডার ইমরুল কায়েস বল তালুবন্দি করেন। ১৬১ রানে পড়ে ইংল্যান্ডের নবম উইকেট।
সাকিবের তৃতীয় শিকার রশিদ
প্রথম ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া আদিল রশিদকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব আল হাসান। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি ইংলিশ অলরাউন্ডারের। ঠিক আগের বলেই বেন স্টোকসকে আউট করেন সাকিব। তার জোড়া আঘাতের সময় জয় থেকে ১১২ রান দূরে ইংল্যান্ড।
সাকিবের মধুর প্রতিশোধ
রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন বেন স্টোকস
মেহেদী হাসান মিরাজের জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়ে বেন স্টোকসকে আউট দেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। রিভিউ নেন ইংলিশ অলরাউন্ডার। গ্লাভসে বলের হালকা ছোঁয়া লাগায় বেঁচে যান ঠিক মতো রিভার্স সুইপ করতে না পারা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সে সময় তার রান ছিল ২০।
হাতছাড়া হল কঠিন সুযোগ
নিজের বলে দুরূহ একটা সুযোগ হাতছাড়া করেন সাকিব আল হাসান। বেন স্টোকসের ব্যাট-প্যাড হয়ে আসা ক্যাচ অনেক এগিয়ে ঝাঁপিয়ে হাতে পেয়েও জমাতে পারেননি বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সে সময় ১৩ রানে ব্যাট করছিলেন স্টোকস।
মিরাজের পঞ্চম শিকার বেয়ারস্টো
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও পাঁচ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। জনি বেয়ারস্টো ব্যাটের কানায় লেগে এত সহজ ক্যাচ উঠে যে শুভাগত হোম চৌধুরী তালুবন্দি করার আগেই স্টাম্পের আশেপাশে থাকা বাংলাদেশের ফিল্ডাররা উৎসব শুরু করেন। ১৩৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। জয় থেকে তখনও তারা ১৩৪ রানে দূরে।
অস্ট্রেলিয়ার ক্লারি গ্রিমেট ও ভারতের নরেন্দ্র হিরওয়ানির পর তৃতীয় স্পিনার হিসেবে নিজের প্রথম দুই টেস্টের তিন ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন মিরাজ। চট্টগ্রাম টেস্টে ৮০ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৮২ রানে ৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসের এক পর্যায়ে ৬৬ রানে ৫ নেন তিনি।
দারুণ এক ঘণ্টা
মিরাজের চতুর্থ শিকার ইংলিশ অধিনায়ক
রিভিউ নিয়ে একবার বাঁচলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না অ্যালেস্টার কুক। (১১৭ বলে ৫৯) মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কুকের ব্যাট ছুঁয়ে আসা ক্যাচ সিলি পয়েন্টে কোনোমতে তালুবন্দি করেন মুমিনুল হক। ১২৭ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে অধিনায়ক ফিরে যাওয়ার সময় ইংল্যান্ডের দরকার আরও ১৪৬ রান।
দ্বিতীয় ইনিংস এ পর্যন্ত ৫৫ রানে ৪ উইকেট নিলেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ৮২ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টেই ১০ উইকেটের দেখা পেয়ে গেলেন ১৯ বছর বয়সী অফ স্পিনার।
শূন্য রানে মইনকে ফেরালেন মিরাজ
গ্যারি ব্যালান্সকে বিদায় করার পর সেই ওভারেই মইন আলিকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর রিভিউ নেন ইংলিশ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তাতে সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি, ১২৪ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেব আউট হন তিনি। অতিথিদের তখন প্রয়োজন আরও ১৪৯ রান। মইন মিরাজের তৃতীয় শিকার।
