আবু ধাবিতে বুধবার স্কটিশদের বিপক্ষে নামিবিয়ার জয় ৪ উইকেটে। প্রতিপক্ষের দেওয়া ১১০ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ৫ বল আগেই।
২০০৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচ খেলে সবকটিই হেরেছিল নামিবিয়া। কিন্তু টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট তাদের কাটছে স্বপ্নের মতো। সেই পথচলায় আসরে জিতল টানা তিন ম্যাচ।
আইসিসির এই দুই সহযোগী দেশ এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে কেবল টি-টোয়েন্টিতেই। যেখানে তিনবারের দেখায়ই জিতেছে নামিবিয়া।
এবার স্কটল্যান্ডকে হারানোর মূল নায়ক রুবেন ট্রাম্পেলমান। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে এই পেসারই ম্যাচের সেরা।
জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নামিবিয়াকে জয়ের সুর বেঁধে দেন ট্রাম্পেলমান। তার দুর্দান্ত এক ওভারে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা স্কটল্যান্ডের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তিনি তুলে নেন তিন উইকেট!
প্রথম বলেই ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে যান জর্জ মানজি। এক বল পর বাঁহাতি এই পেসারের আরেকটি দারুণ ডেলিভারিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ক্যালাম ম্যাকলাউড। কাইল কোয়েটজারের আঙুলের চোটে অধিনায়কত্ব পাওয়া রিচি বেরিংটন পরের বলে হন এলবিডব্লিউ। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। তিন ব্যাটসম্যানের কেউই খুলতে পারেননি রানের খাতা।
২ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের হাল ধরার চেষ্টায় ব্যর্থ হন ক্রেইগ ওয়ালেস। তাকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান ডেভিড ভিসা। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২ রান তোলা দলকে কিছুক্ষণ টানেন ম্যাথু ক্রস। তার (৩৩ বলে ১৯) লড়াই শেষ হয় ইয়ান ফ্রাইলিঙ্কের বলে বোল্ড হয়ে।
উইকেটে নেমেই দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন মাইকেল লিস্ক। টানা দুই বলে মাইকেল ফন লিনগেনকে চার ও ছক্কায় ওড়ানোর পর মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন জেজে স্মিটকে।
লিস্কের ঝড় থামান স্মিট। এই পেসারকে সুইপ করতে গিয়ে তিনি হন বোল্ড। শেষ হয় তার ২ ছক্কা ও ৪ চারে ২৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংস।
এরপর ক্রিস গ্রিভসের ব্যাটে একশ পার করে স্কটল্যান্ড। ইনিংসের শেষ বলে রান আউটে কাটা পড়ার আগে তিনি করেন ২৫ রান।
রান তাড়ায় সাবধানী শুরু করে নামিবিয়া। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে খেলতে থাকেন ক্রেইগ উইলিয়ামস ও ফন লিনগেন। উইকেট ধরে রাখায় মনোযোগ ছিল তাদের।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সাফিয়ান শারিফের বলে কাভারে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ফন লিনগেন। ২৯ রান নিয়ে শেষ হয় নামিবিয়ার প্রথম ছয় ওভার। এরপরই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা।
গ্রিভসকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে লং-অফে ধরা পড়েন জেন গ্রিন। এক ওভার পরই লিস্কের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন অধিনায়ক গেরহার্ড এরাসমাস। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে মার্ক ওয়াটকে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন উইলিয়ামস। এক ছক্কায় ২৩ রানে থামে এই ওপেনারের ইনিংস।
ভিসা ও স্মিটের ব্যাটে নামিবিয়া এগিয়ে যাচ্ছিল জয়ের দিকে। আগের দুই ম্যাচের জয়ের নায়ক ভিসা এবার আর দলকে জিতিয়ে ফিরতে পারেননি। শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়েন ওয়াটের বলে।
তবে স্মিটের দারুণ ব্যাটিংয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়নি নামিবিয়াকে। দুটি করে ছক্কা-চারে তিনি ২৩ বলে ৩২ রান করে থাকেন অপরাজিত।
আগামী রোববার আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে নামিবিয়া। বুধবার স্কটল্যান্ডের প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
স্কটল্যান্ড: ২০ ওভারে ১০৯/৮ (মানজি ০, ক্রস ১৯, ম্যাকলাউড ০, বেরিংটন ০, ওয়ালেস ৪, লিস্ক ৪৪, গ্রিভস ২৫, ওয়াট ৩, ডেভি ৫*; ট্রাম্পেলমান ৪-০-১৭-৩, ফ্রাইলিঙ্ক ৩-০-৭-১, স্মিট ৩-০-১৬-০, ভিসা ২-০-১২-১, শুলজ ২-০-১৬-০, ফন লিনগেন ১-০-১২-০)।
নামিবিয়া: ১৯.১ ওভারে ১১৫/৬ (উইলিয়ামস ২৩, ফন লিনগেন ১৮, গ্রিন ৯, এরাসমাস ৪, ভিসা ১৬, স্মিট ৩২*, ফ্রাইলিঙ্ক ২, ফ্রান্স ০*; হুইল ৪-০-১৪-১, ডেভি ২-০-১৫-০, শারিফ ৩.১-০-২১-১, গ্রিভস ৪-০-২২-১, ওয়াট ৪-০-২২-১, লিস্ক ২-০-১২-২)।
ফল: নামিবিয়া ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রুবেন ট্রাম্পেলমান।