দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টসের সময় একাদশে ডি ককের না থাকার কথা জানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা বলেন, “ব্যক্তিগত কারণে সে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে।”
এই ম্যাচের টসের পরপরই ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একটি নির্দেশিকার কথা জানায়, বিশ্বকাপের বাকি সব ম্যাচ শুরুর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে বাধ্যতামূলকভাবে হাঁটু গেড়ে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সংহতি জানাতে হবে।
বোর্ডের এই নির্দেশিকার সঙ্গে ডি ককের না খেলার সম্পর্ক আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গত বছর ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার (বিএলএম)’ আন্দোলন শুরুর পর থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ অনেক দলই নানা সময়ে হাঁটু গেড়ে সংহতি জানিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা দলও বর্ণবাদবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে হাঁটু গেড়ে প্রতিবাদ জানায়নি তারা একবারও।
গত জুলাইয়ে দেশের মাঠে তিন দলের প্রদর্শনী ক্রিকেট ‘সলিডারিটি’ কাপের আগে সব ক্রিকেটার, কর্মকর্তা, কোচরা হাঁটু গেড়ে বসার পথ বেছে নিয়েছিলেন। এর আগে গত ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টের আগে হাত উঁচিয়ে সংহতি জানায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল।
তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল, দলের কে হাঁটু গেড়ে বসবে বা কে হাত তুলবে বা অন্য কিছু করবে, এটা যার যার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সেসময় দলের অনেক ক্রিকেটার হাঁটু গেড়ে বসেন, কেউ হাত উঁচিয়ে ধরেন, কেউ বা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সংহতি জানান। ডি কক তখন কোনোটিই করেননি।
এবারের নির্দেশিকা দেওয়ার আগ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বোর্ড ব্যক্তিগতভাবে সংহতি জানানোর আগের সিদ্ধান্তেই ছিল। তবে বিশ্বকাপে দলের প্রথম ম্যাচের পর তা বদলে গেল। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া হাঁটু গেড়ে সংহতি জানালেও দক্ষিণ আফ্রিকা আগের পথেই ছিল।
এবার সেখান থেকে সরে এসে দক্ষিণ আফ্রিকার বোর্ড সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, একতাবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার সময় হয়েছে বলে মনে করছে তারা।
“বিএলএমের সমর্থনে দলের সদস্যরা বিভিন্ন পথ বেছে নেওয়ায় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও, এই উদ্যোগে যথেষ্ট সমর্থন না থাকা কিংবা বিভেদের একটি ধারণার জন্ম দিয়েছে। ক্রিকেটারদের অবস্থানসহ প্রাসঙ্গিক সবকিছু বিবেচনা করে, বোর্ডের মনে হয়েছে যে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দলের একতাবদ্ধ ও ধারাবাহিক অবস্থান নেওয়া জরুরি, বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাস বিবেচনা করে। বিশ্বকাপের অন্য অনেক দলই এই ইস্যুতে পরিষ্কার অবস্থান নিয়েছে। বোর্ডের মনে হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকারও একইরকম করা উচিত।”