উইলিয়ামসনের শতকে সমতা টানল কিউইরা

টানা তিন টেস্ট ও এক ওয়ানডে হারের পর অবশেষে ভারত সফরে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছে নিউ জিল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসনের দারুণ শতকের পর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ ওভারে গড়ানো ম্যাচে ৬ রানের নাটকীয় জয় তুলে নিয়েছে অতিথিরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2016, 04:50 PM
Updated : 20 Oct 2016, 07:34 PM

অভিষেকে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতা হার্দিক পান্ডিয়া বৃহস্পতিবার রাতেও শেষ মুহূর্তে জ্বলে ওঠেন। ঝড়ো ইনিংসে রোমাঞ্চকর জয়ের সম্ভাবনাও জাগান; কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলের হার এড়াতে পারেননি।

দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামের এই জয়ে পাঁচ ওয়ানডের সিরিজে দুই ম্যাচ শেষে ১-১ এ সমতায় ফিরল নিউ জিল্যান্ড। ১১৮ রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন উইলিয়ামসন।

নিউ জিল্যান্ডের ৯ উইকেটে গড়া ২৪২ রানের ইনিংস ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের জন্য কঠিন কোনো পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু টপঅর্ডারদের ব্যর্থতায় ৭৩ রানেই চার উইকেট হারিয়ে বসে দলটি।

তারপরও আশার প্রদীপ জ্বলছিল মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঘিরে। পঞ্চম উইকেটে কেদার যাদবের (৪১) সঙ্গে ৬৬ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটান অধিনায়ক। কিন্তু দলীয় স্কোর ১৭২ রানে ধোনি (৩৯) ফিরে গেলে পথ হারায় তারা।

তখন ৬৩ বলে ৭১ রান দরকার ছিল স্বাগতিকদের। অসম্ভব না হলেও দুরুহ তো বটেই। ওই অবস্থায় অনিয়মিত স্পিনার মার্টিন গাপটিলের ঘটনাবহুল একটি ওভার ভারতকে আরও কোণঠাসা করে ফেলে। চার ওয়াইড, ১০ বলের ওভারে অক্ষর প্যাটেল ও অমিত মিশ্রকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি।

খাদের কিনারায় চলে যাওয়া দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মাত্রই দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা পান্ডিয়া। ৩২ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ৩৬ রানের ইনিংসে জয়ের সম্ভাবনাও জোরালো করেছিলেন। এরপরই ট্রেন্ট বোল্টের আঘাত; দারুণ ফর্মে থাকা এই অলরাউন্ডারকে ফেরান তিনি।

শেষ ওভারে ১০ রান দরকার ছিল ভারতের। এর আগে অজিঙ্কা রাহানে ও ধোনির উইকেট শিকার করা টিম সাউদি তৃতীয় বলে শেষ ব্যাটসম্যান জাসপ্রিত বুমরাহকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে জয় নিশ্চিত করেন।

তিন উইকেট শিকারে ৫২ রান খরচ করেন সাউদি।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা নিউ জিল্যান্ড ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মার্টিন গাপটিলকে হারায়। তবে দ্বিতীয় উইকেটে টম ল্যাথামের সঙ্গে উইলিয়ামসনের ১২০ রানের জুটিতে সে ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে তারা।

এই জুটিতে বড় ইনিংসের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল দলটি। কিন্তু শেষ দিকে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় তা আর হয়নি।

কেদার যাদবের বলে ল্যাথাম (৪৬ বলে ৪৬) এলবিডব্লিউ হলে ভাঙে ২০.১ ওভার স্থায়ী জুটিটি। তৃতীয় উইকেটে রস টেইলরের সঙ্গে ৩৮ ও চতুর্থ উইকেটে কোরি অ্যান্ডারসনের সঙ্গে ৪৬ রানের জুটি গড়ে ৩০০ ছাড়ানো ইনিংসের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন উইলিয়ামসন। কিন্তু অমিত মিশ্রর করা ৪১তম ওভারের পঞ্চম বলে রাহানেকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন উইলিয়ামসন। বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আর কেউ দুই অঙ্কের রানই করতে না পারায় আড়াইশও ছুঁতে পারেনি দলটি।

ক্যারিয়ারে অষ্টম শতক করার পথে ১২৮ বলের ইনিংসে ১৪টি চার ও একটি ছক্কা মারেন উইলিয়ামসন।

বুমরাহ আর মিশ্র তিনটি করে উইকেট পান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৪২/৯ (গাপটিল ০, ল্যাথাম ৪৬, উইলিয়ামসন ১১৮, টেইলর ২১, অ্যান্ডারসন ২১, রনকি ৬, স্যান্টনার ৯*, ডেভসিচ ৭, সাউদি ০, হেনরি ৬, বোল্ট ৫*; বুমরাহ ৩/৩৫, মিশ্র ৩/৬০, কেদার যাদব ১/১১, উমেশ যাদব ১/৪২)

ভারত: ৪৯.৩ ওভারে ২৩৬ (রোহিত ১৫, রাহানে ২৮, কোহলি ৯, পান্ডে ১৯, ধোনি ৩৯, কেদর যাদব ৪১, প্যাটেল ১৭, পান্ডিয়া ৩৬, মিশ্র ১, উমেশ যাদব ১৮*, বুমরাহ ০; সাউদি ৩/৫২, গাপটিল ২/৬, বোল্ট ২/২৫, স্যান্টনার ১/৪৯, হেনরি ১/৫১)

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৬ রানে জয়ী

সিরিজ: দুই ম্যাচ শেষে ১-১ এ সমতা

ম্যাচ সেরা: কেন উইলিয়ামসন