বেদনা নিয়েই বন্ধন অটুট রাখতে চান বাবর

স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় পুড়ছেন পাকিস্তান দলের সবাই। তবে সেই হতাশার সেই ছাই থেকেই দলকে পরের স্বপ্নসৌধ গড়ার প্রেরণা জোগাচ্ছেন বাবর আজম। একতার যে শক্তি এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান দেখিয়েছে, তা ধরে রেখে এবং এবারের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সতীর্থদের সামনে এগিয়ে যেতে বলছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2021, 07:07 AM
Updated : 12 Nov 2021, 09:16 AM

এবারের বিশ্বকাপে একমাত্র অপরাজিত দল হিসেবে সেমি-ফাইনালে ওঠে পাকিস্তান। এগিয়ে যাচ্ছিল তারা অপ্রতিরোধ্য গতিতে। সেমি-ফাইনালেও বেশির ভাগ সময় ম্যাচের লাগাম ছিল তাদের হাতেই। কিন্তু শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ফাইনালে উঠে যায় অস্ট্রেলিয়া।

ধারাবাহিকতা ও একতা, এই দুটি ব্যাপার পাকিস্তান ক্রিকেটে কমই দেখা গেছে। এমনকি অতীতের অনেক তারকাবহুল দলেও ছিল এসবের ঘাটতি। বাবর আজমের দল এখানেই অভাবনীয়ভাবে ব্যতিক্রম। এটিই হারিয়ে যেতে দিতে চান না বাবর।

অস্ট্রেলিয়া কাছে হারার পর ড্রেসিং রুমে কথোপকথনের ভিডিও প্রকাশ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সেখানেই বাবর বলেন, দল হারলেও যেন কেউ কারও দিকে আঙুল না তোলে।

“বেদনা সবারই আছে। সবারই কষ্ট হচ্ছে যে, কোথায় আমরা ভুল করেছি, কোথায় ভালো করা উচিত ছিল। সবাই জানে। এখান থেকে আমাদের শিখতে হবে। আমাদের যে বন্ধন গড়ে উঠেছে, এটা যেন ছুটে না যায়। কেউ কারও দিকে যেন আঙুল না তোলে যে ‘অমুক এটা করেছে, তমুক ওটা করেছে।’ দল হিসেবে আমরা ভালো খেলতে পারিনি।”

“সব ইতিবাচক কথা হবে, কোনো নেতিবাচক নয়। হ্যাঁ, হেরেছি। কোনো সমস্যা নেই, শিখব এখান থেকে। সামনের খেলাগুলোয় যেন এসব ভুল না করি। আবারও বলছি, এই বন্ধন যেন না ছুটে। অনেক সময় লাগে ভাই এটা করতে। অনেক কষ্টে এরকম বন্ধন গড়ে ওঠে। এক পরাজয়েই যেন কেউ এখান থেকে বেরিয়ে না যায়।”

বাবরের মতে, কঠিন সময়েই বন্ধুদের পাশে থাকা সবচেয়ে জরুরি। তার অনুরোধ, ড্রেসিং রুমে সুবাতাস যেন বইতেই থাকে।

“আমি সবার পাশে থাকি। অধিনায়ক হিসেবে আপনারা যেভাব সাড়া দিয়েছেন আমার প্রতি, ভেতরে-বাইরে সব জায়গায়… দারুণ পারিবাহিক আবহ আছে। কেউ যেন দমে না যায়। জানি, সবারই কষ্ট হচ্ছে। তবে এখনই সময় পরস্পরের পাশে থাকার। কেউ কাউকে যেন ছোট না করে। কেউ যদি এরকম করে, তার সঙ্গে আমার অন্য আলাপ হবে।”

“যেভাবে চলছে, এই আবহ যেন থাকে। পরস্পরের সঙ্গে থেকে উপভোগ করো এবং শেখো। যত দ্রুত আমরা এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াব, তত ভালো।”

দলের এই বন্ধন গড়ে তোলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ সাকলায়েন মুশতাকের ভূমিকাও থাকার কথা যথেষ্ট। ড্রেসিং রুমে সাবেক এই অফ স্পিনারের আকুতি, এই পরাজয়ে যেন দলের একতা বেড়ে যায় আরও।

“তোমাদের বন্ধুত্বে যেন আরও বেশি বন্ধুত্ব আসে। তোমাদের বন্ধনে যেন আরও বেশি জোর আসে। আরও যেন একতা বাড়ে, পরস্পরের ওপর বিশ্বাস আরও বাড়ে। এটাই শিখে যাও এখান থেকে। একতাবদ্ধ হয়ে লড়ে যাও।

“মাথা উঁচু রাখো। স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাও উপভোগ করো। এরপর সামনে এগিয়ে যাব আমরা।”