আনন্দকে আলিঙ্গন করে শিরোপার স্বর্গে অস্ট্রেলিয়া

একতা, বন্ধন, ভালোবাসা, আনন্দ আর মজা। ঘুরে-ফিরে সবার মুখে একই কথা। ক্রিকেটীয় স্কিলের ব্যাপার তো আছেই, তবে শিরোপা জয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার সবাই বললেন নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের কথা। তাদের মতে, মাঠের ভেতরে-বাইরে দারুণ মজা করে ও উপভোগের মন্ত্রকে সঙ্গী করে মাঠে নেমেই সম্ভব হয়েছে অধরা ট্রফি জয়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2021, 03:59 AM
Updated : 15 Nov 2021, 02:13 PM

নিউ জিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ানরা আইসিসি ডিজিটালে তুলে ধরলেন নিজেদের প্রতিক্রিয়া।

জাস্টিন ল্যাঙ্গার (প্রধান কোচ)

“বিশ্বকাপ জয়ের পর সবাই সম্ভবত বলে যে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন… কিন্তু এই দলটা, এই ছেলেরা এত স্পেশাল একটা গ্রুপ… আমি জানি, সব কোচ-অধিনায়ক একই কথা বলেন, তবে আমার ছেলেরা অসাধারণ। গত ১২ মাসে নানা কারণে ওরা সবাই একসঙ্গে খেলতে পারেনি। এবার একসঙ্গে হওয়ার পর যেন এটা পুনর্মিলনীর রূপ নিয়েছে। দলে অনেকেই পরস্পরের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ। সবার জন্যই এটি খুব খুব বিশেষ মুহূর্ত।”

“সবাই সুরক্ষা-বলয়ের মানসিক ধকলের কথা বলে। আমরা এখানে আনন্দটাকে আলিঙ্গন করেছি। মাঠের ভেতরে-বাইরে এই ছেলেরা এত মজা করেছে! ক্রিকেটে উপভোগ করাটা খুব জরুরি। এই ছেলেরা তা করেছে এবং আমাদের সাফল্যের পেছন এটির ভূমিকা অনেক বড়।”

ম্যাথু ওয়েড

“এটা বিশাল কিছু (শিরোপা)। আমাদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অনেকেই হয়তো আমাদের গোনায় ধরেনি এবং আশা করেনি যে আমরা আজকে এখানে থাকব। তবে নিজেদের মধ্যে আমরা কথা বলেছি যে অস্ট্রেলিয়াকে এই অর্জন এনে দেওয়া প্রথম দল হতে পারি আমরা। সেটি করতে পারা সত্যিই স্পেশাল।”

মার্কাস স্টয়নিস

“মূল ব্যাপার, এই দল, এই ছেলেরা, আমরা পরস্পরকে সত্যিই ভালোবাসি। দলটা দুর্দান্ত। এই দলের হয়ে মাঠে নামতে তর সয় না আমার।”

“মিচ মার্শের পরিবার ও আমাদের চেয়ে ওর বড় সমর্থক আর পাওয়া যাবে না। ওর জন্য তাই আমরা দারুণ খুশি।”

মিচেল স্টার্ক

“টুর্নামেন্টের আগের পথচলা আদর্শ ছিল না (কয়েকটি সিরিজ হেরে)। তবে দলটার বন্ধন দুর্দান্ত। এখানে দারুণ সময় কেটেছে আমাদের। মাঠের বাইরে চমৎকার সময় কেটেছে। পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক, মাঠের ক্রিকেটেও সেটা ফুটে উঠেছে। সবাই অবদান রেখেছে মাঠের ভেতরে-বাইরে। একেকদিন একেকজন দলকে জিতিয়েছে। আজকেও যেমন দেখা গেল। এই দলের বন্ধনটাই আমাদেরকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে। আশা করি, এই গ্রীষ্মেও দেবে (অ্যাশেজে)।”

স্টিভেন স্মিথ

“এই জয়ের অর্থ অনেক বড়। অনেক কষ্ট করেছি আমরা। এই ট্রফি অনেক দিন ধরেই আমাদের অধরা। আজকে এই দিনে এই জায়গায় থাকতে পারা ও ছেলেদের সঙ্গী হতে পারা অনেক বড় সম্মানের। কাঙ্ক্ষিত এই ট্রফি দেশে নিয়ে যেতে পারা অসাধারণ।”

প্যাট কামিন্স

“দারুণ লাগছে… আসলে এখনও পুরো বুঝে ওঠা কঠিন। টানা খেলছি, সেমি-ফাইনাল, ফাইনাল…দেশে ফেরার পর আস্তে আস্তে হয়তো বুঝতে পারব। দেশ থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছি। রাত জেগে লোকে খেলা দেখেছে। দারুণ অনুভূতি।”

জশ হেইজেলউড

“আমরা শুরুটা ভালো করেছিলাম। পাওয়ার প্লেতে ওদেরকে বেশি রান করতে দেইনি। পরে যদিও ওরা রান করেছে, তবে উইকেট ভালো ছিল। বিশ্বাসটা তাই ছিল। ছেলেরা রান তাড়া দারুণভাবেই করেছে।”

অ্যাডাম জ্যাম্পা

“আমি স্রেফ নিজের শক্তির জায়গাটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেয়েছি। আজকে ভালো সময়ে বোলিং করতে পেরেছি। শুরুকে উইকেট বেশ শুষ্ক ছিল। সেটি কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। দলের প্রয়োজনের সময় উইকেট এনে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল

“আইপিএল খেলাটা খুব কাজে দিয়েছে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে কয়েকটা দিন ছুটি কাটিয়ে চনমনে হয়ে ফিরেছি। আমার ধারণা, খুব ভালো ছনন্দে ছিলাম আমি। যদিও বিশ্বকাপে খুব বেশি প্রয়োজন হয়নি আমাকে। তবে আজকে বাইসনের (মিচেল মার্শ) সঙ্গে উইকেটে থাকতে পারা ও জয়সূচক করতে পারা ছিল দারুণ।”

মিচেল মার্শ

“আমি আসলে ভাষা খুজে পাচ্ছি না। এই দলের সঙ্গে কী অসাধারণ ৬টি সপ্তাহই না কাটল! ওদের জন্য ভালোবাসা আমৃত্যু। আমরা এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!”

ডেভিড ওয়ার্নার

“২০১৫ বিশ্বকাপে শিরোপার জয়ের পাশাপাশিই থাকবে এই সাফল্য। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের কাছে ফাইনাল হার ছিল পীড়াদায়ক। এবারের এই ছেলেরা অসাধারণ, দারুণ সব সাপোর্ট স্টাফ এই দলের এবং গোটা বিশ্ব থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছি, বিশেষ করে দেশ থেকে।”

অ্যারন ফিঞ্চ

“অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দল হিসেবে এই শিরোপা জিততে পারা অনেক বড় অর্জন। দলকে নিয়ে দারুণ গর্বিত আমি। (ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর) দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। সেখান থেকে কেবল সামনেই এগোতে পারি। আমাদের লড়াই করতে হতো এবং আমরা তা করেছি।”