মালিকের ফিট থাকার রহস্য ‘আয়নায় নিজেকে দেখা’

দিনের পর দিন মাঠের ক্রিকেটে শোয়েব মালিক বুঝিয়ে দিচ্ছেন, বয়স কেবলই একটি সংখ্যা। ব্যাট হাতে দারুণ সব ইনিংস খেলাই শুধু নয়, এই ৪০ ছুঁইছুঁই বয়সেও দলের সবচেয়ে ফিট ক্রিকেটারদের একজন তিনি। সেটি সম্ভব হচ্ছে অনেক পরিশ্রম আর একটি প্রেরণায়। আয়নায় তাকিয়ে নিজেকে ফিট দেখার তাড়না তার প্রবল। তাই এখনও ঘাম ঝরিয়ে যান প্রতিদিন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2021, 04:44 AM
Updated : 8 Nov 2021, 05:30 AM

চলতি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের অপ্রতিরোধ্য যাত্রার সঙ্গী এই দারুণ ফিট মালিক। দলের পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে তার ব্যাটিংয়ে নামার প্রয়োজন হয়, প্রতিটিতেই রাখেন তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ২০ বলে অপরাজিত ২৬ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে করেন ১৫ বলে ১৯ রান। রোববার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮ বলে ৫৪ রানের অপরাজিত বিস্ফোরক ইনিংস খেলে হন ম্যাচের সেরা।

এই ইনিংসগুলোতে যেমন, তেমনি মাঠে মালিকের বিচরণেও ফুটে ওঠে, কতটা ফিট ও উজ্জীবিত তিনি। ম্যাচের পর তিনি জানালেন ফিট থাকার রহস্য।

“সত্যি বলতে, আয়নায় নিজেকে ফিট দেখার আত্মমগ্নতা আছে আমার। যদিও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, ক্রিকেট খেলাটা এখনও উপভোগ করছি এবং দিনশেষে, এটা দলকেও সহায়তা করছে। আমার মনে হয়, নিজেকে ফিট রাখতে হলে প্রতিদিনই ট্রেনিং করতে হয় এবং আমি সেটাই করে আসছি।”

এই দুর্দান্ত পারফর্ম করা মালিক শুরুতে ছিলেন না পাকিস্তান দলে। প্রথম ঘোষিত দলে যখন পরে পরিবর্তন আনা হয় তিনটি, সেখানেও জায়গা হয়নি তার। শেষ পর্যন্ত সোহেব মাকসুদ চোটের কারণে ছিটকে যাওয়ায় বদলি হিসেবে দলে নেওয়া হয় তাকে। এটিই হয়ে যায় দলের জন্য আশীর্বাদ।

মালিক বললেন, শুরুতে দলে জায়গা না পেয়ে মুষড়ে পড়লেও পরে নিজেকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেন নিজেই।

“প্রথম দল যখন ঘোষণা করা হয়, আমার নাম ছিল না। অবশ্যই খুব খারাপ লেগেছিল, হতাশ হয়েছিলাম। তবে দলে না থাকার অভিজ্ঞতা তো অনেকবারই হয়েছে আমার। বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পেলে কষ্ট লাগাই স্বাভাবিক। তবে পেশাদার ক্রীড়াবিদ হিসেবে, নিজের সঙ্গে কথা বলে সেই হতাশা থেকে বেরিয়ে আসতেই হয়।”

“আমার সুযোগ ছিল (হতাশা দূর করার)। তখন সিপিএল খেলছিলাম, খেলার মধ্যে ছিলাম। এরপর দেশে ফিরে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি খেলি, কারণ এখনও মাঠে যেতে উপভোগ করি দারুণভাবে এবং এটিই আমার চালিকাশক্তি।”

এরপর দলে সুযোগ হলো তার। বিশ্বকাপের আগে দেশে ক্যাম্প থেকেই অনুভব করতে পারছিলেন, এই দলটা দারুণ কিছু করতে পারে। এখন তিনি তাকিয়ে সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে ভালো কিছু করার দিকে।

“যখন দলে যোগ দিলাম, পাকিস্তানে ৫-৭ দিনের ক্যাম্পে সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং বিশ্বকাপে ভালো করতে মুখিয়ে ছিল। দলটা একতাবদ্ধ, সবাই পরস্পরকে সহায়তা করে। টিম ম্যানেজমেন্ট ক্রিকেটারদের সবটুকু বিশ্বাস জোগায়। ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়কের কাছ থেকে একজন ক্রিকেটার এসবই চায়। সব মিলিয়ে দলের আবহ দুর্দান্ত এবং আমদের স্রেফ এখন নিজেদের সেরাটা দিতে হবে।”

ফিটনেস ও পারফরম্যান্স দুর্দান্ত হলেও মালিক আর কতদিন খেলবেন, সেই প্রশ্ন নিয়মিতই ওঠে, মূলত বয়সের কারণেই। বিশ্বকাপ চলাকালে আগেও একবার বলেছেন, অবসর নিয়ে কথা বলতে চান না। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পরও সেটুকু বলার পাশাপাশি কিছুটা ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন।

“আরও দুই-এক বছর খেলা নিয়ে নিশ্চিত নই আমি। এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি আসরের মধ্যে আছি। আপাতত এটি নিয়েই ভাবছি।”