সেমি-ফাইনালে উঠে দেশে খুশি ছড়াতে চান রশিদ খান

দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। আফগান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও আছে শঙ্কা। আগামী মাসেই আফগানিস্তানের ভাগ্য নিয়ে সভায় বসবে আইসিসি। তবে আফগান ক্রিকেটাররা এতকিছু মাথায় রাখছেন না বলেই জানালেন রশিদ খান। মাঠে নেমে তাদের স্রেফ চাওয়া, বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল খেলে দেশের মানুষকে আনন্দ-উদযাপনের উপলক্ষ এনে দেওয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2021, 06:04 AM
Updated : 29 Oct 2021, 09:05 AM

এই বিশ্বকাপে রশিদের নেতৃত্বেই খেলার কথা ছিল আফগানিস্তানের। কিন্তু দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে ক্রিকেটেও। তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর বদল আসে আফগান ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পদে। তারা হস্তক্ষেপ করেন আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ দল গঠনে। সেই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে দল ঘোষণার পরপরই নেতৃত্ব ছেড়ে দেন রশিদ খান।

আফগানিস্তানে মৃত্যুর মিছিল, দেশে অস্থিরতা, এসব থামাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সক্রিয় দেখা গেছে রশিদকে। এখন তিনি ভূমিকা রাখতে চান নিজের জায়গা থেকে। নেতৃত্ব থেকে সরে গেলেও দল থেকে তিনি সরেননি। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন এই আফগান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা বললেন, ক্রিকেট দিয়েই হাজারও দুর্ভাবনায় থাকা দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে চান তারা।

“পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হচ্ছে (আফগানিস্তানে)। দেশে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে এবং এই আশাই কেবল আমরা করতে পারি যে ভবিষ্যতে আরও ভালো হবে।”

“দল হিসেবে আমরা এখানে এসেছি ভালো ক্রিকেট খেলতে এবং এমন পারফরম্যান্স ও জয় উপহার দিতে, যেন দেশে তারা উদযাপন করতে পারে। ক্রিকেটার হিসেবে এটিই আমাদের হাতে আছে এবং এই টুর্নামেন্টে আমরা সেই চেষ্টাই করব যেন এমন পারফরম্যান্স দিতে পারি, যেটায় তারা আনন্দ, উল্লাস ও উদযাপনের উপলক্ষ্য পায়। দল হিসেবে এটিই আমাদের চাওয়া। আশা করি, সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে।”

প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছে আফগানিস্তান। আগে এসব জয়ে দেশজুড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যেত। এবার শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তালেবান সরকারের কর্তাদের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। দেশে সাধারণ মানুষের উৎসব দেখা যায়নি, রাস্তায় আনন্দ করতে দেখা যায়নি। তবে আরও বড় জয়ে হয়তো কেটে যেতে পারে গুমোট ভাব। শুক্রবার রশিদ খানদের লড়াই পাকিস্তানের সঙ্গে।

বিশ্বকাপে খুব ভালো করলেও অবশ্য আফগান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুর্ভাবনার কারণ আছে যথেষ্টই। তালেবান সরকার সেখানে মেয়েদের ক্রিকেট বন্ধ করে দেওয়ায় আইসিসির পূর্ণ সদস্য হওয়ার একটি শর্ত লঙ্ঘন হচ্ছে। আগামী মাসেই আইসিসির সভায় আলোচনায় উঠে আসবে আফগান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ।

এই দুর্ভাবনাও রশিদ খানদের সঙ্গী হওয়ার কথা। তিনি অবশ্য বললেন, তাদের মনোযোগ স্রেফ মাঠের ক্রিকেটে। পাখির চোখ করছেন তারা সেমি-ফাইনালকে।

“সত্যি বলতে, এই মুহূর্তে অন্য কিছু আমাদের মাথায় নেই। আমরা কেবল ভাবছি বিশ্বকাপ নিয়ে এবং এটা জানি যে পরের পাঁচ ম্যাচের তিনটি জিততে হবে (সেমি-ফাইনাল খেলতে)। সেমি-ফাইনাল খেলার ভাবনাই এখন আমাদের সবার এবং সেই মান ও স্কিল আমাদের আছে। প্রতিটি ক্রিকেটার এটিই ভাবছে।”

“ভবিষ্যৎ বা অতীত আমরা ভাবছি না।  এসব আমাদের হাতেও নেই, নিয়ন্ত্রণে নেই। এসব নিয়ে কথা বলা ও বাড়তি চাপ নেওয়া উচিত নয়। আমাদের হাতে আছে মাঠে ভালো খেলা এবং সেমি-ফাইনাল খেলে দেশকে গর্ব এনে দেওয়া। ভবিষ্যতের ব্যাপার সময়েই দেখা যাবে। ক্রিকেটার হিসেবে বেশি কিছু ভাবলে তা আমাদের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা ভালো না করলে সমর্থকরা হতাশ হবেন। আমরা স্রেফ বিশ্বকাপে মনোযোগ দিয়ে সময়ের সঙ্গে আরও ভালো করে পরের ধাপে যেতে চাই।”