বিশ্ব রেকর্ড গড়া অস্ট্রেলিয়ার বড় জয়

গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিস্ফোরক ব্যাটিং আর ট্র্যাভিস হেডের যোগ্য সহায়তায় বিশ্ব রেকর্ড গড়া অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। মিচেল স্টার্ক-স্কট বোল্যান্ডের দারুণ বোলিংয়ে অতিথিরা পেয়েছে ৮৫ রানের সহজ জয়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2016, 05:26 PM
Updated : 6 Sept 2016, 05:26 PM

শ্রীলঙ্কার কাছে টানা পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে হারের পর অবশেষে জিতল অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল তারা।

মঙ্গলবার পাল্লেকেলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেটে ২৬৩ রান করে অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টিতে এখন এটাই সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ২০০৭ সালের টি-টোয়ন্টি বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটে ২৬০ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা।

জবাবে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান করে শ্রীলঙ্কা। রানের দিক থেকে অস্ট্রেলিয়ার কাছে এটি তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। এর আগে ২০১০ সালে ব্রিজটাউনে ৮১ রানে হেরেছিল লঙ্কানরা।

ওভার প্রতি ১৩ রান প্রয়োজন এমন পরিস্থিতিতে যে শুরু দরকার ছিল তা পায়নি স্বাগতিকরা। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় জয়ের সম্ভবনাও জাগাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।

নিজের সর্বশেষ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪ রান করে ফিরেন তিলকারত্নে দিলশান। তার বিদায় দিয়ে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার শুরু। এর মধ্যে টিকে ছিলেন শুধু অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল ও চামারা কাপুগেদারা। 

৪৩ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৫৮ রান করেন চান্দিমাল। শেষের দিকে পাল্টা আক্রমণে যাওয়া কাপুগেদারা ফিরেন ২৫ বলে তিনটি করে ছক্কা-চারে ৪৩ রান করে।

অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার স্টার্ক ও বোল্যান্ড নেন তিনটি করে উইকেট।

এর আগে ১১ রানের জন্য ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে না পারা ম্যাক্সওয়েল অস্ট্রেলিয়াকে এনে দেন বিশাল সংগ্রহ। ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ার পর দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচে ১৪ চার ও ৯ ছক্কায় ৬৫ বলে তিনি অপরাজিত থাকেন ১৪৫ রানে! শেষের দিকে খুব একটা স্ট্রাইক না পাওয়ায় ভাঙতে পারেননি বিশ্ব রেকর্ড। 

চোট নিয়ে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ডাগ আউটে থাকা উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অ্যারন ফিঞ্চের অধিকারেই থেকেছে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ বিশ্ব রেকর্ড। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন ১৫৬!

টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার ওপেন করতে নেমে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করেছেন ম্যাচ সেরা ম্যাক্সওয়েল। আগের সর্বোচ্চ ৯৬ ছিল এই ম্যাচের ধারাভাষ্য কক্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান ডেমিয়েন মার্টিনের।

অস্ট্রেলিয়ার ঝড়ের শুরু ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ম্যাক্সওয়েলের উদ্বোধনী জুটিতেই। ২৯ বলে এই দুই জন গড়েন ৫৭ রানের জুটি। ১৬ বলে ২৮ রান করে ফিরে যান অধিনায়ক ওয়ার্নার।

শ্রীলঙ্কা সফরে রানের জন্য সংগ্রাম করা উসমান খাওয়াজাও খেলেছেন ঝড়ো এক ইনিংস। দ্বিতীয় উইকেটে ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ৫১ বলে ৯৭ রানের জুটিতে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের অবদান ৩৬ রান।

প্রথম ১০ ওভারে ১১০ রান করা অস্ট্রেলিয়া শেষ ১০ ওভারে সংগ্রহ করে ১৫৩ রান! ম্যাক্সওয়েলের মতো এতে বড় অবদান ছিল ট্র্যাভিস হেডেরও।

অর্ধশতক স্পর্শ করতে ২৭ বল খেলেন ম্যাক্সওয়েল। পরের পঞ্চাশে লেগেছে ২২ বল। ৯৮ রান থেকে সুরঙ্গা লাকমলের নো বলে দুই রান নিয়ে নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি শতক স্পর্শ করেন ৪৯ বলে। সেঞ্চুরির পর আরও মারমুখী তার ব্যাট। আরেকপাশে হেড চালান তাণ্ডব।

তৃতীয় উইকেটে মাত্র ৪০ বলে ১০৯ রানের জুটি গড়েন ম্যাক্সওয়েল-হেড। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়া হেড করেছেন ১৮ বলে ৪৫।

অস্ট্রেলিয়ানদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লঙ্কানদের বাজে বোলিংয়ের দায় ছিল এই রান উৎসবে। প্রচুর ফুল টস ও হাফভলি বল করেছেন বোলাররা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ২৬৩/৩ (ম্যাক্সওয়েল ১৪৫, ওয়ার্নার ২৮, খাওয়াজা ৩৬, হেড ৪৫; পাথিরানা ১/৪৫, সেনানায়েকে ১/৪৯, থিসারা ১/৫৮)

শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৭৮/৯ (কুসল পেরেরা ৪, দিলশান ৪, ডি সিলভা ১২, চান্দিমাল ৫৮, মেন্ডিস ২২, থিসারা ৭, কাপুগেদারা ৪৩, পাথিরানা ২, সেনানায়েকে ৬*,  লাকমল ১, রাজিথা ০*; স্টার্ক ৩/২৬, বোল্যান্ড ৩/২৬, হেনরিকেস ১/২৪, জ্যামপা ১/২৭, ফকনার ১/৩৮)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮৫ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল