বিদায়ী ম্যাচে রোববার ব্যাট হাতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন আসগর। ইনিংসের শেষ দিকে আউট হওয়ার আগে ২৩ বলে করেন ৩১ রান। নামিবিয়াকে ১৬১ রানের লক্ষ্য দিয়ে ৬২ রানের বড় জয় পায় মোহাম্মদ নবির দল।
আসগর ব্যাটিংয়ে নামার সময় দুই পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সংবর্ধনা জানান নামিবিয়ার ক্রিকেটাররা। আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে দুই পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাট উঁচিয়ে গার্ড অব অনার দেয় তার সতীর্থরা।
বড় জয়ে সেমি-ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে এখনও ভালোভাবেই টিকে আছে আফগানিস্তান৷ তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ৪ উইকেটে হারের যন্ত্রণা যেন দাগ কেটে গেছে তাদের মনে। অন্তত আসগরের কথায় সেটা পরিষ্কার।
গত শুক্রবারের ওই ম্যাচে আফগানদের করা ১৪৭ রান তাড়ায় ১৮ ওভার শেষে কিছুটা পিছিয়েই ছিল পাকিস্তান। জয়ের পাল্লা ভারি ছিল আফগানিস্তানের। ২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। কিন্তু আসিফ আলির ৭ বলে ২৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় পুড়তে হয় রশিদ-মুজিবদের। আসগরের অবসরের সিদ্ধান্তেও যা বড় প্রভাব ফেলেছে।
নামিবিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ইনিংস বিরতিতে কথা বলতে গিয়ে চোখের জল আর আটকে রাখতে পারেননি ৩৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
"শেষ ম্যাচে (পাকিস্তানের বিপক্ষে), আমরা খুব বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম এবং সেই কারণেই আমি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেক স্মৃতি আছে। এটা কঠিন সিদ্ধান্ত, কিন্তু আমাকে অবসর নিতেই হবে।"
২০১৮ সালে বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে খেলা আফগানিস্তানের প্রথম টেস্টের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ৬ টেস্টে ৪৪ গড়ে রান করেছেন ৪৪০।
ব্যাটসম্যান হিসেবে আসগর যতটা না সফল, তার চেয়ে বেশি অধিনায়ক হিসেবে। নিজের ১১৪ ওয়ানডের ৫৯টিতে এবং ৭৪ টি-টোয়েন্টির ৫২টিতে তিনি দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দুটিই দেশের হয়ে রেকর্ড।
অধিনায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি জয়ের রেকর্ডও তার। এই সংস্করণে তার নেতৃত্বে আফগানরা জিতেছে ৪২ ম্যাচ, হেরেছে ৯টি, টাই হয়েছে একটি। অধিনায়ক হিসেবে ভারতকে ৪১ ম্যাচ জিতিয়ে তালিকায় দুইয়ে আছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
আসগরের কাছে মনে হয়েছে, নতুনদের জন্য সুযোগ করে দেওয়ার এটাই আদর্শ সময়।
“আমি তরুণদের সুযোগ দিতে চাই। আমি মনে করি, এটি ভালো একটি সুযোগ। অধিকাংশ মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করছে, এখন কেন (এই সিদ্ধান্ত), কিন্তু বিষয়টি আসলে এমন কিছু যা আমি ব্যাখ্যা করতে পারব না।"
সুপার টুয়েলভে গ্রুপ '২' এ তিন ম্যাচ খেলে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে আফগানিস্তান। নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে আগামী বুধবার ভারতের বিপক্ষে খেলবে তারা। এরপর শেষ ম্যাচে ৭ নভেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে দলটি।