শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ৫২ বলে ৮৬ রানের জুটিতে লঙ্কানদের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান চারিথ আসালাঙ্কা ও ভানুকা রাজাপাকসার।
এই জুটি দ্রুত ভাঙার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। আফিফ হোসেনের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি লিটন। উল্টো ব্যাটসম্যান রাজাপাকসে পান চার। ১৪ রানে বেঁচে গিয়ে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান করেন ৫৩।
মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ৬৩ রানে পয়েন্টে ক্যাচ দেন আসালাঙ্কা। শুরুতে সাড়া দিতে একটু দেরি হলেও পরে বলের নিচে গিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু তালুবন্দি রাখতে পারেননি। অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংসে দলের জয়কে সঙ্গী করে ফিরেন লঙ্কান বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
প্রথম ক্যাচ হাতছাড়া করার পর হয়তো একটু নড়ে গিয়ে থাকবে লিটনের আত্মবিশ্বাস। ম্যাচের বাকি সময়ে একবারের জন্যও তার সঙ্গে কথা বলতে যাননি দলের কোনো সদস্য। পুরো যেন একা হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পরের ক্যাচ হাতছাড়া করে যেন আরও মিইয়ে যান তিনি।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মুশফিক সরাসরি হারের দায় লিটনকে দিতে চাইলেন না। তবে বারবার আক্ষেপ ঝরল দুটি সুযোগ হাতছাড়া করা নিয়ে।
“আমাদের সবই ঠিক ছিল, শুধু দুইটা সহজ সুযোগ যদি কাজে লাগাতে পারতাম, তাহলে খেলার চিত্রটা অন্যরকম হতে পারত।”
“আসলে দায় দেয়ার কিছু নেই। আমাদের আজ যে ভুল হয়েছে সেটা হলো, লিটনের দুটো ক্যাচ। সে কিন্তু খুব ভালো মানের ফিল্ডার। আর ওই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওদের দুই বাঁহাতি দারুণ ব্যাট করছিল। ওই সময় ওদের দুটো উইকেট পড়ে গেলে ম্যাচ ঘুরেও যেতে পারত।”
ব্যাটিংয়ের সময়ই মুশফিক বুঝতে পেরেছিলেন উইকেট খুব ভালো। তাই ১৭০ রান করেই জেতা যাবে না। বোলিং ও ফিল্ডিংও হতে হবে খুব ভালো। সেটা করতে না পারায় ভীষণ হতাশ মুশফিক।
“এই উইকেটে রান কম দেখেছি কিন্তু আজ খুব ভালো ছিল। আমরা জানতাম যে ১৭০ হয়ত জয়ের স্কোর না, কিন্তু আমরা যদি সুযোগ কাজে লাগাতে পারি তাহলে জয় সম্ভব। ওরা ৬ ওভার খুবই ভালো কাজে লাগিয়েছে। পরে সাকিব আমাদের মোমেন্টাম এনে দিয়েছে। কিন্তু ওদের দুই সেট ব্যাটসম্যান সব বদলে দেয়। সব মিলিয়ে বলব দায় দেয়ার কিছু নেই, কিছু ভুল হয়েছে সেজন্য ম্যাচটা জিততে পারিনি।”
ম্যাচে ব্যক্তিগত কিছু প্রাপ্তি ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু মুশফিকের মতে, দলের হারের সঙ্গে সে সব হয়ে গেছে অর্থহীন। তবে এই হার থেকেই তারা পাচ্ছেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে এখনও বিশ্বকাপে বহুদূর যাওয়া সম্ভব।
“টি-টোয়েন্টিতে কোনো রানই নিরাপদ না। একজন ক্রিকেটার ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারতেন। হ্যাঁ, আমরা ১৭০ রান করে জেতার মতো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু পরে সুযোগ আমরা নিতে পারিনি মানে ভালো বোলিং বা ফিল্ডিং করিনি। ভালো খেলে হারলে সেই ভালো খেলার কোনো মানে নেই। তবে আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে, এই ফরম্যাটে বড় দল বা ছোট দল বলে কিছু নেই। সামনে একই ভাবে আমরা এগোতে পারব।”