‘সেমির আগে ২ রাত আইসিইউতে ছিলেন রিজওয়ান’

পাকিস্তান দল থেকে জানানো হয়েছিল, শোয়েব মালিকের সঙ্গে জ্বরে ভুগছেন মোহাম্মদ রিজওয়ানও। তবে এই কিপার-ব্যাটসম্যানের অবস্থা ছিল অনেক বেশি খারাপ। ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণের জন্য তাকে ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানে দুই রাত থাকতে হয়েছিল নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র- আইসিইউতে!

ক্রীড়া প্রতিবেদকদুবাই থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2021, 07:22 PM
Updated : 11 Nov 2021, 10:46 PM

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরে যাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে রিজওয়ানের অসুস্থতা নিয়ে বলেন পাকিস্তান দলের চিকিৎসক নাজিব সুমরো।

“৯ নভেম্বর ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দেয় রিজওয়ানের। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং দুই রাত তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ছিলেন। এরপর অবিশ্বাস্যভাবে সেরে উঠে ম্যাচের আগে ফিট হয়ে ওঠেন। আজ আমরা তার নিবেদন এবং দৃঢ়তা দেখেছি। পাকিস্তানের জন্য খেলার জন্য তার স্পিরিট আমরা দেখেছি। এবং আজ তিনি কেমন পারফরম করেছেন, সেটা সবাই দেখেছে।”  

উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী ও অধিনায়ক বাবর আজমের কাছে রিজওয়ান একজন দল অন্তঃপ্রাণ ক্রিকেটার। বাবর বলেন, একজন অধিনায়ক সতীর্থদের মধ্যে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার এই মানসিকতাই দেখতে চান।

“সে যে দল অন্তঃপ্রাণ, আজ সেটা দেখিয়েছে। অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছে। তার যে অবস্থা ছিল, তাতে আমার খুব একটা আস্থা ছিল না (তার খেলার ব্যাপার)। তার শরীর পুরোপুরি ঠিক নেই বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু সে বলেছিল, যে অবস্থায়ই আছি, আমি খেলব। একজন অধিনায়ক, তার সতীর্থদের মধ্যে এই ক্ষুধাটাই দেখতে চায়। আজ সে যেমন খেলেছে, এর জন্য আমি খুশি।”  

গত বুধবার আইসিসি ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলন করে পাকিস্তান। সে সময় দলটির মিডিয়া ম্যানেজার ইব্রাহিম বাদিস জানান, জ্বরের জন্য মাঠে আসেননি এই দুই ক্রিকেটার।

তবে শঙ্কা কাটিয়ে দুই জনই খেলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। পাকিস্তান ইনিংসের পর দলটির ব্যাটিং পরামর্শক ম্যাথু হেইডেন জানান, ফুসফুসের সমস্যায় এক রাত রিজওয়ানকে থাকতে হয়েছিল হাসপাতালে।   

“কেউ হয়ত জানে না, ফুসফুসের সমস্যায় রিজওয়ান এক রাত আগেই হাসাপাতালে ছিল। সে সত্যিকারের এক যোদ্ধা।”

“বিশ্বকাপ জুড়ে অসাধারণ খেলেছে রিজওয়ান। সে দারুণ সাহসী, বাবর আজমের মতোই। আজ রাতে অসাধারণ খেলেছে রিজওয়ান।”

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে শুরুতে অবশ্য বেশ ভুগতে দেখা যায় রিজওয়ানকে। দুবার জীবন পেয়ে পরে উপহার দেন আসরের তৃতীয় ফিফটি। ৫২ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন রিজওয়ান।

বড় ইনিংস গড়েও দিন শেষে হারের হতাশা সঙ্গী পাকিস্তানের। এই হারে বিশ্বকাপে থেমে গেছে রিজওয়ানদের পথচলা।

দলের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার পথে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকা বর্ষে হাজার রানের কীর্তি গড়েন তিনি। সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কিপার হিসেবে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডে পেছনে ফেলেন জস বাটলারকে।

এই আসরেই ২৬৯ রান করে ক্রেইগ কিসওয়েটারের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছিলেন বাটলার। তাকে ছাড়িয়ে ২৮১ রানে থামলেন রিজওয়ান।