ড্রেসিং রুম থেকে বেরিয়ে পাশেই টিম হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন নুরুল। তখনই সংবাদকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারলেন খবর। জায়গা পেয়েছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট স্কোয়াডে।
সত্যিই দল ঘোষণা করা হয়েছে শুরুতে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না নুরুল। সংবাদ সম্মেলনে দল জানানো হয়েছে শোনার পরও খুব একটা ভাবান্তর দেখা গেল না তার মাঝে। নেই উচ্ছ্বাসের বাড়াবাড়ি। তবে কণ্ঠে উঠে এলো সংকল্প। আছে ইচ্ছা, তাড়না। যতটা পারা যায় শেখার!
দলে ডাক পাওয়াটা নুরুলের কাছে কেবলই স্বপ্ন পূরণের পথে প্রথম ধাপ। তাড়াহুড়োও নেই তার মাঝে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, চেষ্টা করবেন ভালো কিছু করার।
“সবারই স্বপ্ন থাকে টেস্ট খেলা। স্কোয়াডে এসেছি। এখন অনুশীলনে ভালো করতে চাই। দলের সঙ্গে মিশে যেতে চাই। এরপর যদি সুযোগ পাওয়া যায়, চেষ্টা করব ভালো করতে।”
মূলত বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপার হিসেবেই নেওয়া হয়েছে নুরুলকে। অনেক দিন থেকেই তাকে মনে করা হয় দেশের সেরা উইকেটকিপার। কিপিং টেকনিক, রিফ্লেক্স দুর্দান্ত। গত মৌসুমের শেষ ভাগ থেকেই টেস্টে কিপিং ছেড়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। সবশেষ ৩ টেস্টে কিপিং গ্লাভস সামলানোর দায়িত্ব ছিল লিটন দাসের। উইকেটের সামনে পেছনে ভালোও করেছিলেন লিটন। এবার জাতীয় লিগের ম্যাচে চোট পেলেন কাঁধে। সেই চোট থেকে সেরে উঠে মাত্র একদিন ব্যাটিং করতে পেরেছেন। তাকে নিয়ে ঝুঁকি না নিতেই নির্বাচকরা বেছে নিয়েছেন নুরুলকে।
কিপিং অসাধারণ, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ব্যাট হাতেও রেকর্ড বেশ ভালো নুরুলের। ৪৯ ম্যাচে সেঞ্চুরি ৫টি, ব্যাটিং গড় ৪১.৮১। মাত্র কদিন আগেই জাতীয় লিগের ম্যাচে ভীষণ দুরূহ উইকেটে করেছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।
টেস্টে কিপিং না করার সিদ্ধান্তে মুশফিক অটল থাকলে নুরুলের টেস্ট অভিষেকও হয়ে যাবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ব্যাট হাতেও তার কাছে কিছু চাইবে দল।
তবে এসব নিয়ে ভাবছেনই না নুরুল। আপাতত ভালো করতে চান টেস্ট সিরিজের আগে অনুশীলন সেশনগুলোতে।
“আত্মবিশ্বাসী অবশ্যই। তবে দলের ভূমিকা কি হবে না হবে, ওসব এখনও ভাবিনি। আগে প্র্যাকটিস সেশনগুলো কাজে লাগাতে চাই। সুযোগগুলো যেন কাজে লাগাতে পারি।”
আপাতত নুরুল শুধু শিখতে চান। কাটিয়ে উঠতে চান নিজের দুর্বলতাগুলো।
“অনেক কিছু শেখার আছে। সিনিয়রদের কাছ থেকে শিখতে চাইব। কথা বলব, দেখব, জানতে পারব। শেখার চেষ্টা করব। দুর্বলতাগুলো নিয়ে কোচের সঙ্গে কাজ করা, সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলা, সেগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই।”
কথায় পরিষ্কার, শুধু চট্টগ্রাম টেস্ট বা এই সিরিজ নিয়েই ভাবছেন না নুরুল। শিখতে চান, নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চান, কাটিয়ে উঠতে চান ঘাটতিগুলো। প্রথমবার টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার রোমাঞ্চ ছাপিয়ে যাচ্ছে শেখার তাড়নায়।
বোঝা যাচ্ছে, নুরুল হতে চান লম্বা রেসের ঘোড়া!