দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দুই বলে বিনা উইকেটে ১ রান করে শ্রীলঙ্কা। এরপর আলোক স্বল্পতায় দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়। অতিথিরা এখনও পিছিয়ে আছে ২০৬ রানে।
প্রতিপক্ষকে তিনশ’ রানের নিচে বেধে রেখে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কা শুরুতেই ধাক্কা খায়। প্রথম তিন ওভার নিরাপদে কাটিয়ে দেওয়া দলটি নয় বলের মধ্যে হারায় প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে। তিন জনই ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোকে।
কন্ডিশন অ্যান্ডারসন-ব্রডদের পক্ষেই ছিল। সঠিক লাইন-লেংথে বল করে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা আরও কঠিন করে তোলেন তারা।
দিমুথ করুনারত্নেকে বিদায় করে শুরু করেন ব্রড। পরের ওভারে ফিরে তুলে নেন কুশল মেন্ডিসের দুই উইকেট। দুই ব্যাটসম্যানের কেউ রানের খাতা খুলতে পারেননি। মাঝখানে অ্যান্ডারসনের শর্ট বলে ফিরে যান কৌশল সিলভা।
১২ রানে তিন উইকেট হারানোর ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। দিনেশ চান্দিমাল ও লাহিরু থিরিমান্নের সঙ্গে ম্যাথিউসের দুটি জুটিতে ছিল লড়াইয়ের আভাস। সেই প্রতিরোধ পর্ব খুব একটা বড় হয়নি।
বল হাতে অভিষেকটা দারুণ হলেও ব্যাটিংয়ে মোটেও ভালো হয়নি শানাকার। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার আশা হয়ে উইকেটে টিকে ছিলেন থিরিমান্নে। অন্য প্রান্তে আসা-যাওয়ার মধ্যেও দল ফলোঅন এড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল তাকে ঘিরে। মিড অনে এক উড়ন্ত ক্যাচে থিরিমান্নের প্রতিরোধ ভাঙেন স্টিভেন ফিন।
পরের ওভারে সামিন্দ ইরাঙ্গার উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস গুটিয়ে দেন অ্যান্ডারসন, নিশ্চিত হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ফলোঅন। টেস্টে ১৯তম বারের মতো পাঁচ উইকেটও নিশ্চিত হয় অ্যান্ডারসনের।
অ্যান্ডারসন ১৬ রানে নেন পাঁচ উইকেট। তার নতুন বলের সঙ্গী ব্রড ৪ উইকেট নেন ২১ রানে।
১৪ রানে শেষ ৬ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস স্থায়ী হয় ৩৬.৪ ওভার।
শুক্রবার দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে অলআউট হওয়ার আগে ২৯৮ রান করে অ্যালেস্টার কুকের ইংল্যান্ড।
হেডিংলিতে ৫ উইকেটে ১৭১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করা ইংল্যান্ড প্রথম ঘণ্টা কাটিয়ে দেয় নিরাপদেই। দিনের প্রথম সেশন যেন আগের দিনের পুনরাবৃত্তি। উইকেটশূন্য প্রথম ঘণ্টার পর দ্বিতীয় ঘণ্টায় তিন উইকেটের পতন।
আগের দিন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে নিজেদের ওপর চাপ সরিয়ে নেওয়া বেয়ারস্টো এদিনও ছিলেন সাবলীল। ৫৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হেলসকে পেছনে ফেলতে বেশি সময় নেননি।
সহজাত আক্রমণাত্মক প্রবৃত্তির সঙ্গে আপোষ করে ব্যাটিং করা হেলস আউট হন ক্ষণিকের জন্য মনোযোগ হারিয়ে। বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গানা হেরাথের বল ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ এক্সট্রা কাভারে দুশমন্থ চামিরার হাতে ধরা পড়েন তিনি।
হেলসের চমৎকার এক নীচু ক্যাচ তালুবন্দি করা চামিরা বোলিং এসে জোড়া আঘাতে উড়িয়ে দেন ইংলিশদের স্বস্তি। একই ওভারে মঈন আলি ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে বিদায় করেন চামিরা। ৫ উইকেটে ২২৪ থেকে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ২৩৩ রান।
নবম উইকেটে ফিনের সঙ্গে ৫৬ রানের জুটি গড়ার পথেই দ্বিতীয় শতকে পৌঁছান বেয়ারস্টো। গত কিছু দিনে ঘরের মাঠে এটি তার তৃতীয় প্রথম শ্রেণির শতক।
চামিরার বলে নুয়ান প্রদীপকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ১৮৩ বলে খেলা তার ১৪০ রানের অসাধারণ ইনিংসটি। ১৩টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকানো বেয়ারস্টোর বিদায়ের পর বেশি দূর এগোয়নি ইংল্যান্ডের সংগ্রহ।
শ্রীলঙ্কার দাসুন শানাকা ও চামিরা তিনটি করে উইকেট নেন।