চমকে ঠাসা বাংলাদেশের টেস্ট দল

বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচটি যেখানে খেলেছিল বাংলাদেশ, নয় মাস পর সেই চট্টগ্রামেই মেহেদী হাসান মিরাজ পেয়ে যেতে পারেন স্বপ্নের টেস্ট ক্যাপ! বাংলাদেশের সবশেষ যুব দলের অধিনায়ক ডাক পেয়েছেন টেস্ট দলে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2016, 11:19 AM
Updated : 16 Oct 2016, 03:31 PM
শুধু মিরাজই নয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের বাংলাদেশ দলে চমক আর বদলের ছড়াছড়ি। সীমিত ওভারের নিয়মিত মুখ সাব্বির রহমান এবার সুযোগ পেলেন টেস্ট দলে। কার্যকর একটি পেস আক্রমণ গড়ার নিয়ত চেষ্টায় এবার ডাকা হয়েছে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিকে। ফিরেছেন আরেক পেসার শফিউল ইসলাম। ফিরেছেন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার শুভাগত হোমও। সুযোগ পেয়েছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান।

সব মিলিয়ে গত বছরের জুলাই-অগাস্টে বাংলাদেশের সবশেষ টেস্ট স্কোয়াড থেকে পরিবর্তন ছয়টি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই দল থেকে এবার নেই মুস্তাফিজুর রহমান, জুবায়ের হোসেন, লিটন দাস, মোহাম্মদ শহীদ, নাসির হোসেন ও রুবেল হোসেন।

১৪ সদস্যের দলে পেসার মাত্র দুজন। একাদশে তিন স্পিনার খেলানোর ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন নির্বাচকরা।

জেনুইন অলরাউন্ডার হলেও মিরাজকে নেওয়া হয়েছে মূলত বোলিং সামর্থ্যের কারণে। সাকিব আল হাসান ও তাইজুল থাকায় তৃতীয় আর কোনো বাঁহাতি স্পিনার চাননি নির্বাচকেরা।

লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন হারিয়েছেন নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসা। নির্বাচকরা বেছে নিয়েছেন অফ স্পিনার মিরাজ ও শুভাগতকে।

১২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪১ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। এর মধ্যে গত জাতীয় লিগেই ৫ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩০ উইকেট। ব্যাট হাতে ১৪ ইনিংসে গড় ৪০.৩০, অর্ধশত ৫টি।

শুভাগতকে ফেরানোর পেছনেও নির্বাচকরা জানালেন তার স্পিন সামর্থ্যের কথা। ইংল্যান্ডের বেশ কজন ব্যাটসম্যান বাঁহাতি বলে দুজন অফ স্পিনার রেখেছেন নির্বাচকরা।

কামরুল দেশের ক্রিকেটে খেলছেন বেশ কবছর ধরেই। মোটামুটি পারফর্মও করেছেন। জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ছিলেন বেশ কিছু দিন ধরেই। গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে থাকলেও আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়নি রাব্বির। ৪৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তার উইকেট ১০৩টি।

শফিউল সবশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৪ সালের নভেম্বরে, চট্টগ্রামেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১০ সালে এই চট্টগ্রামেই অভিষেক। ৮ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ফিরেছিলেন ওয়ানডেতে। ফেরার চক্র পূরণ করলেন টেস্ট দলে জায়গা পেয়ে।

গত মৌসুমের শেষ তিন টেস্টে কিপিং গ্লাভস ছেড়ে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। কিপিং সামলেছেন লিটন; উইকেটের সামনে-পেছনে খারাপ ছিল না পারফরম্যান্স। কিন্তু জাতীয় লিগের ম্যাচে কাঁধে চোট পাওয়াটাই কাল হলো লিটনের। চোট সারলেও ম্যাচ খেলার মত ফিট নন এখনও। সুযোগ পেলেন নুরুল হাসান।

অনেক দিন থেকেই নুরুলকে মনে করা হচ্ছে দেশের সেরা উইকেটকিপার। জাতীয় দলের বিবেচনায় এর আগে মূলত টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট হিসেবেই ভাবা হয়েছে তাকে। ৬টি টি-টোয়েন্টি খেলে জায়গা হারিয়েছেন দলে। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও রেকর্ড তার যথেষ্টই উজ্জ্বল। ৪৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে করেছেন ৫টি সেঞ্চুরি, ব্যাটিং গড় ৪১.৮১। সপ্তাহখানেক আগেই জাতীয় লিগে করেছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়ার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও রান পেয়েছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। তবু খুলতে পারেননি ফেরার দরজা। সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও টিকে গেছেন সৌম্য সরকার।

আগামী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড।

প্রথম টেস্টের বাংলাদেশ দল: মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম, শুভাগত হোম চৌধুরী, শফিউল ইসলাম, কামরুল ইসলাম রাব্বি, নুরুল হাসান।