গ্যারি ব্যালান্সকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অফ স্পিনারের বলে ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যাওয়া ক্যাচ মিড অফ থেকে দৌড়ে এসে তালুবন্দি করেন তামিম ইকবাল। ১৪ বলে ৫ রান করে ব্যালান্স ফিরে যাওয়ার সময় ইংল্যান্ডের স্কোর ৩ উইকেটে ১২৪ রান। জয়ের জন্য তখন আরও ১৪৯ রান চাই তাদের।
কুকের অর্ধশতক
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে দুই রান নিয়ে সিরিজে নিজের প্রথম অর্ধশতকে পৌঁছান অ্যালেস্টার কুক। ইংলিশ অধিনায়ক ১০১ বলে পঞ্চাশ ছুঁতে চারটি চার হাঁকান। ৩০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১১৮ রান। আরও ১৫৫ রান চাই অতিথিদের।
রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন কুক
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন অ্যালেস্টার কুক। রিপ্লতে দেখা যায় অল্পের জন্য বল লেগ স্টাম্প লাগতো না। তাই বেঁচে যান ইংলিশ অধিনায়ক। সে সময় ৪৪ রানে ব্যাট করছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
ফিরেই প্রথম বলে উইকেট সাকিবের
বোলিংয়ে ফিরেই আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। এই বাঁহাতি স্পিনারের ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন জো রুট (২ বলে ১)। অন্য প্রান্তে থাকা অধিনায়ক কুকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলে রিভিউ না নিয়ে ফিরেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ১০৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের প্রয়োজন আর ১৬৮ রান।
প্রথম আঘাত মিরাজের
বিনা উইকেটে ১০০ করে চা-বিরতিতে ইংল্যান্ড
চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় ইংল্যান্ডের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০০ রান। বেন ডাকেট ৫৬ ও অ্যালেস্টার কুক ৩৯ রানে অপরাজিত। জয়ের জন্য আর ১৭৩ রান চাই অতিথিদের।
নতুন বলে খুব একটা সুযোগ তৈরি করতে পারেননি বাংলাদেশের স্পিনাররা। বারবার বোলিং পরিবর্তন করেও কোনো লাভ হয়নি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে উল্টো স্বাগতিকদের চাপে ফেলেন ডাকেট। অন্য দিকে ধীর স্থির ব্যাটিংয়ে সিরিজে নিজেদের প্রথম শতরানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন অধিনায়ক কুক ও ডাকেট।
ডাকেটের প্রথম অর্ধশতক
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে সুইপ করে চার হাঁকিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম অর্ধশতকে পৌঁছান বেন ডাকেট। ৬১ বলে পঞ্চাশ ছুঁতে ৬টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সেই ওভারে তার আরেকটি চারে একশ’ রানে পৌঁছায় ইংল্যান্ডের সংগ্রহ।
১৫ ওভারের মধ্যে ৪ স্পিনার
নতুন বলে উইকেটের জন্য মরিয়া মুশফিকুর রহিম। প্রথম ১৫ ওভারের মধ্যে চার স্পিনারকে দিয়েই বল করান বাংলাদেশের অধিনায়ক। এর মধ্যে এক-দুই ওভারের স্পেলও রয়েছে। স্বাগতিক স্পিনারদের দেখেশুনে খেলেন ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালেস্টার কুক। পাল্টা আক্রমণে দ্রুত রান সংগ্রহ করেন বেন ডাকেট।
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে রিভার্স সুইপে বেন ডাকেটের চারে ৭৬ বলে আসে ইংল্যান্ডের অর্ধশতক। সিরিজে অতিথিদের উদ্বোধনী জুটির এটাই প্রথম পঞ্চাশ রানের জুটি। ১৩ ওভার শেষে অতিথিদের স্কোর ৫২/০। জয়ের জন্য তখন আরও ২২২ রান চাই তাদের।
ডাকেটকে জীবন দিলেন মাহমুদউল্লাহ
মেহেদী হাসান মিরাজের লাফিয়ে উঠা বলে স্লিপে মাহমুদউল্লাহকে কঠিন ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান বেন ডাকেট। সে সময় ১২ রানে ব্যাট করছিলেন ইংলিশ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ২৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় অ্যালেস্টার কুক, ডাকেটের দৃঢ়তায় ভালো শুরু পায় ইংল্যান্ড।
