টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে খেলা প্রয়োজন, ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন। অমন উইকেটে খেলতে খেলতেই হাত খোলে ক্রিকেটারদের। দক্ষতা গড়ে ওঠে বিভিন্ন শট খেলার। উদ্ভাবনী শটে পারদর্শিতার সুযোগ মেলে।
কিন্তু বিস্ময়করভাবে বাংলাদেশে বেশির ভাগ টি-টোয়েন্টি ম্যাচই হয় মন্থর, টার্নিং উইকেটে। যেখানে খেলা সত্যিকার অর্থে তেমন কোনো লাভ হয় না ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারদের। যেখানে ১২০-৩০ ছাড়াতে পারলেই প্রতিপক্ষকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যায় সেখানে বড় শটের অভ্যাস গড়ে ওঠা কঠিন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ঠিক এ ধরনের উইকেটেই প্রস্তুতি সারে বাংলাদেশ। মিরপুরের ওই স্পিন মঞ্চে সিরিজে হারায় অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডকে। বাংলাদেশ দলের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়, ওই দুই সিরিজে পাওয়া জয়ের আত্মবিশ্বাসে ভর করেই বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করে ফেলবেন সাকিব-মুশফিকরা। আদৌতে তা যে কেবলই ছিল কষ্টকল্পনা, সেটা এখন পরিষ্কার। সে সব জয় কিংবা ওই সব ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের একেবারেই চোখে পড়েনি।
বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে থাকা নির্বাচক হাবিবুলের মতে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার প্রস্তুতি মূলত হয় ঘরোয়া ক্রিকেটে। বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় তিনি বিপিএলের মতো টুর্নামেন্টগুলোতে ব্যাটিং উইকেট বানানোর তাগিদ দিলেন।
“অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড সিরিজের উইকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। জয়টা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যেটা দরকার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য, ভবিষ্যতের জন্য, আমাদের ঘরোয়া যে টুর্নামেন্টগুলো খেলি, সেখানে ব্যাটিং উইকেট তৈরি করা।”
“আমরা খুব বেশি যখন ম্যাচ খেলি, বিপিএল বা কোনো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলি, তখন একই উইকেটে বারবার খেলার জন্য, অনেক সময় আমরা ভালো উইকেট পাই না। যার জন্য আমাদের পাওয়ার হিটার তৈরি হচ্ছে না।”
সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল মনে করেন, ঘরের মাঠে জিততে ম্যাচ হতে পারে স্পিন সহায়ক উইকেটে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেড়ে উঠতে ঘরোয়া ক্রিকেটে থাকতে হবে স্পোর্টিং উইকেট।
“আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনি আপনার সুবিধা নিতে চাইবেন, এটা খুব স্বাভাবিক। আপনি জিততে চাইবেন। কিন্তু আমাদের যদি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো করতে হয়, পাওয়ার হিটার তৈরি করতে হয়, আমি মনে করি, আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটগুলোর অনেক উন্নতি করতে হবে।”
“যেখানে ১৮০ থেকে ২০০ রানের খেলা হবে ধারাবাহিকভাবে। আমরা আসলে এটা খুব বেশি পাই না, যখন ঘরোয়া টুর্নামেন্ট হয়। পাওয়ার প্লে ব্যবহার করা, পাওয়ার হিটার তৈরি করা সেটা খুব বেশি হচ্ছে না। আমাদের সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার, পরবর্তীতে আমরা যখন ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলব, তখন যেন ভালো উইকেটে আমরা খেলতে পারি সবসময়।”