আরও বেশি টেস্ট না খেলার আক্ষেপ তামিমের

আক্ষেপটার বয়স বাংলাদেশের টেস্ট খেলার বয়সের সমান- ‘যদি আরও বেশি টেস্ট খেলতে পেতাম!’ টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি সত্যিকার ভালোবাসা আছে বলে আক্ষেপটা বেশি পোড়ায় তামিম ইকবালকে। আগেও অনেকবার বলেছেন। ইংল্যান্ড সিরিজের জন্য অপেক্ষার এই প্রহরে আবারও বললেন সেই নিত্য আক্ষেপের কথা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2016, 01:52 PM
Updated : 27 July 2016, 01:54 PM

গোটা ক্রিকেট বিশ্বই এখন ব্যস্ত টেস্ট ক্রিকেটে। ইংল্যান্ডে খেলছে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভারত। শ্রীলঙ্কায় খেলছে টেস্টের শীর্ষ দল অস্ট্রেলিয়া। এমনকি জিম্বাবুয়েতে বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ। বাংলাদেশ সেখানে ব্যস্ত স্রেফ ফিটনেস ক্যাম্পে। অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটিও নিয়েও অনিশ্চয়তা নিরাপত্তার শঙ্কায়।

সিরিজটি হলেও বাংলাদেশ টেস্ট খেলবে ১৪ মাস পর। সবশেষ খেলেছে গত বছরের অগাস্টের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এই লম্বা খরায় তামিমের আক্ষেপটা বেশি শুধু টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি দুর্বলতার কারণেই নয়, নিজের দারুণ ফর্মের কারণেও।

বিরতির আগে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে ছিলেন সাদা পোশাকে। দীর্ঘ বিরতি মানে আবার নতুন করে ছন্দে ফেরা। এর আগে ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরের পর এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল তামিমের। টানা দুই টেস্টে অসাধারণ দুই শতক করেছিলেন; কিন্তু সেবারও এরপর টানা ১৪ মাস টেস্ট ছিল না বাংলাদেশের।

বুধবার বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই আক্ষেপটা আবার তুলে ধরলেন তামিম।

“একজন ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে টেস্ট ম্যাচ খেলবে। স্বপ্ন থাকে একশ’ টেস্ট ম্যাচ খেলবে দেশের হয়ে। আমার সঙ্গে অন্য দেশের যারা টেস্ট খেলতে শুরু করেছে, ওদের অনেকের আশি-নব্বইটা টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। যেখানে আমার চল্লিশটা (৪২)।”

“এখানে একটু খারাপ লাগে যদি আমি আরও বেশি টেস্ট খেলতাম, তাহলে আমার রান আরও বেশি থাকতো। অন্যরা আমার যারা সতীর্থ আছে তাদেরও অনেক বেশি সাফল্য থাকত।”

তামিমের দাবিকে সাক্ষ্য দেবে পরিসংখ্যান। ২০০৮ সালের ৪ জানুয়ারি, তামিমের টেস্ট অভিষেক থেকে ১০৭টি টেস্ট খেলেছেন অ্যালেস্টার কুক। জেমস অ্যান্ডারসন খেলেছেন ৯৭টি, স্টুয়ার্ট ব্রড ৯৫টি। বছরখানেক আগে অবসরে যাওয়া মাইকেল ক্লার্ক ৮৪টি।  

ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট এমনিতেই বেশি খেলে। কিন্তু উপমহাদেশের ইশান্ত শর্মা, দেড় বছর আগে অবসরে যাওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনি এই সময়ে খেলেছেন ৬৬ টেস্ট। এমনকি তামিমের দেড় বছর পর অভিষিক্ত অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস খেলেছেন তামিমের চেয়ে ১৮ টেস্ট বেশি। তামিমের প্রায় ৫ বছর পর অভিষেক হয়েও জে রুট খেলেছেন তামিমের চেয়ে বেশি টেস্ট।

আইসিসি নীতি, বিসিবির ক্রিকেট কূটনীতির দুর্বলতা বা প্রশাসকদের দায় তো আছেই। তবে সব অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন না তামিম। আরেকটি বাস্তবতাও স্বীকার করে নিচ্ছেন। বেশি টেস্ট আদায় করে নেওয়ায় দায়িত্বটা বেশি দিচ্ছেন ক্রিকেটারদের।

“আমি সব সময় বলি এটা আমাদের হাতে না, কিন্তু এটা আমরা বদলাতে পারি আমাদের পারফরম্যান্স দিয়ে। আমরা যদি ভালো খেলি, আমরা যদি আরও ম্যাচ জিতি, আমরা যদি টেস্ট ম্যাচ ভালো খেলি, তখন হয়তো আরও বড় বড় দল আমাদের সঙ্গে খেলতে আরও আগ্রহী হবে।”

“আমি যতই বড় বড় কথা বলিনা কেন, অথবা যে যতই যুক্তি দেখিয়ে দিক না কেন, আমার কাছে মনে হয় এটা সম্পূর্ণ খেলোয়াড়দের উপর নির্ভর করে। আমরা যদি টেস্টে বাংলাদেশকে ভালো ফলাফল দেই, তাহলে আমরা আরও বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারবো।”

টেস্টের বাংলাদেশের সেই সুদিন আসবে কবে, সেটার উত্তর দেবে সময়। আপাতত তামিমদের অপেক্ষা ইংল্যান্ড সিরিজের।