রেকর্ড গড়তে হবে ইংল্যান্ডকে
ঢাকা টেস্ট জিততে রেকর্ড গড়তে হবে ইংল্যান্ডকে। এশিয়ায় এর আগে সর্বোচ্চ ২০৯ রান তাড়া করে জিতেছিল ইংলিশরা। ২০১০ সালে মিরপুরেই হওয়া ওই টেস্টে অতিথিরা জিতে ৯ উইকেটে। এবার তাদের লক্ষ্য ২৭৩ রান।
২৯৬ রানে অলআউট বাংলাদেশ
আদিল রশিদকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে কামরুল ইসলামের বিদায়ে ২৯৬ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। সিরিজে এটাই স্বাগতিকদের সর্বোচ্চ রান। ৯ বলে ৭ রান করেন রাব্বি। ২৮ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন শুভাগত হোম চৌধুরী। স্বাগতিকরা পায় ২৭২ রানের লিড।
ছক্কায় শুরু রাব্বির
আগের তিন ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হওয়া কামরুল ইসলাম রাব্বি রানের খাতা খোলেন মইন আলিকে ছক্কা হাঁকিয়ে। ইনিংসের এটা প্রথম ছক্কা।
তিন ইনিংসেই ১ রানের পর এবার মিরাজের ২
সাব্বির রহমান-তাইজুল ইসলামের দ্রুত বিদায়ের বেশিক্ষণ টিকেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। আদিল রশিদের বলে স্লিপে জো রুটকে সহজ ক্যাচ দেন এই তরুণ।
আগের তিন ইনিংসেই ১ রান করা মিরাজ এবার আউট হলেন ২ রানে। দলের সংগ্রহ তখন ২৭৬/৯; বাংলাদেশ এগিয়ে ২৫২ রানে।
আড়াইশ ছাড়াল লিড
মেহেদী হাসান মিরাজের দুই রানে আড়াইশ’ ছাড়ায় বাংলাদেশের স্কোর। টেস্টে নিজের চার ইনিংসে এই প্রথম ১ রানের বেশি করেন তিনি। ৬২ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৭৫ রান। লিড তখন ২৫১ রান।
লাঞ্চের আগে ২৪৪ রানের লিড, হাতে ৩ উইকেট
তৃতীয় দিনের লাঞ্চে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২৬৮/৭। দিনের প্রথম সেশনে ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমানের উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান যোগ করে স্বাগতিকরা। তিন উইকেট হাতে নিয়ে লিড ২৪৪ রানের। শুভাগত হোম চৌধুরী ১৫ রানে অপরাজিত। দলের লিড বাড়াতে মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম রাব্বিরও ভূমিকা রাখতে হবে।
তৃতীয় দিন ইমরুল ও মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ভালো দুটি জুটি গড়েন সাকিব। পাল্টা আক্রমণে বোলারদের ওপর চড়াও হন সাব্বির ও শুভাগত। পুরানো বলে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে দ্রুত রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। বেন স্টোকসের রিভার্স সুইংয়ের সামনেও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ব্যাটসম্যানরা।
প্রথম সেশনে চারটি ক্যাচ হাতছাড়া করে ইংল্যান্ড। উইকেটের পেছনে নড়বড়ে ছিলেন জনি বেয়ারস্টো। তার গ্লাভস ফাঁকি দিয়ে হয় তিনটি বাই চার।
ফিরে গেলেন সাব্বির
খোঁচা মেরে মুশফিকের বিদায়
৩৮ রানের জুটি ভেঙে সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পরপরই তাকে অনুসরণ করেন মুশফিকুর রহিম (২৯ বলে ৯)। বেন স্টোকসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে স্লিপে অ্যালেস্টার কুককে ক্যাচ দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। দলের স্কোর তখন ২৩৮/৬, লিড ২১৪।
বোল্ড হয়ে ফিরলেন সাকিব
এবার জীবন পেলেন মুশফিক
জাফর আনসারির বলে স্টিভেন ফিনকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান মুশফিকুর রহিম। মাথার উপর দিয়ে যাওয়া বলে আঙুল ছোঁয়ালেও মুঠোয় পুরতে পারেননি ইংল্যান্ডের দীর্ঘতম এই ক্রিকেটার। তখন ৬ রানে ব্যাট করছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। সেই এক রানেই বাংলাদেশের লিড দুইশ’ স্পর্শ করে।
জীবন পেলেন সাকিব
জাফর আনসারির বলে চারের পর ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় সহজ ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসান। ডিপ মিডউইকেটে বেন ডাকেটের অবিশ্বাস্য ব্যর্থতায় ২৩ রানে জীবন পান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দলের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ২১৩, লিড ১৮৯।
প্রথম ঘণ্টায় ৫৫ রান
ইমরুল কায়েসের উইকেট হারিয়ে তৃতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টায় ১৬ ওভারে ৫৫ রান যোগ করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে অতিরিক্ত থেকে আসে ১৭ রান। প্রথম ঘণ্টা শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২০৭/৪। বাংলাদেশ এগিয়ে ১৮৩ রানে।
সকালে ভালো শুরুর পর আউট ইমরুল
মইন আলির বলে এলবিডিব্লিউ হয়ে ফিরেন ইমরুল কায়েস (১২০ বলে ৭৬)। অফ স্পিনারের বল সুইপ করতে গিয়ে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার বিদায়ে ভাঙে ১৪.১ ওভার স্থায়ী ৪৮ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। স্বাগতিকরা তখন এগিয়ে ১৭৬ রানে।
ইমরুলের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে সাকিব
ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন সকালে দ্বিতীয় ইনিংসে আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। সে সময় স্বাগতিকরা এগিয়ে ১২৮ রানে।
যে কোনো পুঁজিতে লড়বে বাংলাদেশ
অফ স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ জানিয়েছেন, যে কোনো পুঁজি নিয়ে লড়বে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানরা একটু বেশি মনোযোগ দিলে বড় লক্ষ্য দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন দুর্দান্ত বোলিং করা এই তরুণ।
আড়াইশ তাড়া সম্ভব?
ইংলিশ অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস মনে করেন, ঢাকার উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে সাড়ে আড়াইশ’ রানের লক্ষ্যও তাড়া করা সম্ভব।
ভালো দিনটি হতে পারত আরও ভালো
দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলায় ব্যাখ্যাতীত এক শটে ফিরেন দারুণ খেলতে থাকা মাহমুদউল্লাহ। তিনি উইকেট বিলিয়ে আসায় বাংলাদেশের ভালো দিনটি আরও ভালো হয়নি। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৫২ রান। ইমরুল কায়েস ৮১ বলে ৮টি চারে ৫৯ রানে অপরাজিত। স্বাগতিকরা এগিয়ে ১২৮ রানে। পুরানো বল ঠিকঠাক সামলানোর ওপর নির্ভর করছে কত দূর যাবে মুশফিকুর রহিমদের দ্বিতীয় ইনিংস।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২২০
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৪৪
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৬৬.৫ ওভারে ২৯৬ (তামিম ৪০, ইমরুল ৭৮, মুমিনুল ১, মাহমুদউল্লাহ ৪৭, সাকিব ৪১, মুশফিক ৯, সাব্বির ১৫, শুভাগত ২৫*, তাইজুল ৫, মিরাজ ২, কামরুল ৭; ফিন ০/১৮, মইন ১/৬০, আনসারি ২/৭৬, স্টোকস ৩/৫২, রশিদ ৪/৫২, ওকস ০/১৪)।
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৩) ৪৫.৩ ওভারে ১৬৪ (কুক ৫৯, ডাকেট ৫৬, রুট ১, ব্যালান্স ৫, মইন ০, স্টোকস ২৫, বেয়ারস্টো ৩, ওকস ৯*, রশিদ ০, আনসারি ০, ফিন ০, মিরাজ ৬/৭৭, সাকিব ৪/৪৯, শুভাগত ০/২৫, তাইজুল ০/৭)
ফল: বাংলাদেশ ১০৮ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজ ১-১ ড্র
ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও সিরিজ: মেহেদী হাসান মিরাজ